সুজন কৈরী : শনিবার ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের আয়োজনে রাজধানীর মাতুয়াইলে শামছুল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী শিক্ষার্থী-অভিবাবক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া আরো বলেন, রোববার থেকে রাজধানীর প্রতিটি পরিবহন ইন্টারসেকশন রুটে পুলিশের বিশেষ টিম নামানো হবে। টিমটি আগামী সাত দিন সড়কে চলাচলকারী পরিবহনের প্রতিযোগিতা রোধ, যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা ও কৃত্রিম যানজট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোচ্চার থাকবে। এই সাত দিন ঢাকা শহরে যতগুলো ইন্টারেকশন আছে, সবগুলোতে স্পেশাল পুলিশ দাঁড় করিয়ে দেয়া হবে। কোনো গাড়ি প্রতিযোগিতা করে, রাস্তার মাঝখানে দাঁড়ায় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়, কৃত্রিম যানজট তৈরি করে, স্টপ লাইন বরাবর গাড়ি দাঁড় করায়, ফিটনেস ও লাইসেন্স বিহীন গাড়ি চালায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বিশেষ টিম। সিটি করপোরেশন, বিআরটিএ, ডিটিসিএর সঙ্গে সমন্বয় করে এ কাজগুলো করা হবে।
আগামী দুয়েকমাসের মধ্যে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রত্যয় জানিয়ে এ কাজে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, আমরা শুধু আইন প্রয়োগ করি। কিন্তু রাস্তা তৈরি করে সিটি করপোরেশন, গাড়ির ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন দেয় বিআরটিএ। তাই সবার সহযোগিতা কাম্য।
মাদক ব্যবসায়ী দেশ, জাতি ও সমাজের শত্রু । এদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করুন। ঢাকা শহরে কোনো মাদক ব্যবসায়ীর স্থান হবে না। জঙ্গিবাদের ন্যায় মাদকের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন। মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান, পুলিশ আপনার পাশে আছে। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তি শুধু নিজেই মৃত্যু বরণ করেন। আর মাদক ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে সঙ্গে সমাজকেও ধ্বংস করে। মাদকের আগ্রসনের ঝুঁকিতে রয়েছে আপনার আমার সন্তান। ঢাকা মহানগরে মাদকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। মাদকের সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। হলি আর্টিসানে সন্ত্রাসী হামলার পর আমরা জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ছিন্নভিন্ন করে দেয়া হয়েছে। ঠিক তেমনি মাদকের নেটওয়ার্কও ছিন্নভিন্ন করে দেয়া হবে। আমরা জোর দিয়ে বলতে পারি বাংলাদেশের মাটিতে কোনো মাদক ও জঙ্গিদের ঠাঁই হবে না। কোনো পুলিশ সদস্য মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাদকের অর্থদাতা, আশ্রয়দাতা, সহযোগি, গ্রেফতারের পর আদালত থেকে জামিনে যারা ছাড়িয়ে আনে তাদেরকেও ছাড় দেয়া হবে না। কঠোর শাস্তি পেতে হবে। পুলিশ একা মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে পারবে না। এজন্য দরকার অভিভাবক ও সমাজের সকলের সহযোগিতা।
মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে তিনটি বিষয় মনে রাখতে সকলের প্রতি আহবান জানিয়ে কমিশনার বলেন, আপনার সন্তান কি করে, কার সাথে মেলা-মেশা করে, নিজের ঘরে ইন্টারনেটের কোন সাইটগুলো ব্রাউজ করে তা নিয়মিত দেখার দায়িত্ব অভিভাবকদের, শিক্ষকদের দায়িত্ব শিক্ষার্থীরা টিফিন পিরিয়ডে ও অন্যান্য সময় কি করছে তার দিকে নজরদারী রাখা ও সমাজের জনপ্রতিনিধিগণ মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে দমন করতে সহযোগিতা করুণ। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যেভাবে আপনারা এগিয়ে এসেছেন। ঠিক সেভাবেই মাদকের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসুন।
সমাবেশে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপস) কৃষ্ণ পদ রায়, সামছুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মোল্লা, প্রিন্সিপাল ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :