হুমায়রা তাবাসসুম
নুরুল হক ইতোমধ্যেই ক্যাম্পাসে এসে শোভনদের সাথে মিট করেছেন, প্রেসের সামনে কোলাকুলিও করেছেন। তারপর আবার আন্দোলনের কর্মসূচিতেও ইন্সট্যান্ট কিছু পরিবর্তন এনেছেন। সবকিছু মিলে উনাকে নিয়ে আশপাশে অস্থির রকমের এক আলোড়ন তৈরি হয়েছে। তবে জিয়া হাসান ভাইয়ার এই লেখাটা পড়ে নিয়ে উনাকে দু’চারটা বকা দেবেন প্লিজ। আমি নিজে একবার পুলিশ চেকপয়েন্টে হ্যারেজ হয়ে এতো পরিমাণে গুটিয়ে গিয়েছিলাম যে টানা দুইমাস আমাকে সাইকিয়াট্রিস্টের হেল্প নিতে হয়েছে। নুরুল হকও একজন সাধারণ শিক্ষার্থী, তারও একটা জীবন আছে।
‘নুরের ভিপি পদ প্রত্যাখ্যান করা উচিত নয়। তার উচিত ভিপির পদে থেকে আন্দোলন করা। সে ভিপি পদ প্রত্যাখ্যান করলে, বাকিরা বিশাল আন্দোলন করে, তরাই ফেলবে এমন ভাবা ভুল হবে। স্ট্যাটাস কো এর কোন পরিবর্তন হবে না। আওয়ামী লীগ নুরকে ভিপি বানায় কিছু প্রমাণ অপ্রমাণ করেনি। সবাই জানে কী হইছে।
কিন্তু নুর যদি ভিপি থাকে, তবে আগামী দিনগুলোতে বিভিন্ন ইস্যুতে তার পলিটিকাল কারেন্সি থাকবে, লিভারেজ থাকবে। যেইটা সে সেসময় ব্যবহার করতে পারবে। আওয়ামী লীগ তার জায়গাতেই থাকবে। নুর প্রত্যাখ্যান করলেও থাকবে, না করলেও থাকবে। কিন্তু অ্যাজ আই সেইড। নুরের উচিত ভিপি পদে থাকা। তাহলে সে প্রতিদিন, ছাত্র লীগের উপরে চটাং চটাং থাপ্পড় দিতে পারবে। নুরকে এতোদিন যারা শিবির গালি দিছে, এইটা তাদের গালে বিশাল থাপ্পড় যে, ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রীরা একটা শিবিরকে ভিপি নির্বাচন করলো? প্লাস এইটা তার পারসোনাল সিকিউরিটি। সে এখন এমন একটা ইম্পরট্যান্ট পারসনে পরিণত হবে সরকার তাকে চাইলে গুম, খুন, অত্যাচার করতে পারবে না। সে ইতোমধ্যে অনেক সইছে। তার উচিত এমন একটা সিদ্ধান্ত নেয়া যেইটায় তার আগামীদিনে পলিটিকাল লিভারেজ বাড়ে। সে যদি ভিপি পদ ছাইড়া দেয়, বিএনপি আর বামপন্থিগুলোর বিশাল বড় আন্দোলনের আশায় তারে আশাহত হইতে হবে। কারণ আগেই বলছি এই আওয়ামী আমলে আগামী কিছুদিন কিচ্ছু হবে না।
সো, একই কথা বারবার রিপিট করতেছি। নুর ভিপি পদ প্রত্যাখ্যান করা না করায় কোনো ইমপ্যাক্ট হবে না। তার নিজের এবং তার সঙ্গীসাথীদের পলিটিকাল লিভারেজ যেই সিদ্ধান্তে বাড়বে, সেই সিদ্ধান্তে তাদের থাকা উচিত। যারা আন্দোলনের নাম করে নুরকে পদত্যাগ করতে বলতেছেন, তাদের ৭২ ঘণ্টা পরে লম্বা লম্বা স্ট্যাটাস দেয়া ছাড়া কোথাও দেখা যাবে না।
মূল পয়েন্টটা হইলো নুর ভিপি পদে থেকেই সবচেয়ে ইফেক্টিভ আন্দোলন সংগ্রাম করতে পারবে। কারণ সে তখন পলিটিকালি এম্পাওয়ার্ড থাকবে, রিলেভেন্ট থাকবে। সে নির্বাচিত হইছে মানে নির্বাচনে অনিয়ম হয়নি। এসব আওয়ামী যুক্তি পাবলিক খায় না।
নুরের উচিত যে সিদ্ধান্তে তাদের পলিটিকাল ক্যাপিটাল বাড়বে সেই সিদ্ধান্তে থাকা। এইটা কোনোমতেই গণফোরামের মনসুর সিচুয়েশান নয়। এই ছেলেটা গত দুই বছর ধরে কতোবার মাইর খাইছে। ছাত্রলীগের কন্সট্যান্ট হুমকির মুখে, ৭১ টিভির আক্রমণের মুখে, শিবির নাম দিয়ে আওয়ামী লীগের সকাল-সন্ধ্যা ক্যারেক্টার এসাসিনের মধ্যে বারবার নির্যাতিত হয়েও সে সামনে ছিলো।
বাংলাদেশের ৯৯ ভাগ কুতুব নুরের জায়গায় হইলে বহুত আগে জার্মানি এসাইলাম নিয়া নিতো। কাইন্ডলি নুরকে মনসুরের সাথে তুলনা করে তাকে ছোট করবেন না। একই যুক্তি ঘোরায়ফেরায় বারবার বলছি যুক্তিগুলো রিইনফরস করার জন্য। ভিপি পদ প্রত্যাখ্যান না করেও আন্দোলন করা সম্ভব। কারণ আন্দোলন যাই হোক স্ট্যাটাস কো চেঞ্জ হবে না। তাই নিজেকে এম্পাওয়ার্ড রেখে আন্দোলন করতে হবে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :