শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২১ মার্চ, ২০১৯, ০২:৩১ রাত
আপডেট : ২১ মার্চ, ২০১৯, ০২:৩১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আওয়ামী লীগ!

বিভুরঞ্জন সরকার : দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি এখন রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে। বিএনপি যে শনির দশায় আক্রান্ত হয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক করা অর্থহীন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, বিএনপির প্রধান প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে এবং বিএনপি ক্ষমতার বাইরে আছে। ক্ষমতায় থাকার সুখ ভোগ করছে আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতার বাইরে থাকার দুঃখে জর্জরিত বিএনপি। তবে বিএনপির ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনায় আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা এবং সরকারের কোনো কোনো মন্ত্রীর রাতের ঘুম হারাম হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কেউ বলছেন, বিএনপির পরিণতি হবে মুসলিম লীগের মতো আবার কেউ বলছেন, এমন দিন আসবে যে বিএনপি অফিসে বৈদ্যুতিক সুইচ টেপার লোকও খুঁজে পাওয়া যাবে না!

বিএনপির দুর্দিন নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদও। ১৯ মার্চ এক অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমেদ বলেছেন,‘বর্তমানে দুর্নীতির দায়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া জেলে, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় দ-প্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে পলাতক। এই অবস্থায় দিশেহারা বিএনপি নেতাকর্মীরা দলে দলে পদত্যাগ করছে। এমন একদিন আসবে যেদিন বিএনপিকে বাটি চালান দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না’। তোফায়েল আহমেদের বক্তব্য যতোটা মুখরোচক ততোটা বাস্তবসম্মত কিনা সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। বিএনপি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হালে পানি না পেলেও তাদের প্রতি জনসমর্থন আছে। নানা ভুলভ্রান্তির কারণে বিএনপি এখন কোণঠাঁসা অবস্থায় থাকলেও তাদের সুদিন আর আসবে না এমন ভবিষ্যৎবাণী করার সময় এখনো হয়নি। আমাদের দেশে বিরোধী দলের প্রতি জনসমর্থন বাড়া-কমাটা নানা ফেক্টরের ওপর নির্ভর করে। সরকারি দলের ব্যর্থতাও কখনো কখনো বিরোধী দলকে শক্তি জোগায়।

সত্যি যদি বিএনপি মুসলিম লীগের পরিণতি বরণ করে কিংবা বাটি চালান দিয়ে বিএনপিকে খুঁজে না পাওয়া যায় তাহলে তো আওয়ামী লীগের খুশি হওয়ারই কথা। তারা কী খুশি মনে বিএনপিকে নিয়ে মন্তব্য করছেন, নাকি ভেতরে ভেতরে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আছে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটছে এসব কথায়? নিজের চরকায় তেল দেয়ার কথা আমাদের দেশে চালু আছে অথচ বাস্তবে দেখা যায়, অন্যের চরকায় তেল দিতেই অনেকের আগ্রহ বেশি। বিএনপি মনে করছে সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। আবার সরকার মনে করছে বিএনপি শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই দুই দল যদি একে অপরের দিকে ঢিল ছোঁড়ার বদলে নিজেদের অভ্যন্তরীণ সংকট-সমস্যা দূর করতে মনোযোগী হতো তাহলে দুই দলের জন্যই ভালো হতো। কিন্তু তারা একে অপরের দোষ খুঁজবে আর নিজের ঘরের ময়লা-আবর্জনা কার্পেটের নিচে লুকিয়ে রাখবে। যদিও ময়লা দীর্ঘদিন লুকিয়ে রাখা যায় না, দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করলে অন্যরা টের পায়।

উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রায় একতরফাভাবে। আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ। এ অবস্থাতেও নৌকামার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীরা একচেটিয়া জয় পাচ্ছেন না। স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগও বিজয়ী হচ্ছে। বলা হতে পারে, এটা দোষের কী? এখন হয়তো দোষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ মাঠ আওয়ামী লীগের দখলে। কিন্তু বিরোধীপক্ষ মাঠে দাঁড়িয়ে গেলে তখন ‘দলের ভিতর দল’ তৈরি হওয়ার বিপদ টের পাওয়া যাবে। এই যে দু’একদিন পরপরই দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মারা যাচ্ছেন তা থেকে কী মনে হয় যে, আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে খুব ভালো অবস্থায় আছে?

তাই বলার কথা এটাই যে, বিএনপিকে নিয়ে আওয়ামী লীগের দুশ্চিন্তায় কাতর না হলেও চলবে। কারণ বিএনপি এখন খারাপ সময় অতিক্রম করলেও মুসলিম লীগের পরিণতি বরণ করার আশু কোনো সম্ভাবনা এই দলটির নেই। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগবিরোধী, ভারতবিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন জনগোষ্ঠী যতোদিন থাকবে, ততোদিন বিএনপি দুর্বল হলেও অস্তিত্বহীন হবে না। বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আওয়ামী লীগই করে দেবে। অস্থিরতা না দেখিয়ে বিএনপি ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে পারলে তারা সুদিনের দেখা পাবে। এখন কেউ কেউ দল ছাড়ছে ঠিকই, তবে আবার দলে যোগ দেয়ার হিড়িকও হয়তো পড়বে। রাজনীতিতে জোয়ার-ভাটার খেলা নতুন কোনো বিষয় নয়। তাছাড়া রাজনৈতিক দলে অতিথি পাখির আনাগোনা দেখেও আমরা অভ্যস্ত।

লেখক : গ্রুপ যুগ্ম সম্পাদক, আমাদের নতুন সময়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়