শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৩ মার্চ, ২০১৯, ০৮:১০ সকাল
আপডেট : ১৩ মার্চ, ২০১৯, ০৮:১০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নওগাঁর বদলগাছীতে শ্রেণিকক্ষ সংকটে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ‘মির্জাপুর কে.সি উচ্চ বিদ্যালয়ে’ শ্রেণিকক্ষ সংকটে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করতে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে, অপরদিকে শিক্ষার্থীরা পড়াশুনায় পিছিয়ে পড়ছে। এতে করে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। সমস্যাটি নিরসনে দ্রুত সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের জন্য ১৯৬৪ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাড়তে থাকে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা। বর্তমানে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্থানে সরকারি ও বেসরকারি উচ্চ পর্যায়ে চাকুরি করছেন। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যালয়টির শ্রেণিকক্ষ ও অবকাঠামো সংকটের কারণে পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৮৮ জন ছাত্র-ছাত্রী আছে। এর মধ্যে ছাত্র ১৮৫ জন এবং ছাত্রী সংখ্যা ২০৩ জন। শিক্ষক রয়েছেন ১১ জন এবং কর্মচারী চারজন।

একটি দ্বিতীয় তলা ভবনের মোট ঘরের সংখ্যা ৯টি। এর মধ্যে শ্রেণিকক্ষ ৫টি, কম্পিউটার ল্যাব ১টি, প্রধান শিক্ষকের ঘর ১টি, সহকারী শিক্ষকদের ঘর ১টি, ছাত্রীদের ঘরের (কমন রুম) আংশিক ও লাইব্রেরী ১টি। ২০১৬ সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় ৪ জন ও মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় ২জন এবং ২০১৭ সালে জেএসসিতে ২জন ‘এ’ প্লাস পেয়েছে। ২০১৮ সালে জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় ৯৯ শতাংশ পাশ।

দীর্ঘদিন থেকে শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে খোলা আকাশের নিচে শিক্ষকদের পাঠদান করাতে হচ্ছে। শীত মৌসুমে আবহাওয়া ভাল থাকায় বিদ্যালয়ের মাঠে ক্লাস করতে হয় শিক্ষার্থীদের। কিন্তু গ্রীষ্মকালীন সময় প্রচন্ড রোদের তাপে গরম এবং হঠাৎ বৃষ্টি এলে বাহিরে আর ক্লাস করা সম্ভব হয়না। নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগ এবং ইসলাম শিক্ষা ও হিন্দু ধর্ম শিক্ষা বিষয়গুলো যখন আলাদা ভাবে পাঠদান করানোর দরকার হয় তখন আর শ্রেণিকক্ষে করানো সম্ভব হয়না। ফলে বেশির ভাগ সময় খোলা আকাশের নিচে ফাঁকা মাঠে শিক্ষকদের পাঠদান করাতে হয়।

আবার কখনো প্রধান শিক্ষকের অফিসে ও কমন রুমেও পাঠদান করতে হয়। এছাড়া অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীর সংখ্যা (৭০ জন) এই শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় একই বেঞ্চে ৬-৭ জন করে গাদাগাদি করে বসতে হয়। হৈচৈ পেছনে থেকে ছাত্ররা ক্লাশের পড়া বুঝতে পারেনা। মোট কথায় শ্রেণিকক্ষ সংকটে শিক্ষার্থীদের যেমন পড়াশুনার বিঘ্ন হচ্ছে। তেমনি কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে পড়ছে তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টি নওগাঁ-বদলগাছী প্রধান সড়ক সংলগ্ন। গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের মাঠে খোলা আকাশের নিচে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন ইংরেজি শিক্ষক এসএম আতিকুজ্জামান রাজু। পাঠদানের সময় কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, বিদ্যালয়টি এলাকার ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখন কিছুটা শীত আছে এজন্য দিনের বেলায় বাহিরে ক্লাস নেয়া সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু গ্রীষ্মকালীন সময়ে প্রচন্ড গরম এবং হঠাৎ বৃষ্টি এলে বাহিরে পাঠদান করানো সম্ভব হয়না। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগ এবং ইসলাম শিক্ষা ও হিন্দু ধর্ম শিক্ষা বিষয়গুলোকে যখন আলাদা ভাবে পাঠদান করানোর দরকার হয়, তখন তা আর সম্ভব হয়না।

দশম শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা খাতুন, জাকিয়া সুলতানা ও শ্রাবন কুমারসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে মাঠে ক্লাস করতে হয়। শীতের সময় মাঠে ক্লাশ করা সম্ভব হলেও গরমের সময় রোদের তাপে সম্ভব হয়না। অনেক সময় বৃষ্টি আসলে আর ক্লাস করা হয়না। এছাড়া বিদ্যালয়টি রাস্তা সংলগ্ন হওয়ায় ট্রাক ও বাসের হর্ণের শব্দে ক্লাসে মনোযোগ আসেনা। কিছুদিন পর আমরা বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যাব কিন্তু পরবর্তীতে যারা আসবে তাদের যেন আর মাঠে ক্লাস করতে না হয়। এজন্য সমস্যাটি নিরসনে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করার দাবী জানানো হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ বলেন, শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে আমার অফিসেও পাঠদান করতে হয়। একদিকে যেমন পাঠদান বিঘ্ন হচ্ছে, অপরদিকে শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো ক্লাস করতে না পারায় পিছিয়ে পড়ছে। এ বিষয়গুলো স্থানীয় সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদারকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা আলোর মুখ আমরা দেখতে পাইনি। সমস্যাটি নিরসনে দ্রুত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।

বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুম আলী বেগ বলেন, বিষয়টি অবগত আছেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদের সুপারিশ নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর একটা দরখাস্ত দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই বরাদ্দ পাওয়া গেলে বিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধান হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়