আমিরুল ইসলাম : ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা নিয়ে বাঙালির আর পেছনে তাকানোর সময় নেই। যারা বাংলা ভাষাকে সঠিক ও শুদ্ধভাবে প্রয়োগ করবে না তাদের কে সরকার ছাড় দেবে না । সূত্র: যুগান্তর
গুগল- ফেসবুক বাংলা প্রয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাকে বিকৃত করছে। কিছুদিন আগে স্পেনে ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবাগ্রের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। আমি বলেছি বাংলাকে সঠিকভাবে প্রয়োগ না করলে কখন বাংলাদেশে ফেসবুক নিষিদ্ধ হয়ে যাবে তার গ্যারান্টি আমি দিতে পারি না। একই কথা মাইক্রোসফটকেও বলেছি। বাংলাকে বাংলা ভাষার নিয়মেই ব্যবহার করতে হবে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের বদৌলতে বাংলা ভাষার মৌলিক প্রমিতকরণের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। পৃথিবীতে নানা কারণে বহু দেশ তার মাতৃভাষাকে হারিয়ে ফেলেছে, মাতৃভাষায় ব্যবহৃত হরফকে হারিয়ে ফেলেছে। উর্দু ভাষা তার নিজস্ব বর্ণমালা হারিয়েছে। মালয়েশিয়া তার ভাষায় ইংরেজি বর্ণমালা ব্যবহার করছে। এক সময় কম্পিউটার ছিলো ইংরেজি ভাষার দখলে। প্রযুক্তির বদৌলতে এখন তা পাল্টে যাচ্ছে। ইন্টারনেটে এখন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় চাইনিজ ভাষা, বাংলা ভাষাও পিছিয়ে নেই, বাংলাদেশে ৯ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। সারা দুনিয়ায় বাংলা ভাষা ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩৫ কোটি। বাংলা পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম মাতৃভাষা। বাংলা হরফ ব্যবহার করছে আরও ৫ কোটিরও বেশি অন্য ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী। ডিজিটাল শিল্পবিপ্লবে বাংলাদেশ বৈশ্বিক নেতৃত্বের জায়গায় স্থান করে নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু অপটিমা মনির বাংলা টাইপরাইটার প্রথম চালু করে ছিলেন।
১৯৮৭ সালে দেশে কম্পিউটারে প্রথম বাংলা পত্রিকা প্রকাশ করা হয়। প্রযুক্তির বদৌলতে মোবাইলসহ কম্পিউটার ডিভাইসে ইংরেজিতে কথা বললে তা বাংলায় রূপান্তর হবে। বাংলায় কথা বললে ইংরেজি, জাপানিজ কিংবা কোরিয়ান ভাষার শ্রোতারা নিজ নিজ ভাষায় তা রূপান্তর করে শুনতে সক্ষম হবেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিশেষ কোনো ভাষার দাপটের দিন শেষ হয়ে আসছে। প্রযুক্তি আমাদের সেই সক্ষমতা তৈরি করে দিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণে আইসিটি বিভাগ কর্তৃক ১৬টি টুলস বাস্তবায়নে গৃহীত কর্মসূচি শেষ হলে পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে দেখবে। যে দেশটি বাংলা ভাষার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকার করেছে সে দেশটির মেধাবী ছেলেমেয়েরা তাদের সর্বোচ্চ মেধা বাংলা ভাষার জন্য দিতে সক্ষম।
আপনার মতামত লিখুন :