শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৬ মার্চ, ২০১৯, ০৪:৩৮ সকাল
আপডেট : ১৬ মার্চ, ২০১৯, ০৪:৩৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যশোর ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের বেপরোয়া কর্মকান্ডে সংগঠনের ভাবমুর্তি সংকটে

জাহিদুল কবীর মিল্টন, যশোর প্রতিনিধি: যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের বিতর্কিত কর্মকান্ডে সংগঠনটি ভাবমুর্তি সংকটে পড়েছে। তাদের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে দলীয় নেতা, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ।

গত ৭ মার্চ এমএম কলেজের পুরাতন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ পারভেজকে নিজের বাড়িতে তুলে নিয়ে বেদম প্রহার করেন সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী। পরে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রাশেদের অভিযোগ, ক্যান্টিন থেকে চাঁদা না দেওয়ায় তাকে বাড়িতে নিয়ে মারপিট করেন শাহী।

সর্বশেষ ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার দাবীকৃত চাঁদা না পেয়ে জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ছালছাবিল আহমেদ জিসানের মারপিটে সাজু চৌধুরী নামে এক ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি মারা গেছেন।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি অপূর্ব হাসান বলেন, বুধবার রাতে জিসান সাজুর মাথায় আঘাত করে। পরে বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে মারা গেছে সাজু। আমরা জিসানকে আটকের চেষ্টা করছি।

যশোর সরকারি এমএম কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, ছাত্রলীগকে রীতিমতো কলঙ্কিত করছে শাহী ও জিসান। সংগঠনের নাম ব্যবহার করে তারা প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করছেন। তাদের দাবিকৃত চাঁদা না দিলে খুন করা হচ্ছে। বাড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। এমএম কলেজের আসাদ হলকে সভাপতি শাহী তার ‘টর্চার সেল’ বানিয়েছেন। এখানে নিয়মিত ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন করা হয়। পরে চাঁদা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাণের সংগঠন ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে জরুরী ভিত্তিতে কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানাচ্ছি।

জানা যায়, গত ২০১৭ সালের ১০ জুলাই সম্মেলনের মাধ্যমে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে রওশন ইকবাল শাহী ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছালছাবিল আহমেদ জিসান দায়িত্ব পান। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হুসাইন ১৯ জুলাই দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটিকে এক বছরের জন্য দায়িত্ব দেন। সেই হিসেবে বেশ আগেই এই কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় ছাত্রলীগ বলতে শাহী-জিসানই সব। তারা শহরের বিভিন্ন কোচিং সেন্টারসহ এমএম কলেজের সামনের বিভিন্ন দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করেন। কলেজটির শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য গড়ে উঠা বিভিন্ন ছাত্রবাস থেকেও নিয়মিত চাঁদা আদায় করে শাহীর অনুসারীরা।

এছাড়া এমএম কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বেশ কয়েকবার একাধিক শিক্ষার্থীকে আসাদ হলে তুলে নিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শাহীর ‘টর্চার সেল’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আসাদ হলে নিয়ে নির্যাতন করে পরে তাদের অভিভাবকদের খবর দেওয়া হয়। তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা। এমন একটি ঘটনায় মাস ছয়েক আগে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অভিযোগও দেওয়া হয়েছিলো।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের অনুসারী এই দুই নেতা এখন রীতিমতো আতঙ্কের পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে সংগঠনটি ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে।

তবে অভিযুক্ত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছালছাবিল আহমেদ জিসানের সাথে যোগাযোগ করা না গেলেনও সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী অবশ্য চাঁদাবাজির সাথে যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, জামায়াত-বিএনপির একটি চক্র ছাত্রলীগকে দূর্বল করতে এমন মিথ্যাচার করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়