মিরাজুল ইসলাম
কালীগঞ্জে আমাদের হাসপাতালের ম্যানেজার নাসির সাহেব। কেউ তার নাম জিজ্ঞেস করলে অভিজাত উচ্চারণে পুরো নাম উচ্চারণ করেনÑআলহাজ মোহাম্মদ নাসিরুদ্দীন চৌধুরী। চন্দনাইশে বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজে আমার প্রথম হাসপাতাল অ্যাসাইনমেন্টে তিনি যথারীতি আমার ম্যানেজার ছিলেন। পরে ডেপুটি ডিরেক্টর থাকা অবস্থায় তার জন্য অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টরের সুপারিশ করি। সেখান থেকে ২০১১ সালে চলে আসার পর তিনি আমার পদে আসীন হলেও আমাকে ছাড়া কাজে নাকি তার মন টিকছিলো না। অবশেষে ২০১৬তে কালীগঞ্জে আমার এখানে চলে এলেন। যেহেতু হাসপাতাল প্রশাসনে অভিজ্ঞ টিম ওয়ার্ক দরকার, সেক্ষেত্রে পুরনো কর্মস্থলের অভিজ্ঞদের সাথে রাখার চেষ্টা করি। তবে আমাদের প্রতিষ্ঠানে পঁয়ষট্টি-সত্তরের কোটায় যাদের বয়স তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার রেওয়াজ আছে। নাসির সাহেব সেই পরীক্ষা কৃতিত্বের সাথে উৎরালেও মাঝে মাঝে ‘ধরা’খান আমার কাছে।
- নাসির সাহেব? আবার ভুলে গেলেন ব্যাপারটা? কি করবো স্যার, ডায়েরিতে কোথায় লিখে রেখেছি সেটাও খুঁজে পাচ্ছি না। একগাল হেসে নাসির সাহেবের সপ্রতিভ জবাব। কিংবা কখনো রাগ করে বলি, কে বলেছে আপনাকে এই বয়সে চাকরি করতে? এতো কিছু আছে আপনাদের? (সম্পর্কে তিনি সংসদ সদস্য মাঈনুদ্দীন খান বাদলের ছোট ভাই, কিন্তু আমার কাছে কাজ ভুলের জন্য বকা খেয়েই খাচ্ছেন কথাটা বোঝাতে ইঙ্গিত করে বলি)। স্যার আপনি রেখেছেন বলেই আমি আছি। এ বয়সে আর কোথায় যাবো? নাসির সাহেবের কমন উত্তর। কথা হয়তো কিছুটা সত্য। আমরা গুটিকয়েক ব্যক্তি হাসপাতাল প্রশাসনের ভিন্নতর চ্যালেঞ্জ নিয়ে এখনো একাকী লড়াই করে যাচ্ছি। বুড়িয়ে যাওয়া নাসির সাহেবদের প্রয়োজনীয়তা হয়তো আমৃত্যু থাকবে এজন্য। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :