মারুফুল আলম : ২) নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে আরো অনেকের মতোই নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন বাংলাদেশী মেয়ে আফসানা আক্তার রিতু। মসজিদে পৌঁছার মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই গুলির শব্দে উদভ্রান্তের মতো ছুটে পালাতে গিয়ে রিতু স্বচক্ষে দেখে ফেলেন গুলি করে মানুষ হত্যা করার দৃশ্য। গুলির শব্দ, মানুষের আর্তনাদ, নিজের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে ঘটনাস্থল থেকে ছুটে পালানো- এসব ঘটনার অভিজ্ঞতায় রীতিমত মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। বিবিসি বাংলা।
৩) রিতুর স্বামী মোহাম্মদ বাবুল বলেন, রিতু এখনও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। সে অনেক ভয় পেয়েছে। খুব কম কথা বলে আর শুয়ে থাকে। তিনি বলেন, রিতু প্রথমে ভেবেছে, হয়তো আগুন লেগেছে। বাসার যেহেতু মসজিদ নাগালেই, মহিলাদের আলাদা গেট দিয়ে বের হতে উদ্যত হলো। তখন আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমার বন্ধুর স্ত্রী ও বাচ্চাও ছিলো। বের হওয়ার সময় তারা স্বচক্ষে দেখলো, গুলি করে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। তখন তারা দৌঁড়ে চলে আসলো।
৪) পরিচিত কেউ নিহত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বাবুল বলেন, এইমাত্র আমার এক বন্ধু ফোনে নিশ্চিত করলো, তার এক রুমমেট ওই দুর্ঘটনায় মারা গেছে। গতকাল আমি ও আমার সেই ফ্রেন্ড হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ নিয়েছি, পুলিশ স্টেশনে গেছি। কেউ কোনো তথ্য দিতে পারেনি। আজ সকালে নিশ্চিত হয়েছি, সে মারা গেছে।
৫) নিউজিল্যান্ডে এ ধরণের ঘটনা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য অনেক বড় হুমকি বলে মনে করেন বাবুল। তিনি বলেন, আমরা এমন একটি দেশে ছিলাম, যেখানে নিঃসন্দেহে এবং নির্ভয়ে চলাফেরা করা যায়। সামনে পেছনে কোনোরকম ভয়ভীতি ছিলো না। আমরাও যেনো এ দেশের অংশীদার। তিনি বলেন, মেইন সিটিতেই ঘটনাটা ঘটলো, যেখান থেকে পুলিশ স্টেশনের দুরত্ব ৩/৪ মিনিটের, একজন শুটার মুসল্লীদেরকে হত্যা করলো, পরে আবারো ফিরে মৃতদের ওপরে গুলি চালালো- এটি অবিশ্বাস্য।
৬) এখন স্ত্রীকে নিয়ে কী করবে দ্বিধাগ্রস্ত বাবুল। তিনি বলেন, পরিবারে গ্যারান্টি দিয়ে স্ত্রীকেও তিনি নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিয়ে এসেছেন। এদেশেই এমন একটি দুর্ঘটনায় হতাশ বাবুল। বর্তমানে ভিন্ন বাসায় রাখা হয়েছে স্ত্রীকে ও বন্ধুর স্ত্রী-সন্তানকে। ওখানে যাওয়া আসা করতে হচ্ছে তাদের। কারণ আল নুর মসজিদ এলাকায় সারারাত ধরে ইনভেস্টিগেশন করছে পুলিশ। ওই এলাকায় কোনো কিছুই না সরানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :