শিরোনাম
◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত

প্রকাশিত : ১৮ মার্চ, ২০১৯, ০৪:৫৭ সকাল
আপডেট : ১৮ মার্চ, ২০১৯, ০৪:৫৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সত্য একটি আখ্যান কৃষ্ণা শর্মার জীবন

লী কুড়িগ্রাম

না, কোনো তামিল সিনেমার গল্প নয়, সত্য একটি আখ্যান কৃষ্ণা শর্মার জীবন। কৃষ্ণা দিল্লির ইন্ডিয়ান স্পাইনাল ইঞ্জুরি সেন্টারে ৩৪নং বেডে শুয়ে আছে দীর্ঘদিন। ঘাড়ের নীচ থেকে তার পুরো শরীর অবশ। খাবার গিলতে ও কথা বলতে শুধু পারেন। আর পারেন স্বপ্ন দেখতে। ১১ মে তারিখে বড় ভাইয়ের শ্যালিকা প্রীতির সঙ্গে ঠিক হওয়া বিয়েটা হবে না যদিও। পরের বছরের আগে ঠিক তিনি বিয়ের আগে জিম করে শরীরটাকে আগের মতো করে ফেলবেন! প্রচÐ আত্মবিশ্বাসী কৃষ্ণা। প্রীতিকে ফোনে রোজ একটু সময় নিয়ে নিজেকে সাজাতে গোছাতে বলেন। এর মধ্যেই দুলা সেজে ফিরতে পারবেন বলে জানান।
ইন্দোরের ৩২ গ্রামের একটি গ্রাম ওম শর্মাদের। কৃষ্ণার পিতা সেই ওম শর্মা। এলাকায় কারো হিম্মত নেই এই শর্মা পরিবারের সামনে চেয়ারে বসে, মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলে! কৃষ্ণার দাদার ছোট ভাই, যাকে কৃষ্ণা আদর্শ ভাবতেন, তার লাশটা রাস্তার পাশেই পড়েছিলো সেদিন। দেহ থেকে আলাদা করা ছিলো মাথাটাকে। সেই পাঠেল দাদা ৩২ গ্রামের সবার কাছে ছিলেন ভয়ংকর ত্রাস। বারোটি খুনের অভিযোগ থাকলেও কোনো মামলা ছিলো না পরিবারের বিরুদ্ধে। কোনো মন্ত্রী-এমএলএ পর্যন্ত তার এলাকায় ঢুকতে অনুমতি চাইতেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার অবস্থান সরাসরি রক্তের। তরবারি, রিভলবার উঁচিয়ে খোলাজিপে চড়ে পুরো গ্রাম চষে বেড়াতেন। পরিবারের শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবার পেশাই ক্ষেতি ও ক্ষেতকেন্দ্রিক। জমি বেচাকেনায় মধ্যস্বত্ব।
কৃষ্ণাও ছোট দাদার যোগ্য উত্তরসূরি। জিম থেকে ফেরার পথে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় তিন বন্ধুসহ আহত হন তিনি। কৃষ্ণার ঘাড় ভেঙে যায়। মেদান্তা হাসপাতালের ডাক্তার সেদিন অপারেশনে নেয়ার সময় ওম শর্মাকে হাল ছেড়ে দেয়ার কথা বলেছিলেন। জবাবে ওম শর্মা বলেছিলেন ডাক্তার, তোমার টাকা তো চাই? টাকা পাবে। আমার ছেলেকে বাঁচাও। টাকা দিয়েই হয়তো প্রাণ কেনা হয়েছে। এরপর কৃষ্ণাকে সুস্থ করার জন্য টাকাই বাজি ধরেছে পুরো পরিবার। অন্যান্য রোগীদের জন্য একজন অ্যাটেনডেন্ট নির্ধারিত থাকলে, কৃষ্ণাকে দেখছে ৪ জন। কোনো নিয়মের বালাইও নেই তার বেলায়।
বিছানায় লেগে থাকা কৃষ্ণা শর্মা কতো বেশি ক্ষমতাধর তার চারপাশের তটস্থ ছোটাছুটি দেখলেই বোঝা যায়। কৃষ্ণা আমার হাসপাতালের ওয়ার্ডমেট। রোজ তাকে দেখছি ও শুনছি। তার পরিবারের দাদা-ভাইয়াদের পড়িমরি ছুটতে দেখি। ব্রাহ্মণ পরিবারটির নিরামিষ খাবার ও ধ্যান সাধনায় উন্মুক্ততা দেখি। খাবারের সময় আচারের বোতল ও নমকিন এগিয়ে দেয়া দেখি। তবে এই ভয়ংকর রকম পরিবারের মানুষগুলোর মাঝে আবার এক অসম্ভব বিনয়ও দেখি। কৃষ্ণার জন্য আমার ভেতর থেকেও প্রার্থনা বেরিয়ে আসে। শুভ হোক তার আগামী। সুস্থ হয়ে সে উঠে দাঁড়াক। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়