শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ২৩ মার্চ, ২০১৯, ০২:০৭ রাত
আপডেট : ২৩ মার্চ, ২০১৯, ০২:০৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাঘ কিভাবে বিড়াল হয়?

বাংলা ইনসাইডার : একসময় তাঁরা আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতা ছিলেন। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকও ছিলেন। দলের সঙ্কটকালে তাদের ভূমিকাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু একসময় তাঁরা দল থেকে ছিটকে পড়েন এবং এই ছিটকে পড়েই বাঘ থেকে বিড়ালে পরিণত হয়েছেন। এদের অনেকে আওয়ামী লীগে নেই এখন। কেউ কেউ বহিষ্কৃত হয়েছেন, আর যারা আছেন তারা থেকেও না থাকার মতো। এমন কিছু আওয়ামী লীগ নেতা নিয়েই আজকের এই প্রতিবেদন-

১. লতিফ সিদ্দিকী

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সরাসরি রাজনীতি করেছেন লতিফ সিদ্দিকী। আওয়ামী লীগের অন্যতম নীতি নির্ধারকও ছিলেন তিনি। বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনের ভূমিকার কারণে পরবর্তী নির্বাচনের পর গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যও মনোনীত হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে তিনি পরিচিত হয়েছিলেন। বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনের সময়ে সংস্কারপন্থীদের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার। কিন্তু ২০১১ সালে নিউইয়র্কে হজ্জ নিয়ে কিছু মন্তব্য করার জন্য তিনি মন্ত্রীত্ব হারান, দল থেকে বহিষ্কৃত হন। এরপর তিনি আর দলে ফিরতে পারেননি। এখন তিনি রাজনীতিতে থেকেও নেই। ২০১৮ এর ৩০ ডিসেম্বরে তিনি নির্বাচনে স্বতন্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। পরে তিনি ভোট বর্জনও করেন। আওয়ামী লীগে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের কোনো ইঙ্গিত বা আভাসও পাওয়া যাচ্ছে না। এখন রাজনীতিতে তিনি একটি নিখোঁজ সংবাদ।

২. ব্যারিস্টার এম আমিরুল ইসলাম

ব্যারিস্টার এম আমিরুল ইসলাম তাজউদ্দিন আহমেদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাজউদ্দিন আহমেদ যে মুজিবনগর সরকার গঠন করার উদ্দেশ্যে যে ভারতে গিয়েছিলেন, তখন তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম। মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকার গঠনের ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাজউদ্দিনের ঘনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি আলোচিত আর জনপ্রিয়ও হন। বঙ্গবন্ধুর আমলেই এই নক্ষত্রের পতন ঘটে এবং তিনি মন্ত্রীত্ব হারান। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট এর পর তিনি আবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন এবং দলটির সঙ্গে থেকে আইনজীবী অংশের নেতাও নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ পুনঃসংগঠিত হয়েছিল কিন্তু রাজনীতিতে তিনি কখনোই দলের সভাপতির বিশ্বস্ত এবং আস্থা অর্জন করতে পারেননি। এজন্য তিনি রাজনীতিতে থেকেও নেই। আওয়ামী লীগে তিনি আছেন কি নেই, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনো কেউ জানে না। আইনজীবীদের রাজনীতি থেকেও তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ এখন আইন পেশা নিয়েই ব্যস্ত। রাজনৈতিক ডামাডোলে তাকে খুব একটা দেখা যায় না।

৩. মুকুল বোস

একসময়ে মুকুল বোসকে মনে করা হতো আওয়ামী লীগের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন ছিলেন তিনি। এজন্যই তিনি একসময় ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালনও করেছিলেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকও হন তিনি। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের ঝরে তাঁর আদর্শ দুমড়ে মুচড়ে ছাড়খার হয়ে যান। তিনি ছিলেন মাইনাস ফর্মুলার অন্যতম সমর্থক। এই মাইনাস ফর্মুলার কারণেই তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও রাজনীতি থেকে অবসরের কথাও বলেছিলেন। এ কারণেই তিনি রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়েন। ওয়ান ইলেভেনের পর মুকুল বোস রাজনীতি থেকে নির্বাসিত হন। কিছুদিন আগে তাকে উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য করা হলেও রাজনীতিতে তিনি থেকেও নেই। একসময় ভাবা হতো যে ভবিষ্যেতের নেতৃত্ব দানকারীদের মধ্যে মুকুল বোস একজন। সময়ের আবর্তনে তিনি এখন অপাঙক্তেয়।

৪. আব্দুল মান্নান

বগুড়া কখনো আওয়ামী লীগের জন্য সুখকর জায়গা ছিল না। প্রতি নির্বাচনেই বগুড়ার আসনগুলো আওয়ামী লীগের জন্য নাজুক ছিল। বগুড়া থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির ঝাণ্ডা উড়িয়েছিলেন আব্দুল মান্নান। তিনি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন ছিলেন। তাকে একরকম গড়েপিঠেই তৈরি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের সময়ে তিনিও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত হন। তিনিও রাজনীতিতে নির্বাসিত, থেকেও না থাকার মতো।

এরকম অনেক নেতা আছেন যারা একসময় আওয়ামী লীগের বাঘ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। যাদের মনে করা হতো প্রধানমন্ত্রীর অতি আস্থাভাজন, ঘনিষ্ঠ, ক্ষমতাবান। কিন্তু তারা বাঘ থেকে বিড়ালে পরিণত হয়েছেন শুধুমাত্র নিজেদের আদর্শের বিচ্যুতির কারণে। এরকম তালিকা প্রণয়ন করলে সেটা একেবারে ছোট হবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়