শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ১৭ মার্চ, ২০১৯, ০৭:০০ সকাল
আপডেট : ১৭ মার্চ, ২০১৯, ০৭:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মহাসড়কে গ্যাস লাইন লিকেজ: ২ ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা

নুরুল আমিন হাসান : রাজধানীর উত্তরায় বাস বাস র‍্যাপিড ট্রান্সপোর্ট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ করার সময় গ্যাস লাইন লিকেজের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উভয় পাশে দুই ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

উত্তরার আব্দুল্লাহ্পুরের পলওয়েল মার্কেটের সামনের মহাসড়কে শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে রাত ১১টার দিকে গ্যাস লিকেজ বন্ধ হলে যান চলাচল শুরু হয়।

এ বিষয়ে উত্তরা জোনের সহকারী কমিশনার (ট্র্রাফিক) জুলফিকার আলী বলেন, ‘উত্তরায় বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি)’র কাজ করার সময় মহাসড়কে গ্যাস লাইন লিক হয়ে গ্যাস নির্গত হওয়ার কারণে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে গ্যাস নির্গত হওয়া বন্ধ হলে রাত ১১টার দিকে পুন:রায় যান চলাচল শুরু করে দেওয়া হয়।’

সরেজমিনে দেখা যায়, গ্যাস লিকেজের ঘটনার পর পরই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরার হাউজবিল্ডিং ও আব্দুল্লাহ্পুর থেকে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে বিভিন্ন পরিবহনে থাকা লাখো যাত্রীরা বিপাকে পড়ে যান। অপরদিকে কিছু কিছু পরিবহনকে সেক্টরের ভেতর দিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। এমন ঘটনার কারণে ঘন্টারও বেশী সময় বাসের মধ্যে বসে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে পায়ে হেটেই গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

এদিকে এ ঘটনার পর পরই আশে পাশের চা ও সিগারেটের দোকান গুলো বন্ধ করে দেয় বিআরটি প্রকল্পের সাব কন্ট্রাক্টর এমবিএ প্রভিশনের কর্মকর্তারা। এছাড়াও ঘটনাস্থল ও এর আশপাশ এলাকায় সাধারণ জনগণকে সিগারেট ও আগুন নিয়ে প্রবেশে বাধা দেন তারা।

এ বিষয়ে তিতাস গ্যাসের ঢাকা মহানগর উত্তরের দলনেতা (জরুরী গাস) শাহ মোহাম্মদ আকমল বলেন, ‘গ্যাস লিকের বিষয়টি সরাসরি এমডি ও পরিচালক (অপারেশন) মনিটরিং করেছেন। আব্দুল্লাহ্পুর ও বিমাবন্দরসহ তিনটি স্থানের গ্যাস লাইনের বাল্ব বন্ধ করে দিয়ে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। এরপর আস্তে আস্তে গ্যাস লিক বন্ধ হয়ে গেছে।’

বিআরটি’র উড়াল সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এমবিএ প্রভিশনের সহকারী ম্যানেজার শাহিন আলম বলেন, ‘মহাসড়কের মাঝে রাস্তা কেটে সেতুর জন্য স্তম্ভ (খুটি) করা হবে। এর জন্য মাটি কাটা হবে। আর রাস্তার মাটি যেন ভেঙ্গে না পড়ে তার জন্য ড্রাইব করে শিব পাইল বসানো হচ্ছিল। শিব পাইল ইরেকশন করার সময় স্কেভেটরের কোনাটা গ্যাসের প্রধান লাইনে লেগে লিক হয়ে গেছে। যার ফলে গ্যাস লাইনে লিক হয়ে প্রচন্ড শব্দে গ্যাস বের হওয়া শুরু হয়।’

তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার পর পর পরই ফায়ার সার্ভিস ও তিতাস গ্যাসের লোকজনকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা দ্রুত এসে গ্যাস লিক বন্ধের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও এমবিএ প্রভিশনের লোকজন অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য ঘটনাস্থল ও এর আশ পাশ এলাকায় চা-সিগারেটের দোকানগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। তাছাড়াও জনগনকে সিগারেট নিয়ে আশপাশে আসতে বাধা দিয়েছে।’

বার বার এমন ঘটনা ঘটার কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলের জায়গাটি অন্ধকারাচ্ছন্ন। তাছাড়াও বাংলাদেশের যে ড্রইং মত গ্যাস লাইনের পাইপটি থাকার কথা সে রকম নেই। উদাহরণ স্বরূপ তিনি বলেন, ড্রইংয়ে আছে দেড় মিটার নিছে পাইপ আছে। কিন্তু গ্যাস লাইনের পাইপটি কোথাও কোথাও দেড় মিটারের উপরে উঠে গেছে, আবার কোথাও দেড় মিটারেরও বেশী নিচে রয়েছে। এসব সমস্যার কারণেই বার বার এম দুর্ঘটনা ঘটছে।’

এদিকে এমবিএ প্রভিশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলছেন, ‘মাটি খোড়ার আগেই তিতাস গ্যাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খবর দেওয়া হয়। কিন্তু তারা মাঝে মাঝে আসেন। আসার পর তাদেরকে খরচপাতি দিতে হয়। খরচপাতি না দিলে তারা আসলেও চলে যান, আবার অনেক সময় আসেনও না।

অপরদিকে উত্তরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গ্যাস লাইন লিকেজের ঘটনায় আমার নেতৃত্বে দুই ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে কাজ শুরু করেছে। যেকোন ধরণের দুর্ঘটনা মোকাবেলার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘বিআরটি প্রজেক্ট ও তিতাস গ্যাস কতৃপক্ষের মধ্যে যথেষ্ট সমন্বয়হীনতার অভাব রয়েছে। যদি সমন্বয় করে উড়াল সেতুর কাজ করা হত তাহলে বার বার এমন দুর্ঘটনা ঘটত না। সমন্বয়ের অভাব রয়েছে বিদায় এ নিয়ে চতুর্থবারের মত এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিতাস ও বিআরটি প্রজেক্টের কর্মকর্তাদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করলে এমন দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব বলেও তিনি জানান।'

উড়াল সেতু নির্মাণ করতে বার বার গ্যাস লাইন লিংক হয়ে যাওযার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়াররা বলছেন, ‘এমন কাজ করার সময়ে ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলোর ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। সেই সাথে কাজের শুরু থেকে শেষে পর্যন্ত তিতাস গ্যাসের লোকজন উক্ত স্থানে উপস্থিত থেকে নজরদারির প্রয়োজন। কারণ, একমাত্র তারাই মাটির নিচে থাকা গ্যাস লাইনের অবস্থান প্রসঙ্গে বলতে পারবেন। বিআরটি প্রজেক্টের কর্মকর্তাদের সাথে তিতাস গ্যাসের সমন্বয়হীনতার কারণে বার বার এমন ঘটনা ঘটছে।’

উল্লেখ্য, উত্তরার হাউবিল্ডিং সংলগ্ন মহাড়কে এর আগে একই কাজ করতে গিয়ে তিন বার গ্যাস লাইন লিক হয়ে দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ ছিল। এ নিয়ে চতুর্থবার একই ঘটনা ঘটলো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়