শিরোনাম
◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৫ মার্চ, ২০১৯, ০৭:১২ সকাল
আপডেট : ১৫ মার্চ, ২০১৯, ০৭:১২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দ্বিতীয় গণভোটেও না, ৩ মাসের জন্য ব্রেক্সিট পেছানোর মত দিলেন ব্রিটিশ এমপিরা

আসিফুজ্জামান পৃথিল : তিন মাসের জন্য ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া পিছিয়ে দিতে সম্মত হয়েছেন ব্রিটিশ এমপিরা। তবে এজন্য ইউরোপিয় ইউনিয়নের অনুমোদন লাগবে। এই সময়ের মধ্যে বিকল্প ব্রেক্সিট পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হবে। ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল সরকারের আনা এই প্রস্তাবনাটি ২১০ ভোটের বড় ব্যবধানে পাশ হয়। এর পক্ষে ভোট পড়েছে ৪১২টি আর বিপক্ষে ভোট ২০২টি। এই প্রস্তাব অনুযায়ী আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ব্রেক্সিট পেছাবে। তবে এজন্য ২০ মার্চের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের ব্রেক্সিট পরিকল্পনাকে অনুমোদন দিতে হবে পার্লামেন্টেকে। সেটি না হলে আবারও গভীর অনিশ্চয়তায় পড়ে যাবে দ্বীপ রাষ্ট্রটি। বিবিসি, সিএনএন, গার্ডিয়ান

যদি ২০ মার্চের মধ্যে চুক্তি অনুমোদিত না হয় তবে সরকার আরো সময় বর্ধিত করার আবেদন করবে। তবে ইউরোপিয় ইউনিয়নকে এতে রাজি হতে হবে। এর আগে আরো ৪টি সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপিত হয় ব্রিটিশ পার্লামেন্টে। প্রথম সংশোধনী প্রস্তাবটি ছিলো ব্রেক্সিট পিছিয়ে দিয়ে আরো একটি গণভোট আয়োজন। সেটির পক্ষে ভোট পরে মাত্র ৮৫টি। আর বিপক্ষে ভোট ৩৩৪টি। দ্বিতীয় সংশোধনীটি আনেন লেবার এমপি লুসি পাওয়েল। এটির বিষয় ছিলো ৩০ জুন পর্যন্ত ব্রেক্সিট পেছানো। এটি মাত্র ৩ ভোটে হেরে যায়। পক্ষে পরে ৩১১টি ভোট আর বিপক্ষে ভোট ৩১৪টি। এরপরই উঠে হিলারি বেনের বহুল আলোচিত পার্লামেন্ট নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সংশোধনীটি। এটি মাত্র দুই ভোটের ব্যধানে হেরে যায়। প্রস্তাবনাটির পক্ষে ভোট পরে ৩১৪টি। বিপক্ষে ভোট ৩১২টি। ফলে অল্পের জন্য পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ থাকলো থেরেসা মে’র হাতেই।
এরপরে এমপিরা লেবার পার্টির ফ্রন্ট বেঞ্চ সংশোধনীটি বাতিল করে দেয় ১৬ ভোটে। এটি পাশ হলে প্রধানমন্ত্রীর চুক্তি, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এবং নতুন কিছু করার জন্য ৫০ অনুচ্ছেদের সময়সীমা বর্ধন প্রচেষ্টা বাতিল হয়ে যেতো। তবে মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই বলা যায় ২৯ মার্চ যুক্তরাজ্যের ইউরোপিয় ইউনিয়ন ত্যাগের সম্ভাবনা অতি অল্প।

এরপরই পার্লামেন্টে বক্তৃতা দেন বিরোধীদলীয় নেতা জেরেমি করবিন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চুক্তি অথবা চুক্তিহীন ব্রেক্সিট আর কার্যকরী কিছু নয়, এটা তার মেনে নেওয়া উচিৎ। তিনি ব্রেক্সিটের তারিখ পরিবর্তনের জন্য আবারও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। এই ভোটাভুটি নিয়ে পার্লামেন্ট উত্তপ্ত থাকলেও প্রধানমন্ত্রী থেরেসা উপস্থিত ছিলেন না। থেরেসা মে এর আগে জানিয়েছিলেন, তিনি তার করা ব্রেক্সিট চুক্তি পাশ করাতে আরো একটি ‘অর্থপূর্ণ ভোট’ আয়োজন করবেন। তিনি এমপিদের বলেন, তার চুক্তিটি যদি আরো একবার এমপিদের সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়, তবে ব্রেক্সিটে দীর্ঘমেয়াদে দেরি হতে পারে। এ কারণে আগামী সপ্তাহেই ৩য় ভোট আয়োজন করতে চান তিনি।
এদিকে দ্বিতীয় গণভোটের দাবিতে সবাই যখন আবারও মত দিচ্ছেন, থেরেসা সরকার এখনও এটি গ্রহণে নারাজ। থেরেসার সহকারি, ক্যাবিনেট অফিস মন্ত্রী ডেভিড লিডিংটন বলেছেন, দ্বিতীয় গণভোট আবারও বিভেদ সৃষ্টি করবে। এছাড়াও গণভোট আবারও করতে চাইলে ব্রেক্সিটে দেরি হবে বলে তিনি জানান। লিডিংটনের মতে, এর ফলে সৃষ্ট ক্ষতি সামাল দেয়া যাবে না। ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক ব্রেক্সিটের দীর্ঘমেয়াদে সময়সীমা বর্ধনের জন্য ইইউ নেতাদের আহ্বান জানাতে যাচ্ছেন। তিনি মনে করেন, যত দেরি হবে ব্রেক্সিট বিষয়ে ওয়েস্টমিনিস্টার তত ভালোভাবে গুছিয়ে উঠতে পারবে। টুইটারে নিজের এই ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন টাস্ক। এটি হলে ইইউ নির্বাচনের আগে ব্রেক্সিট নাও সম্ভব হতে পারে।

ব্রেক্সিট প্রত্যাহার চুক্তির মুখ্য বিষয় মূলত ৩টি। ইউরোপিয় ইউনিয়ন ত্যাগের সময় যুক্তরাজ্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ইউরোপিয় ইউনিয়নকে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার দেবে। যুক্তরাজ্যের যেসব নাগরিক ইইউভুক্ত দেশগুলোতে রয়েছেন তাদের এবং যুক্তরাজ্যে ইইউভুক্ত দেশগুলোর যেসব নাগরিক রয়েছেন তাদের কী হবে সেই বিষয়টি। এবং নর্দান আয়ারল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড রিপাবলিক এর মাঝামাঝি ইইউ এবং যুক্তরাজ্যের সীমানা কীভাবে নির্ধারণ হবে এই বিষয়টি।

‘ব্রিটিশ এক্সিট’ নামটিকে সংক্ষেপে ডাকা হচ্ছে ব্রেক্সিট নামে। এটি হচ্ছে ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। ৪০ বছরের বেশি সময় ইউরোপিয় ইউনিয়নের সাথে থাকার পর ২০১৬ সালের ২৩শে জুন একটি গণভোট আয়োজন করেছিলো যুক্তরাজ্য। সেই গণভোটে ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছিল ইউরোপিয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে, আর থাকার পক্ষে ছিল বাকি ৪৮ শতাংশ ভোট। কিন্তু সেই ভোটের ফলাফলের সাথে সাথেই ব্রেক্সিট হয়ে যায়নি। এই বিচ্ছেদ ঘটার কথা রয়েছে আগামী ২৯শে মার্চ। সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়