রুহুল আমিন : ২.ভারত পাকিস্তান সংঘাত আপাতত কিছুটা থেমে গেলেও ভারতের জাতীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন এয়ার ইন্ডিয়াকে এখনও তার চড়া মাশুল গুনে যেতে হচ্ছে। গত তিন সপ্তাহ ধরেই পাকিস্তানের আকাশসীমা ভারতীয় বিমানের জন্য নিষিদ্ধ। চব্বিশ ঘণ্টা পরপর পাকিস্তান তাদের আকাশ সীমায় নোটিশ টু এয়ারম্যান জারি করছে। বাংলাদেশ বিমানের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাকিল মেরাজ জানিয়েছেন, বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হচ্ছে বাংলাদেশ বিমানকে। ফলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটের ব্যয় বেড়েছে।
৩. গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকে বালাকোটে হামলা চালিয়েছিল ভারতের যুদ্ধবিমান। তার পরদিন থেকেই এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য বন্ধ হয়ে যায় পাকিস্তানি এয়ারস্পেস। এয়ার ইন্ডিয়া এমনিতেই আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে দীর্ঘদিন ধরে, নতুন এই পরিস্থিতিতে তাদের সমস্যা আরও অনেকগুণ বেড়ে গেছে। সংস্থার সাবেক জেনারেল ম্যানেজার অশোক শর্মা বলছিলেন, যেহেতু ঘুরপথে যেতে হচ্ছে তাই খরচ তো বাড়বেই। তা ছাড়া জার্নির সময়ও বাড়বে স্বাভাবিকভাবেই। বাংলাদেশের বিমান লন্ডন, জেদ্দা, দাম্মাম, কুয়েত ও দোহা যেতে পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে বিমান। ঘুরপথে যাওয়ার কারণে জ্বালানি, ক্রুদের ফ্লাইং আওয়ারের সঙ্গে বেশকিছু খরচ যেমন বেড়েছে, তেমনি গন্তব্যে পৌঁছতে বাড়তি সময় লাগছে।
৪.আর বেশি লম্বা রুট মানেই বেশি জ্বালানি, যার পুরোটা একবারে ভরে নিয়ে যাত্রা শুরু করাও সব সময় সম্ভব নয়। ফলে রাস্তায় কোনও একটা ট্রানজিট পয়েন্টে নতুন করে তেল ভরার জন্য রিফিউয়েলিং স্টপও নিতে হচ্ছে। বাংলাদেশের বিমান আগে ঢাকা থেকে সৌদি আরবের জেদ্দা পৌঁছতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সময় লাগত প্রায় ৭ ঘণ্টা ২০ মিনিট। এখন জেদ্দা পৌঁছতে এক ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় লাগছে। লন্ডন যেতে ১০ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের বদলে লাগছে ১৩ থেকে সাড়ে ১৩ ঘণ্টা। কুয়েত যেতে ৬ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের বদলে লাগছে ৭ ঘণ্টা, দোহা যেতে ৫ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে বদলে লাগছে ৬ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
৫. দিল্লি থেকে এতদিন এয়ার ইন্ডিয়ার যে ফ্লাইটগুলো সরাসরি নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, ওয়াশিংটন ডিসি বা শিকাগোতে যেত। সেগুলোকেই এখন জ্বালানি ভরার জন্য থামতে হচ্ছে আমিরাতের শারজা বা অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায়, আর তাতে খরচও প্রচুর বেড়ে গেছে। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা ব্যবহার বন্ধ করে বাণিজ্যিক এয়ারলাইন্সগুলোর জন্যে। এ তালিকার মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও রয়েছে। থাই এয়ারওয়েজ, এমিরেটস ও কাতার এয়ারওয়েজের অনেক ফ্লাইট পাকিস্তানের আকাশসীমা দিয়ে যায়। সেটি বন্ধ হওয়ায় ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয় তারাও। তবে ফ্লাইট বাতিলের বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব
আপনার মতামত লিখুন :