শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৪ মার্চ, ২০১৯, ০৭:০৬ সকাল
আপডেট : ২৪ মার্চ, ২০১৯, ০৭:০৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঢাকায় সড়ক পারাপারে বিশৃঙ্খলা কমছে না

ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকার সড়কে পথচারী পারাপারে বিশৃঙ্খলা কিছুতেই কমছে না। যত্রতত্র রাস্তা পারাপার, ফুটওভার ব্রিজ ও আন্ডারপাস ব্যবহার না করার প্রবণতায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। রাজধানীতে যানজটেরও এটি একটি কারণ। যখন তখন হাত উচিয়ে সড়ক পার হওয়ায় হঠাৎ থেমে যেতে হচ্ছে দ্রুত গতির যানবাহনকে। নিউ মার্কেট এলাকায় পর পর দুটি ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও লোকজন সড়ক দিয়েই যত্রতত্র পার হচ্ছে। সড়ক বিভাজনের ওপর স্থাপন করা বেড়া ভেঙে যাতায়াতের পথ তৈরি করেছেন পথচারীরা। শুধু নিউমার্কেই নয়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নগরজুড়েই রাস্তা পারাপার হচ্ছে অনেক পথচারী। এদের অনেকেই বলছেন, সিগন্যাল থাকায়, তাড়া থাকায় নিচ দিয়েই রাস্তা পার হন, আবার কেউ বলছেন এতদূর ঘুরে ওঠা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

ওভারব্রিজের নিচ দিয়ে সড়ক পার হওয়া ঢাকা কলেজের একজন ছাত্রী জানান, তার পরীক্ষা থাকার কারণেই তিনি এভাবে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হলেন। কিন্তু অন্যসময় তিনি ফুটওভারব্রিজ দিয়েই যাতায়াত করেন। আবার অনেকে পথচারীরা জানান, এইভাবে চলতে চলতে অভ্যাস হওয়ায় আর কেউই ওভারব্রিজ ব্যবহার করেন না।

ফার্মগেট সিগন্যাল দিয়ে দৌঁড়ে রাস্তা পার হন মোরশেদা বেগম। তিনি একজন গৃহিণী। এমন ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন কেন জানতে চাইলে বলেন, আমি ওভারব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করতে পারি না। আমার পা ব্যথা করে। প্রথম যখন এই ওভারব্রিজ হয় তখন এটা দিয়ে রাস্তা পারপার হতাম। এখন আর পারি না।

আবার রাজধানীর বনানী থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত অনেক জায়গায় নেই ফুটওভারব্রিজ। সেখানে রাস্তা পারাপারে ঝুঁকি নিতে বাধ্য হচ্ছেন পথচারীরা। তাদের দাবি কিছু কিছু এলাকায় ওভারব্রিজ ব্যবহার অনুপযোগী।

এ নিয়ে বনানী এলাকার আনোয়ারুল হক নামের এক পথচারী বলেন, ওভারব্রিজ দিয়ে চলাচল করা প্রায় অনুপযুক্ত হয়ে গেছে। এখানকার অনেকগুলো ব্রিজের বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র রয়েছে। পুরো ওভারব্রিজেই হকাররা দোকান নিয়ে বসে থাকে। এতে যাতায়াত করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সামনে আসছে বর্ষাকাল। এই সময়তো এটা দিয়ে চলাচল করাই যাবে না। কারণ, পুরো ব্রিজে পানি জমে স্যাঁতসেঁতে হয়ে থাকে।

গাড়িচালকরা বলছেন, রাস্তা পারাপারে পথচারীরা যদি সচেতন হন তাহলে রাজধানীতে অনেকটাই শৃঙ্খলা ফেরাতে সহায়ক হবে। আর সড়ক দুর্ঘটনাও অনেকটাই কমে যাবে। বাঁধন গাড়ির চালক আমজাদ হোসেন মানবজমিনকে বলেন, গাড়ি চলা অবস্থায় অনেকেই রাস্তা পারাপার হয়। দেখা যায়, প্রায় গাড়িগুলো চলতি অবস্থায় অনেক গতিতে থাকে, এ অবস্থায় পথচারীরা হাত তুলে রাস্তা পারাপার করেন। এদের অনেকেই সিগন্যাল বা কোনো নিয়মের চিন্তা করে না। এগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনেই হচ্ছে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকেও কোনো বাধা দেয়া হচ্ছে না। পরে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু চালক এবং গাড়িরই দোষ দেয়া হয়। কিন্তু কেন দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে সেটা কেউই খতিয়ে দেখে না। দুর্ঘটনার জন্য চালকের পাশাপাশি পথচারীরাও অধিকাংশই দায়ী।

বুয়েটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাজধানীতে প্রতিবছর যে সড়ক দুর্ঘটনা হয় এর ৪৭ ভাগ দুর্ঘটনারই কারণ এই বেপরোয়া পথচারী। এ বিষয়ে বুয়েট দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইফুন নেওয়াজ মানবজমনিকে বলেন, আসলে সড়কে দুর্ঘটনা ততদিন বন্ধ হবে না, যতদিন না চালকদের পাশাপাশি পথচারীরাও সচেতন হবেন। এর পাশাপাশি ট্রাফিক সার্জেন্টরা এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। যখন কোনো পথচারী নিয়ম ভেঙে রাস্তা পারাপার হয় তখন তাদের আইনের আওতায় আনা হলে এটা দেখে অন্যরাও কিছুটা হলেও সচেতন হবেন বলে আমি মনে করি। আর সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়ে স্কুল পর্যায় থেকে সিলেবাসে সড়ক ব্যবহারের নিয়ম ব্যবহার করা উচিত। এতে করে সবাই ছোটবেলা থেকেই এই বিষয়ে সচেতন হতে পারবে।

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে জনসচেতনা এবং প্রতীকী জরিমানার ব্যবস্থা করলেও এর কোনো সুফল আসছে না। দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ালে পথচারীর বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তান মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত ট্রাফিক শৃঙ্খলা ও সচেতনতা বিষয়ক সভায় আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলে আমরা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে যাই। জবাব দিতে পারি না। কিন্তু এটার পরিবর্তন হওয়া দরকার। জনগণ যাতে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করে, জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার করে, সেজন্য ট্রাফিক বিভাগকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিচ্ছি। দুর্ঘটনা ঘটানোয় বাস যেমন আটক করেন তেমনি দুর্ঘটনার কারণ হলে পথচারীকেও আটক করুন। আটক করে মিডিয়াকে দেখান, দেশের মানুষকে দেখান যে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে, জেব্রা ক্রসিং ছাড়া রাস্তা পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে।

ঢাকা মহানগর (উত্তর) ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মোসলেহ উদ্দিন মানবজমিনকে বলেন, প্রতীকী অর্থে অনেক সময় ফুটওভারব্রিজগুলোর এখানে গিয়ে আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালিত করি। পথচারী অনেকের জরিমানা করা হচ্ছে। এটা মূলত প্রয়োজন সচেতনা ও কো-অপারেশন। এই জায়গাগুলো নিয়েই আমরা বেশি কাজ করছি।
সূত্র : মানবজমিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়