শিরোনাম
◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে

প্রকাশিত : ১৮ মার্চ, ২০১৯, ০৩:০১ রাত
আপডেট : ১৮ মার্চ, ২০১৯, ০৩:০১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিকল্প কে?

অসীম সাহা : বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার বিকল্প কে? যারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতে চান, তারা বুকে হাত দিয়ে বলুন, এই মুহূর্তে দেশ পরিচালনার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ছাড়া আর কে আছেন? খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, এইচ এম এরশাদ, ড. কামাল হোসেন কিংবা আর কেউ? আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, আপনারা যদি সত্যি বলেন, তা হলে অন্য কারো নাম জোর করে বলতে পারবেন ঠিকই, কিন্তু তা হবে কথা বলার জন্যই কথা বলা। আপনারা শেখ হাসিনার মতের সঙ্গে দ্বিমত করতে পারেন, তাঁকে নিয়ে সমালোচনাও করতে পারেন, কিন্তু মনে মনে আপনাদেরও মানতে হবে, সবকিছু ছাপিয়ে একমাত্র শেখ হাসিনাই বর্তমান সময়ে কান্ডারির ভূমিকা পালন করার যোগ্যতা রাখেন। আমি বলবো না, তাঁর কোনো দোষ-ত্রুটি নেই। আর রাজনীতির মানুষ হলে তো কথাই নেই। তাঁকে অনেক কৌশল করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হয়। বিশেষত বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রে, যেখানে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্রকারীরা কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করতে চায়, সেখানে রাষ্ট্রের স্বার্থে, নিজের অস্তিত্বের স্বার্থে অনেক সময় নিজের অপছন্দের পদ্ধতিটিও প্রয়োগ করে প্রতিপক্ষের পাল্টা জবাব দিতে হয়। সেটাকে যদি ত্রুটি হিসেবে ধরা হয়, তা হলে সেটা ত্রুটি। কিন্তু পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ কি পাওয়া যাবে, যিনি ভুল-ত্রুটির উর্ধ্বে? মানুষ হলে তার ভুল-ত্রুটি থাকবে। তার সমালোচনা করার মতো বিষয়ও থাকবে। কিন্তু বাঙালি চরিত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, শুধু মানুষের দোষ খুঁজে বেড়ানো। মানুষের নেতিবাচক দিকটিই লোকজনের চোখে পড়ে। কিন্তু তাদের যে ইতিবাচক দিকও আছে, তা নিয়ে কেউ প্রশংসা তো দূরের কথা, এমনকি তা স্বীকার করতেও কুণ্ঠাবোধ করেন। এটা এক ধরনের হীনমন্য চরিত্রহীনতা।

বাংলাদেশের চরিত্রহীন রাজনীতির ওপেন মার্কেটের যারা ঠিকাদার, তারা যখন শেখ হাসিনাকে নিয়ে কথা বলেন, তখন আমি কৌতুকের সঙ্গে তা লক্ষ করি। পৃথিবীতে এমন একজন নেত্রী দেখান, যিনি বাবা-মা-ভাই এবং আত্মীয়-স্বজনকে হারিয়ে রক্তমাখা দেশের মাটিতে ফিরে এসে আবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ক্ষতবিক্ষত দলকে পুনর্গঠিত করতে পেরেছেন? ২১ বছর পর স্বৈরশাসনের হাত থেকে দেশকে উদ্ধার করে গণতন্ত্রের ধারায় ফিরিয়ে এনেছেন? শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তাঁর সুযোগ্য এবং কুশলী নেতৃত্বে দেশকে প্রতিটি বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন? দেখাতে পারবেন না। যারা গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে গলা ফাটান, তাদের হাতে গণতন্ত্রের নমুনা আমরা স্বচক্ষে দেখিনি? ১৯ বার জাতির পিতার কন্যাকে যারা হত্যা করার চেষ্টা করেছেন, ক্ষমতায় থেকে ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে তাঁর জীবনকে শেষ করে দিতে চেয়েছেন, জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে খুন করবার ষড়যন্ত্রকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছেন, তাদের কণ্ঠে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায়? কোন্ লজ্জায় আপনারা ভোটের অধিকার চান? শেখ হাসিনার বদান্যতায় আপনারা এখনো বহাল তবিয়তে বাংলাদেশের মাটিতে রাজনীতি করতে পারছেন, সেটাই কি যথেষ্ট নয়? বঙ্গবন্ধুর মতো উদার হৃদয়ের অধিকারী বলেই শেখ হাসিনা এখনো আপনাদের বাংলাদেশের মাটিতে বসবাস করতে দিচ্ছেন। আপনারা যদি শেখ হাসিনার অবস্থানে থাকতেন, তা হলে অনেক আগেই তাঁকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিতেন!

বেঁচে থাকতে যিনি নিজে কখনো করতে সাহস পাননি, আপনাদের সেই নেতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে স্বাধীনতার কৃতিত্বকে ছিনতাই করার যে কুকর্ম আপনারা ১৯৭৫ সালের পর থেকে চালিয়ে গেছেন এবং এখনো যাচ্ছেন, সেটা শেখ হাসিনার উদারতার সুযোগ নিয়ে করে যেতে পারছেন। আপনারা বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের পরম্পরার বাঙালি জাতীয়তাবাদকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ নামক একটি সোনার পাথরবাটির জন্ম দিয়েছেন। পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদ বা ইসলামি জাতীয়তাবাদের কথা প্রকাশ্যে বলতে পারেন না বলে আপনারা ঘুরিয়ে-পেচিয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের কথা বলেন। বাংলাদেশের খেয়েপরে বেঁচে থাকা সত্ত্বেও আপনাদের মন পড়ে থাকে পাকিস্তানে। কারণ পাকিস্তান আপনাদের পেয়ারা দোস্ত। যে পাকিস্তান বাংলাদেশের ত্রিশ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে, দুলক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি করেছে, সেই দেশের জন্য আপনাদের খুব মায়া। আর যে ভারত মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়ে, ট্রেনিং ও অস্ত্র দিয়ে, এক কোটি শরণার্থীকে আহার ও বসবাসের ব্যবস্থা করে এবং ১০ হাজার নিয়মিত সেনাবাহিনীর রক্ত দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় অবদান রেখেছে, সেই ভারতের নাম শুনলেই আপনাদের গায়ে জ্বালা ধরে। এই পবিত্র মাটিতে দাঁড়িয়ে আপনারা এখনো পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে হটানোর জন্য ষড়যন্ত্র করেন। এভাবে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারলেই আপনারা আপনাদের সাধের পাকিস্তানকে বাংলাদেশের মাটিতে পুনর্স্থাপন করতে পারবেন! শেখ হাসিনা থাকলে সেটা সম্ভব নয়, মুক্তিযুদ্ধের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে সেটা সম্ভব নয় জেনেই দণ্ডিত আসামী তারেক রহমানকে দিয়ে ইংল্যান্ডে বসে ষড়যন্ত্রের আঁক কষেন।

এতোকিছুর পরেও শেখ হাসিনার ক্যারিশমেটিক নেতৃত্বের কারণে তিনি আপনাদের মতো বাংলাদেশবিরোধী লোকদের সঙ্গেও আলাপ করেন, নির্বাচনে আসতে বলেন। চা-পানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের মতো ঘৃণ্য মানুষদের করুণা করেন। সেটা বোঝার মতো বুদ্ধি আপনাদের মগজের বাইরে অবস্থান করে বলে এখনো আপনারা তড়পান। আমি বুঝি না, শেখ হাসিনা কেন এসব করেন? তিনি কাদেরকে বাংলাদেশের মাটিতে থেকেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার সুযোগ দেন? কেন এখনো ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার কুশীলবদের আইনের আওয়তায় এনে চরম শাস্তির ব্যবস্থা করেন না? কে আপনাকে এতো উদার হতে বলেছেন? আপনি কেন পিতা বঙ্গবন্ধুর মতোই এতো আবেগপ্রবণ? অতিরিক্ত আবেগ যে আপনার জীবনেও সুনামি ডেকে আনতে পারে, আপনি তা কবে বুঝবেন? বঙ্গবন্ধুর অতিরিক্ত আবেগ ও বিশ্বাসের কারণে খুনিরা তাঁকে আমাদের মাঝ থেকে কেড়ে নিতে পেরেছে। আমরা আপনাকে হারাতে চাই না। আপনাকে মনে রাখতে হবে, আপনি নেই মানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নেই, আপনি নেই মানে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা নেই, আপনি নেই মানে আমাদের অস্তিত্বও নেই! আপনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘বাংলাদেশ’ নামক যে জাতিরাষ্ট্রটি ইতিহাসের কালখণ্ডে স্থাপন করে দিয়ে গেছেন, আপনি কি পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের হাতে তাকে ছেড়ে দিয়ে যেতে পারেন?
লেখক : কবি ও সংযুক্ত সম্পাদক, দৈনিক আমাদের নতুন সময়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়