ডেস্ক রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার জিনোদপুরে একটি সরকারি খাল ভরাট করে বেচার জন্য একাধিক প্লট তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। স্থানীয় হাসান উদ্দিন প্রাচীন খালটি ভরাট করছেন। এলাকাবাসী প্রতিকার চেয়ে গত মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নবীনগর-কোম্পানীগঞ্জ-কুমিল্লা সড়কের পাশে জিনোদপুরের মাঝামাঝি স্থানে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন ধরে খালটি মাটি দিয়ে ভরাট করছে। পাশাপাশি সেখানে ‘আল মক্কা, ৬০ শতাংশ জায়গা বিক্রি করা হবে’ লিখে একটি বড় সাইনবোর্ড লাগিয়েছে।
গত সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের ওই জায়গায় (কড়ইবাড়ী, জিনোদপুর) থাকা খালটির কয়েক শতাংশ জায়গায় মাটি ফেলে দ্রুততার সঙ্গে ভরাট কার্যক্রম চলছে। এ সময় ওখানে থাকা আবদুল আলীম মিয়া, বাহাদুর ব্যাপারীসহ একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে গায়ের জোরে স্থানীয় হাসান উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি একটি শক্তিশালী মহলের সহযোগিতায় এই সরকারি খালটি দখলের পাঁয়তারা করছে। তবে যেভাবে মাটি দিয়ে খালটি ভরাট করা হচ্ছে, তাতে এখনই এটি বন্ধ করা না হলে এলাকার ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।’
এলাকাবাসী বলেন, ব্যস্ততম সড়কের পাশে দিনের আলোয় সরকারি খাল ভরাট করার পেছনে মূলত কারা জড়িত, প্রশাসনের উচিত সবার আগে তা সামনে তুলে ধরা।
ইউএনওর কাছে এলাকাবাসীর পক্ষে আবেদন করা স্থ্থানীয় কড়ইবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা বায়োজিদ আলম বলেন, ‘খালটির প্রায় ১০০ শতাংশ জায়গা ভরাট করা হচ্ছে। তবে এটি ভরাট হয়ে গেলে আশপাশের এক হাজার হেক্টর ফসলিজমি পানির অভাবে বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া খালটি ভরাট হয়ে গেলে এলাকার পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাবে। তাই যেকোনো মূল্যে খালটি রক্ষার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউএনওর কাছে এলাকাবাসীর পক্ষে আবেদন করেছি।’
তবে খাল দখলকারী স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. হাসান উদ্দিন বলেন, ‘পানি নিষ্কাশনের জায়গা রেখেই খাল ভরাট করা হচ্ছে। এতে ফসলি জমি কোনোভাবে নষ্ট হবে না।’ সরকারি খাল দখল কেন? এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শুধু আমাকেই দেখলেন। এর আগে আশপাশে কোটি কোটি টাকার সরকারি জায়গা কারা দখল করল, সেগুলো আপনারা দেখেন না?’ তিনি আরো বলেন, ‘সরকারি জায়গাতো আর আমি সারা জীবন ধরে রাখতে পারব না। তাই সরকার যখন চাইবে, আমি তখনই এই জায়গা ছেড়ে দেব।’
নবীনগরের ইউএনও মোহাম্মদ মাসুম বলেন, ‘অভিযোগটির সত্যতা যাচাই করার জন্য এরই মধ্যে এসি ল্যান্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এসি ল্যান্ডের তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে, খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সূত্র : কালের কন্ঠ
আপনার মতামত লিখুন :