শিরোনাম
◈ কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম, বেড়েছে আলুর ◈ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় কোনো ভাষা জানেন না, সময় এসেছে তৃতীয় ভাষার ◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫

প্রকাশিত : ১৮ মার্চ, ২০১৯, ০৩:২০ রাত
আপডেট : ১৮ মার্চ, ২০১৯, ০৩:২০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অতি উৎসাহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চাই, সমালোচনা করার অধিকার চাই

প্রভাষ আমিন : ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সব খেলাই তার কাছে সমান। সেখানে কেন দু’চোখে দেখবে? মেয়েরা ব্যাক টু ব্যাক চ্যাম্পিয়ন। গিফট তো পরের কথা, অভিনন্দন তো দিতে পারে, মিডিয়ায় কি কোনো অভিনন্দন জানাইছে? বিএফএফের টাকা কেন প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে দেয়াব? বিসিবির অনেক স্বার্থ আছে। বিসিবি সরকারের অনেক ফ্যাসিলিটিজ নেয়। চুন থেকে পান খসলেই প্লট পেয়ে যায়, গাড়ি পেয়ে যায়। বিএফএফ সরকারের কাছ থেকে কোনো ফ্যাসিলিটিজ নেয় না’।

এইটুকু পড়ে আপনার কী মনে হচ্ছে? বক্তা হয়তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পছন্দ করেন না। হতেই পারে। বাংলাদেশের সব মানুষ শেখ হাসিনাকে পছন্দ করতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। গণতান্ত্রিক দেশে যে কাউকে পছন্দ করার, অপছন্দ করার, প্রশংসা করার, তীব্র ভাষায় সমালোচনা করার অধিকার সবার আছে। সেই অধিকার চর্চার সুযোগ সবার থাকতে হবে। আচ্ছা, এই বক্তব্যে কি কোনো অপরাধমূলক উপাদান আছে, মানহানিকর কিছু আছে, কটুক্তিকর কিছু আছে? আমি অনেকবার পড়েছি। আমার বিবেচনায় এতে সমালোচনা ছাড়া আর কিছু পাইনি। কিন্তু এই বক্তব্য দেয়ার অপরাধে মাহফুজা আক্তার কিরণ নামে একজন নারী ক্রীড়া সংগঠক এখন কারাগারে। তিনি নারী কোটায় এশিয়া থেকে নির্বাচিত ফিফার কাউন্সিল সদস্য, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সদস্য এবং নারী ফুটবল দলের প্রধান।

গত ৮ মার্চ বাফুফে ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন তিনি। এই কথায় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবু হাসান চৌধুরী প্রিন্সের মানহানি হয়েছে। যার দাম তিনি ধরেছেন ৫০ কোটি টাকা। কেউ প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করলে প্রিন্স নামে এই ভদ্রলোকের মান কিভাবে হানি হয় বুঝতে পারছি না। প্রিন্সের দায়ের মামলায় শনিবার মাহফুজা আক্তার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুধু গ্রেপ্তারেই শেষ নয়, জামিন আবেদন বাতিল করে আদালত একজন নারী ক্রীড়া সংগঠককে কারাগারে পাঠিয়েছে। এটা অবিশ্বাস্য, এটা অন্যায়।

আমার ধারণা, প্রধানমন্ত্রী এই ঘটনা জানেন না। তার সহনশীলতা সম্পর্কে আমার যা ধারণা, তাতে এতো অল্পে তার মানহানি হওয়ার কথা নয়। প্রধানমন্ত্রী বরাবরই নারীর ক্ষমতায়নে আগ্রহী। তার সমালোচনা করার অপরাধে একজন নারী ক্রীড়া সংগঠককে কারাগারে পাঠানোর খবর জানলে তিনি বিরক্ত হবেন বলেই আমার ধারণা। আর স্বাধীন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করার অধিকার সবারই আছে। আর এই বক্তব্যে যতোটা না প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা, তার চেয়ে বেশি ফুটবলের বঞ্চনার ক্ষোভ। ক্রিকেটের জয়জয়কারের সময়ে ফুটবল যে দুয়োরানী, এটা তো ভুল নয়। প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে ক্রীড়ামোদী। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি তার বাড়তি ভালোবাসা আছে। এটা সবাই জানে। এটাও দোষের কিছু নয়। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বাড়তি ভালোবাসা, ফুটবল সংগঠকদের মনে বঞ্চনার অনুভূতি আনতেই পারে। সেটাও তো দোষের নয়। গণতন্ত্রে মত থাকবে, ভিন্নমত থাকবে। ভিন্নমতেই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।

আমার ধারণা আবু হাসান চৌধুরী প্রিন্স নামের এই ভদ্রলোক অতি উৎসাহী হয়ে এ মামলা করেছেন। এই মামলাই আসলে প্রধানমন্ত্রীকে হেয় করার শামিল। এর আগেও এমন অতি উৎসাহী লোকেরা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। চারপাশেই এমন অতি উৎসাহীদের ভিড় দেখি।

অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার এবং মাহফুজা আক্তার কিরণের মুক্তি দাবি করছি। আর অতি উৎসাহী আওয়ামী লীগারদের বিরুদ্ধে অন্তত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
লেখক : হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়