সৌরভ নূর : এ দেশে যারা ধর্মকে আশ্রয় করে উৎপীড়ন করেছে আমরা বরাবরই তাদের বয়কট করেছি। আমরা একটু ধর্মভীরু হলেও কখনোই ধর্মের নামে বাড়াবাড়িকে প্রশ্রয় দেয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে একটি গোষ্ঠী ধর্মীয় সুড়সুড়ি দিয়ে উগ্রপন্থি ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলো তখনো সরকারের পাশাপাশি জনগণও তা মেনে নেয়নি। ফলে ধারণা করা যায় এ দেশে জঙ্গিবাদ কিংবা সন্ত্রাসী কর্মকা- মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেন সাবেক আইজিপি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক নুরুল আনোয়ার। বিশ^ব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকা-ের প্রসার ও বাংলাদেশে এর প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।
আলাপকালে তিনি আরো বলেন, সারাবিশে^ এখন যে মুসলিম জঙ্গিবাদ দেখা দিয়েছে তার পেছনের মূল মদদদাতা আমেরিকা এবং বিশ^জুড়ে যেসব মুসলিম দেশে অশান্তি ও যুদ্ধ বিরাজ করছে তার মূলেও রয়েছে আমেরিকা। আবার একটা সময় এই আমেরিকাই তাদের ধ্বংস করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। অন্যদিকে ইউরোপিয়ান শ্বেতাঙ্গদের উগ্রবর্ণবাদী মানসিকতায় তারা নিজেদের সর্বেসর্বা মনে করেন এবং কালো চামড়ার মানুষদের উপর কর্তৃত্ব করার প্রবণতা তাদের ধীরে ধীরে সন্ত্রাসবাদ কর্মকা-ে উৎসুক করে তুলছে। দাস প্রথা বাতিল হওয়ার পর কালো চামড়ার মানুষরা ইউরোপ-আমেরিকায় যেভাবে এগিয়ে চলেছে তাতে উচ্চ শ্রেণির শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদীরা মেনে নিতে পারছে না।
এছাড়া সারাবিশ^ থেকে কালো চামড়ার মানুষজন ভাগ্যের সন্ধানে যেসব উন্নত দেশে পাড়ি জমান। পরবর্তী সময়ে তারা আরো দশজনকে নিয়ে যান এবং বংশ বৃদ্ধি করতে থাকেন। ফলে কালো চামড়ার মানুষের বিস্তার ও প্রসার দেখে অনেকেই আতঙ্কিত হচ্ছেন। তারা মনে করছে এভাবে যদি অভিবাসীরা আসতে থাকে তাহলে হয়তো তারাই একসময় সংখ্যালঘু হয়ে যাবে। যেমন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসীদের উপর জারি করা হুঁশিয়ারি বর্ণবাদীদের উৎসাহিত করেছিলো। তবে এটা সত্য এশিয়া-আফ্রিকা থেকে যে বিপুল পরিমাণ মানুষ ইউরোপ-আমেরিকা যাচ্ছে এবং তারা কোয়ালিটিসম্পন্ন হওয়ায় খুব দ্রুত সেখানে নাগরিকত্ব নিয়ে চাকরি বা ব্যবসার মাধ্যমে স্থায়ী হয়ে যাচ্ছেন। সেখানে মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ করা হচ্ছে, এমনকি বহিরাগতরা রাজনীতিতেও সম্পৃক্ত হচ্ছেন।
এটা তাদের কাছে ক্রমেই দৃষ্টিকটু হয়ে উঠছে। নিউজিল্যান্ড শ্বেতাঙ্গদের দেশ হলেও তারা বেশ শান্তিপ্রিয় কিন্তু আততায়ী যিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে এসে এই কা- ঘটিয়েছেন, তিনি হয়তো ভেবেছিলেন নিউজিল্যান্ডের স্থানীয়রা তাকে সমর্থন করবেন। তবে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে আমি বলবো এমন কোনো বিদেশি কমিউনিটি নেই যে, আমরা বিবাদে জড়িয়ে পড়তে পারি। যারা আছেন তারা আমাদের সঙ্গেই মিলেমিশে থাকেন। ফলে আমাদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ আছে বলে মনে করি না ।
আপনার মতামত লিখুন :