শিরোনাম
◈ গাজীপুরে হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু  ◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সেই সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৭ মার্চ, ২০১৯, ০৮:৪৬ সকাল
আপডেট : ১৭ মার্চ, ২০১৯, ০৮:৪৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমরা বেঁচে গেছি সেই নারীর জন্য : মুমিনুল

ডেস্ক রিপোর্ট : জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের যে মসজিদে গতকাল সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল, সে ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ দল নিরাপদে ক্রাইস্টচার্চের হোটেলে ফিরতে পারলেও হামলায় দুজন বাংলাদেশিসহ অন্তত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। ঘটনার পাঁচ মিনিট আগে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যদি ওই মসজিদে প্রবেশ করতো তাহলে হয়ত ঘটে যেত বড় দুর্ঘটনা। ঘটনা জানতে পেরে দ্রুত হোটেলে ফেরেন মুশফিক-তামিমরা। বাসের মধ্যে দলের অনেকেই অঝোরে কেঁদেছেন। বাসে থাকা ক্রিকেটার মুমিনুল হক তখনকার ভয়ানক সেই পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন সংবাদমাধ্যমকে।

ক্রিকেটার মুমিনুল হকের বর্ণনা—

‘আমরা মধ্যাহ্নভোজ সেরে বের হয়েছিলাম। অনুশীলন ছিল ২টায়। দেড়টায় যাওয়ার কথা ছিল। (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ ভাইয়ের সংবাদ সম্মেলনের জন্য একটু দেরি হয়েছে। মিনিট দশেক পর বের হয়েছি। মুশফিক ভাই, তাইজুল ও আমি মাঝে-মাঝে ড্রেসিং রুমে ফুটবল খেলি নিজেদের মধ্যে। এতে আরও দুই-এক মিনিট দেরি হয়েছে। মসজিদে পৌঁছানোর পর দেখি সবাই পড়ে আছে। ফোনে ব্যস্ত এক নারী বের হয়ে এসে ভেতরে যেতে নিষেধ করলেন। গাড়ি থেকে আরেক নারী চিৎকার করে একই কথা বললেন, ভেতরে যেও না, কে যেন গুলি করছে। আমরা তখনই বুঝে ফেলি কেমন পরিস্থিতি।’

‘আমরা বাসের মধ্যে পাঁচ-দশ মিনিট বসে ছিলাম। তখন পাইলট ভাই (ম্যানেজার) ফোনে কার সঙ্গে যেন কথা বলছিলেন। পেছন থেকে তামিম ভাই এলেন, আমরা বাসের ড্রাইভারকে জানালা খুলতে বলি। দেখলাম বেশ কিছু লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমরা বাসের পেছনের দরজা খুলে পার্কের মধ্য দিয়ে হেঁটে চলে আসি। আমরা পাঁচ মিনিট আগে মসজিদে পৌঁছালে ভেতরে থাকতাম এবং সবাই শেষ হয়ে যেতাম। পরম করুণাময়ের অশেষ রহমত যে পাঁচ মিনিট দেরিতে পৌঁছেছি।’

‘মসজিদে গেলে আমরা পেছনের দিকেই বসতাম এবং সে আমাদের কাউকে জীবিত রাখত না। কোনো বাছবিচার ছাড়াই টানা গুলি করেছে। আমরা এত ভয় পেয়েছি যে বাসের মধ্যেই কেঁদেছি। এই ঘটনার মধ্যে আমরা বাস পেছাতে বলেছি ড্রাইভারকে। কিন্তু ড্রাইভার বলেছে তা সম্ভব না, এ ধরনের কোনো নির্দেশ নেই। আমি মুশফিক ভাইয়ের সঙ্গে সম্ভবত দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় সারিতে ছিলাম। বাস থেকে দেখেছি, মসজিদ থেকে সবাই বের হয়ে আসছেন এবং মেঝেতে পড়ে যাচ্ছেন। তাদের শরীর ছিল রক্তমাখা। এর আগে ক্রাইস্টচার্চে থাকতে আমরা এই মসজিদেই নামাজ পড়েছি।’

‘কাল রিয়াদ ভাই জানতে চেয়েছিলেন, নামাজ পড়ে খাব, নাকি খেয়ে নামাজ পড়তে যাব? আমরা সিদ্ধান্ত নিই অনুশীলন যেহেতু জুমার পর, তাই নামাজ পড়ে এসেই খাব। কিন্তু কোনোভাবে সিদ্ধান্তটা পাল্টে যায়, আমরা খেয়ে মসজিদে গিয়েছি এবং এ কারণেই হয়তো বেঁচে যাই। আমরা কী পরিমাণ ভীত ছিলাম, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। নিজের চোখে এসব দেখতে কেমন লাগে, তা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।’

‘শুধু ভীত হয়ে পড়ার জন্যই আমরা কেঁদেছি। আসলে আমরা বেঁচে গেছি গাড়ির ভেতরে থাকা সেই নারীর জন্য, যিনি আমাদের মসজিদের ভেতরে যেতে নিষেধ করেছিলেন। প্রথম নারী বলার পর আমরা ভেবেছি তিনি অসুস্থ। কারণ নিউজিল্যান্ডে এমন কিছু ঘটতে পারে, আমাদের বিশ্বাস হয়নি। কিন্তু গাড়ির নারী জানালা দিয়ে সাবধান করে দেওয়ার সঙ্গে জানান, তার গাড়িতেও বুলেট লেগেছে, ঠিক তখনই আমরা পরিস্থিতির ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরেছি।’

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়