শিরোনাম
◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ গাজীপুরের টঙ্গি বাজারে আলুর গুদামে আগুন ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ দুই এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপদাহ আরো তীব্র হতে পারে  ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২১ মার্চ, ২০১৯, ০৪:১৫ সকাল
আপডেট : ২১ মার্চ, ২০১৯, ০৪:১৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গণফোরাম থেকে বহিষ্কৃত এমপির সদস্যপদ প্রসঙ্গে

তাসমিয়া নুহিয়া আহমেদ

মৌলভীবাজার-২ আসনে গণফোরামের ব্যানার থেকে নির্বাচিত সুলতান মনসুর  ৭ মার্চ সংসদ সদস্য হিসাবে শপথ গ্রহণ করেছেন। তার দল চায়নি যে তিনি শপথ নিন। দলীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করায় এই শপথ নেয়ার এক ঘন্টার মধ্যেই গণফোরাম তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আমাদের সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোন দল থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যের সদস্যপদ তখনই শূন্য হয়ে যাবে যদি তিনি ক) সেই দল থেকে পদত্যাগ করেন, অথবা খ) সংসদে সেই দলের বিরুদ্ধে ভোট দেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সুলতান মনসুর ওই দুটি কাজের কোনোটিই করেননি। যে দলের মনোনয়ন নিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তা থেকে পদত্যাগ করেননি, সংসদে সেই দলের বিরুদ্ধে কোন ভোটও দেননি। তবে এখানে ‘পদত্যাগ’ শব্দটির অর্থ নিয়ে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। ১৯৯৯ সালের বিএলডি ২৭৬ এ সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বনাম খন্দকার দেলোয়ার হোসেন মামলায় এ বিষয়ে একটা ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়েছে, যদি কেউ কোন পার্টি থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হয়ে অপর পার্টির মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়, তাহলে তার ক্ষেত্রে ৭০ ধারার অর্থ প্রযোজ্য হতে পারে।    ফ্লোর ক্রসিং বলতে নিজ দল থকে পদত্যাগ অথবা অন্য দলে যোগ দেয়াকে বোঝায়। পঞ্চম সংসদে এরকম একটা ঘটনা ঘটে। জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত এবাদুর রহমান চৌধুরী, মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান এবং পরিতোষ চক্রবর্তী ১৯৯৫ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। তখন তৎকালীন স্পীকার বিষয়টিকে সিদ্ধান্তের জন্য নির্বাচন কমিশনে পাঠান। শুনানী শেষে নির্বাচন কমিশন ওই তিনটি আসনকে শূন্য ঘোষণা করে এবং তা ১৯৯৫ সালের ৩০ আগস্ট চিঠি দিয়ে স্পিকারকে জানিয়ে দেয়। সপ্তম সংসদে হাবিবুর রহমান স্বপন এবং ডা. আলাউদ্দিন বিএনপির টিকেটে যথাক্রমে সিরাজগঞ্জ-৭ এবং রাজশাহী-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হন। বিএনপি থেকে নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও তারা ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। তারা তাদের দল থেকে পদত্যাগ করেননি, তবে বিএনপি স্পীকারের কাছে চিঠি লিখে এই দুইজনের সংসদ সদস্য পদ শূন্য ঘোষণা করতে বলে। স্পিকার প্রথমে এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নিলেও পরে আদালতের নির্দেশে বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে পাঠায়। নির্বাচন কমিশন বিষয়টিকে ৭০ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন হিসাবেই বিবেচনা করে। সপ্তম সংসদে আরও একটি ঘটনা ঘটে। জাতীয় পার্টির টিকেটে নির্বাচিত আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগ দিলেও তার ক্ষেত্রে ৭০ ধারা প্রযোজ্য হয়নি। কারণ তার দলের অনুমতি নিয়েই তিনি ঐকমত্যের সরকারে যোগ দিয়েছিলেন। অষ্টম সংসদে ফরিদপুর-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচিত কাজী সিরাজুল ইসলাম ফ্লোর ক্রস করে ২০০৫ সালের ৪ জুন বিএনপিতে যোগ দেন। আওয়ামী লীগ এ বিষয়ে স্পিকারকে চিঠি লিখলে এ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।   কাজেই, সুলতান মনসুর তার দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংসদে যোগ দেয়ায়, এটিকে যদি আচরণগতভাবে পদত্যাগ হিসাবেও বিবেচনা করা হয়, তারপরও এই কারণে জাতীয় সংসদে তার পদটিকে শূন্য ঘোষণার কোন সুযোগ নেই। তার চেয়ে বরং জাতীয় সংসদে মনসুরকে একজন স্বতন্ত্র সদস্য হিসাবে বিবেচনা করা যাবে। এটাকে ফ্লোর ক্রসিং বলা যাবে না, কারণ সে নিজের দল ছেড়ে অন্য কোন দলে যোগ দেয়নি। বরং তার দল তাকে বহিষ্কার করেছে। এর সঙ্গে যদি সপ্তম সংসদের উদাহরণকে স্মরণ করি, তাহলে এক্ষেত্রেও স্পিকার বিষয়টিকে সিদ্ধান্তের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠাতে পারে। তখন নির্বাচন কমিশনই হবে এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ। লেখক :সুপ্রিম কোর্টে অ্যাডভোকেট এবং ডেইলি আওয়ার টাইমের নির্বাহী সম্পাদক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়