শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ১৪ মার্চ, ২০১৯, ০২:৫১ রাত
আপডেট : ১৪ মার্চ, ২০১৯, ০২:৫১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পাইপলাইনই হয়নি তবুও এলএনজি অজুহাতে বাখরাবাদের গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব

স্বপ্না চক্রবর্তী : পাইপলান তৈরি না হলেও এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আসবে এই অজুহাতে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাখরাবাদ গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। শুধু বাখরাবাদ নয় অন্যান্য গ্যাস বিতরণ কোম্পানীগুলোও দাম বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কোম্পানি (বার্ক) এর কাছে। একই দাবি জানিয়েছে সিলেট অঞ্চলের গ্যাস বিতরণ প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ গ্যাসও । সিস্টেম লসের অজুহাতে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

বুধবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এনার্জি কমিশনের গণশুনানির তৃতীয় দিন গ্যাস বিতরণকারী এই দুই কোম্পানীর দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের উপর আলোচনা হয়। বার্ক অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ গণশুনানির তৃতীয় দিন উপস্থিত ছিলেন, কমিশনের চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম, সদস্য মিজানুর রহমান, মাহমদুউল হক ভুইয়া, রহমান মুর্শেদ, আব্দুল আজিজ খান।
শুনানিতে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি আবাসিকে এক চুলার বর্তমান দর ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩শ’ ৫০ টাকা, দুই চুলা ৮শ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪শ’ ৪০ টাকা, প্রি-পেইড মিটারে ৯.১০ (ঘনমিটার) টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬.৪১ টাকা করার প্রস্তাব করেছে।

অন্যদিকে বিদ্যুতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৩.১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯.৭৪ টাকা, সিএনজিতে ৩২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৮.১০ টাকা, সার উৎপাদনে প্রতি ঘনমিটার ২.৭১ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮.৪৪ টাকা, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ৯.৬২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮.০৪ টাকা, শিল্পে ৭.৭৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৪.০৫ টাকা, বাণিজ্যিকে ১৭.০৪ টাকার পরিবর্তে ২৪.০৫ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাখরাবাদের গ্যাস কোম্পনির পক্ষে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম এবং জেনারেল ম্যানেজার (অর্থ) নারায়ন চন্দ্র পাল বক্তব্য রাখেন।

একই দিন আবাসিকে একচুলার বর্তমান দর ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৩৫০ টাকা, দুই চুলা ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৪৪০ টাকা করার প্রস্তব দিয়েছে জালালাবাদ গ্যাস। কোম্পানি। অন্যদিকে যারা গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার ব্যবহার করে তাদের ক্ষেত্রে ৯ টাকা ১০ (ঘনমিটার) পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৬ টাকা ৪১ পয়সা করার প্রস্তাব করেছে তারা। এছাড়া বিদ্যুতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৩ টাকা ১৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯ টাকা ৭৪ পয়সা, সিএনজিতে ৩২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৮ টাকা ১০ পয়সা, সার উৎপাদনে প্রতি ঘনমিটার ২ টাকা ৭১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ৪৪ পয়সা, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ৯ টাকা ৬২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৮ টাকা ৮৮ টাকা, শিল্পে ৭ টাকা ৭৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৮ টাকা ৪ পয়সা, বাণিজ্যিকে ১৭ টাকা ৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৪ টাকা ৫ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। জালালাবাদ গ্যাস কোম্পানির পক্ষে শুনানিতে বক্তব্য দেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. এহসানুল হক পাটোয়ারি।

এইসব প্রস্তাবের তীব্র প্রতিবাদ করে এসময় জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সালেক সুফি বলেন, বিতরণ কোম্পানিগুলো এলএনজি আমদানির যৌক্তিকতা তুলে ধরছে, কিন্তু তারা সেটা পারে না। তারা বিভিন্ন কোম্পানিকে ঋণ দিয়েছে। এটা কোন নীতিতে দিয়েছে তারা? তারা কি ব্যবসায়ী নীতি পরিবর্তন করেছে? তিনি আরও বলেন, তারা বলছে, পেট্রোবাংলার নির্দেশে দিয়েছে। এপ্রিল থেকে ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আসবে বলা হচ্ছে। কিন্তু পাইপলাইনের কাজই শেষ হয়নি। গ্যাস আসবে না তাই ধরে নিয়ে গ্যাসের দাম সর্বোচ্চ ৬০০/৭০০ টাকা রাখার আহ্বান জানান তিনি। অন্যদিকে জালালাবাদের দাম বাড়ানোর বিষয়ে বার্কের চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম বলেন, গ্যাস বিতরণে সিস্টেম লসের পরিবর্তে জালালাবাদের সিস্টেম গেইন হচ্ছে। এই অবস্থায় তাদের গ্যাস দাম কেন বাড়াতে হবে! শুনানীতে সবার বক্তব্য শোনা হচ্ছে। পরে পর্যালোচনা করে গ্যাসের দামের বিষয়ে কমিশন আদেশ দেবে। গ্যাস বিতরণে সিস্টেম লসের পরিবর্তে জালালাবাদের সিস্টেম গেইন হচ্ছে। এই অবস্থায় তাদের গ্যাস দাম কেন বাড়াতে হবে জানতে চান তিনি।

এসময় কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, আবাসিকে মিটার না দিয়ে গ্যাসখাতকে দুর্নীতির মধ্যে রাখা হচ্ছে। মিটার যুক্ত গ্রাহকের ৩০০/৪০০ টাকা বিল আসে। মিটার বিহীনরা দিচ্ছে ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা। কিন্তু তারা ৫০ ভাগও গ্যাস ব্যবহার করে না। এটা বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ হাউজ অ্যান্ড ফ্ল্যাট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, আপনারা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস দিতে পারবেন না। তাহলে দাম বাড়াবেন কেন? দুর্নীতি ছাড়া গ্যাসের কোনও কাজ হয় না। এই দুর্নীতি বন্ধ করতে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এখনই কোম্পানিগুলো লাভজনক জায়গায় আছে। দুর্নীতি বন্ধ করা গেলে গ্যাসের দাম না বাড়িয়েই আরও লাভ করতে পারবে কোম্পানিগুলো।

কোম্পানীগুলোর দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে আজ ১৪ মার্চ সকালে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এবং দুপুরে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের প্রস্তাবিত দামের ওপর শুনানি করবে কমিশন।

এসময় কমিশনের মূল্যায়ন কমিটি জানায়, গ্যাস বিবরণ ট্যারিফ নির্ধারণ পদ্ধতি মোতাবেক রেট বেজের ওপর রিটার্ন বিবেচনায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মূল্যয়ন কমিটির মাধ্যমে জালালাবাদ গ্যাস এর প্রাক্কলিত নীট রাজস্ব চাহিদা প্রতি ঘনমিটারে শুন্য দশমিক ০৭৫১ টাকা। কমিশনের মাধ্যমে ২০১৮ সালের গত ১৬ অক্টোবর জারী করা বিইআরসি আদেশ ২০১৮/০৫ এর মাধ্যমে জালালাবাদ গ্যাস এর বিতরণ চার্জ প্রতি ঘনমিটারে শুন্য দশমিক ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যা ২০১৮ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে কাযকর করা হয়েছে। এ অবস্থায় ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষ হবার পর প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে সুন্দরবন গ্যাস এর ডিস্ট্রিবিউশন চার্জ পুন নির্ধারণ করা যথাযথা হবে বলে টেকনিক্যাল কমিটি মনে করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়