শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৯ মার্চ, ২০১৯, ০৩:২৬ রাত
আপডেট : ১৯ মার্চ, ২০১৯, ০৩:২৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তরুণ বঙ্গবন্ধু থেকে সুলতান মনসুর?

প্রভাষ আমিন : নজরুল ভাই মানে ড. আসিফ নজরুল আমার খুবই পছন্দের একজন মানুষ। সাংবাদিকতার একদম শুরুর সময় থেকে আমার সাথে তার ঘনিষ্ঠতা। তার বলা-চলা-লেখার দারুণ ভক্ত আমি। রীতিমতো ঈর্ষা করি। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তার গদ্যের হাতও চমৎকার। নব্বইয়ের দশকে তার একাধিক উপন্যাস পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিলো। পরে তিনি একাডেমিক কাজে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় লেখালেখিতে ছেদ পড়ে। দুই দশকেরও বেশি সময় পর আবার তিনি সৃজনশীল লেখালেখিতে সরব হয়েছেন। যথারীতি সেই মিষ্টি গদ্য এবং পাঠকপ্রিয়তা। তবে সাংবাদিকতা ছেড়ে এখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। সৃজনশীল লেখার চেয়ে রাজনৈতিক ভাষ্যকার ও কলামিস্ট হিসেবেই এখন তার ব্যস্ততা বেশি। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বের গড়ে ওঠা আন্দোলনেও সক্রিয় ছিলেন তিনি। ৯২ সালের ২৬ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গোলাম আযমের বিচারের জন্য গঠিত গণআদালতে তিনি গোলাম আযমের আইনজীবী ছিলেন। সে সময় বিএনপি সরকার গণআদালতের যে ২৪ উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করেছিলো, আসিফ নজরুল ছিলেন তাদের একজন।

পরে যুদ্ধধাপরাধীদের অপরাধ তদন্তে গঠিত গণতদন্ত কমিশনেও সক্রিয় ছিলেন তিনি। নজরুল ভাই শহীদ জননী জাহানারা ইমামের খুবই বিশ্বস্ত ছিলেন। কিন্তু পরে রহস্যজনক কারণে সেই বিশ্বাসে চিড় ধরে। এ নিয়ে নানা কথা শুনি। সঠিক কারণটা জানি না। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলনে তাকে আর পাওয়া যায়নি। প্রতীকী বিচারের সক্রিয় কর্মী আসল বিচারের সময় নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন। গণআদালতে থাকলেও গণজাগরণ মঞ্চে ছিলেন না। ড. আসিফ নজরুলের সাথে আমার মতো কখনো মেলে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মেলে না। তবে এই মতের অমিলে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কে প্রভাব ফেলেনি। ভিন্নমতের প্রতি আমার যেমন শ্রদ্ধা আছে, আশা করি তারও আছে। আমি এখনও তার উপন্যাস পড়ি মুগ্ধ হয়ে। টকশো দেখি আর কলাম পড়ি যৌক্তিক ভিন্নমতসহ।

নজরুল ভাইয়ের সেন্স অব হিউমারও অসাধারণ। ফেসবুকে ছোট ছোট স্ট্যাটাসে অনেক বড় কথা বলে ফেলেন। ডাকসু নির্বাচনের পরদিন এক স্ট্যাটাসে তিনি নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হকের মধ্যে তরুণ বয়সী বঙ্গবন্ধুর ছায়া দেখতে পেয়েছিলেন।

নির্বাচনের পাঁচদিন পর ডাকসু নেতাদের সাথে নুরুল হকও গণভবনে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। ডাকসু নির্বাচনে কিছু অনিয়ম ক্রটির কথা বললেও নূর আগামী নির্বাচনে যেন এমন না হয়, তার দাবি জানিয়েছিলেন। তার মানে তিনি আসলে ১১ মার্চের ডাকসু নির্বাচন মেনেই নিয়েছেন। নূর শেখ হাসিনার চেহারায় তার মায়ের ছায়া দেখতে পেয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডাকসু নির্বাচনে অনিয়ম জোরালোভাবে তুলে না ধরায় আসিফ নজরুল নুরুল হকের ব্যাপারে তার মূল্যায়ন বদলে ফেলেছেন। ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘অতীতে সব অত্যাচারের মুখে অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আপনার দৃঢ় ভূমিকা দেখে আপনার মধ্যে তরুণ বয়সী বঙ্গবন্ধুর ছায়া দেখেছিলাম। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মেরুদ- কোনো শাসকের সামনে বিন্দুমাত্র নুয়ে পড়তো না। আপনার মেরুদ- নুয়ে পড়লে আপনাকে তাই আর তরুণ বঙ্গবন্ধুর ছায়া মনে হবে না। বরং মনে হবে আপনি নির্ভিক তারুণ্যে বুড়িয়ে যাওয়া একজন সুলতান মনসুর’।

নজরুল ভাইয়ের সেন্স অব হিউমারে আমি মুগ্ধ। মাত্র পাঁচদিনেই নুরুল হক তরুণ বঙ্গবন্ধু থেকে বদলে গেলেন সুলতান মনসুরে! তবে আমার কাছে নূরকে তরুণ বঙ্গবন্ধু বা সুলতান মনসুর কোনোটাই মনে হয় না। মনে হয় এক বিভ্রান্ত তরুণ, যিনি হঠাৎ খ্যাতিকে ধারণ করতে পারছেন না। ছাত্রলীগের নেতাদের দেখেই যদি ডাকসুর ভিপি কনসেন্ট্রেশন হারিয়ে সব কথা বলতে ভুলে যান, তাহলে তো মুশকিল।
লেখক : হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়