সুজন কৈরী : দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতির কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) অনুষ্ঠিত ‘ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক সচেতনতামূলক মহড়া’ অনুষ্ঠান পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথি সফল মহড়া পরিচালনার জন্য ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পরে তিনি মহড়া কার্যক্রমের বিষয়ে স্থাপিত ইনসিডেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ঘুরে দেখেন এবং ইনসিডেন্ট কমান্ডার সালেহ আহমেদের কাছে মহড়া কার্যক্রমের বিস্তারিত অবহিত হন। তিনি দুর্যোগ প্রশমনে এই ধরনের মহড়া কার্যক্রম নিয়মিত পরিচালনার জন্য ফায়ার সার্ভিসকে অনুরোধ জানান।
এর আগে হাসপাতাল চত্বরে মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। মহড়ার দিকনির্দেশনায় ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন, মহড়ার বিভিন্ন ইভেন্টে নেতৃত্ব দেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকতা আব্দুল হালিম, খন্দকার আব্দুল জলিল, আনোয়ারুল হক, নিয়াজ আহমেদ, তানহারুল ইসলাম প্রমুখ।
মহড়া চলাকালে স্বাভাবিক জীবনে হঠাৎ করেই ৭ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প আঘাত হানার শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর। পূর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী চারদিক থেকে আর্তচিৎকার ভেসে আসে। ছোটাছুটি শুরু হয় লোকজনের। ভবন ভেঙে পড়ার ঘটনা দৃশ্যমান করতে বিভিন্ন ভবনের ফ্লোর থেকে ডামি ইট ও দেয়াল ভেঙে পড়তে দেখা যায়। মহড়া চলাকালীন কেউ যেন আতঙ্কিত না হয় সে জন্য মহড়ার আগেই ঘোষণা মঞ্চ থেকে সকলকে অবহিত করা হয়। ফলে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে যাদের ছোটাছুটি করতে দেখা যায়, তারা আসলে মহড়ারই অংশ। বিভিন্ন ফ্লোরে কৃত্রিম ধোঁয়ার সৃষ্টির মাধ্যমে আগুন লাগার দৃশ্য তৈরি করা হয়। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট সেখানে ডেপ্লয় করা হয়। ছুটে আসে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর ১২টি অ্যাম্বুলেন্স। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি অ্যাম্বুলেন্সও সেখানে যুক্ত হয়। শুরু হয় রোগীদের উদ্ধার পর্ব। ফায়ার সার্ভিস জাতীয় জাদুঘর চত্বরে স্থাপিত ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেলে রোগীদের স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করে। হতাহতদের উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রশির সাহায্যে বিভিন্ন ফ্লোর থেকে রোগীদের নামিয়ে আনেন। সব মিলিয়ে বিএসএমএমইউ হাসপাতাল যেন হয়ে উঠে সম্প্রতি অগ্নি দুর্ঘটনা সংঘটিত এক টুকরো সোহরাওয়ার্দি হাসপাতাল।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান, বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, পরিচালক ব্রিগে. জেনা. আব্দুল্লাহ আল হারুন, প্রক্টর প্রফেসর সৈয়দ মোজাফ্ফর আহমেদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আকরাম হোসেন প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :