এইচ এম জামাল: পাঁচ কারণে ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে ছাত্রলীগ মনোনীত রেজওয়ানুল হক শোভনের পরাজয় হয়েছে বলে মনে করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং-লবিং, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের পিছিয়ে থাকা, ভোট চলাকালে সাত সকালে কুয়েত মৈত্রী হলে ‘জাল ব্যালট পেপার’ উদ্ধার, নুরের শারীরিক নির্যাতনের খবর এবং সর্বোপরি নুরের প্রতি মিডিয়ার অধিক মনোযোগ ছাত্রলীগ ভিপি পদে পরাজয়ের প্রধান কারণ। বাংলাদেশ জার্নাল
২৮ বছর পর সোমবার অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুর। তিনি পেয়েছেন ১১ হাজার ৬২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন পেয়েছেন ৯ হাজার ১২৯ ভোট। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ নুর ‘জামাত শিবিরি’। ভিপি হিসেবে সে নির্বাচিত না হয়ে অন্য যে কেউ নির্বাচিত হলে তারা মেনে নিতেন। কিন্তু নুরকে ভিপি মেনে নেয়া তাদের জন্য কিছুতেই সম্ভব নয়। গভীর রাতে ফল ঘোষণার পরপরই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার সকাল থেকে সাধারণ নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী জানান, বর্তমান ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উত্তরবঙ্গের। নেতৃত্ব হাতছাড়া হওয়ায় দক্ষিণবঙ্গের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের মানসিক দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে। সবাই ছাত্রলীগের জন্য মনপ্রাণ বলা হলেও ভেতরে ভেতরে আঞ্চলিকতার কারণে গ্রুপিং-লবিংয়ের কারণে নির্বাচনে প্রভাব পড়েছে। তারা আরও বলেন, গত এক দশকেরও বেশি সময় যাবত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় স্বাভাবিক কারণেই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ বিরোধী একটি বিশাল গ্রুপ তৈরি হয়। এটিও নির্বাচনের ব্যালটে প্রভাব ফেলেছে।
ছাত্রলীগের এক কর্মী বলেন, গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দিন-রাত ছাত্রলীগ মনোনীত প্যানেলকে বিজয়ী করতে পরিশ্রম করেছি। কিন্তু সোমবার কুয়েত মৈত্রী হলে ‘জাল ভোটের ব্যালট পেপার’ উদ্ধার হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মনে ছাত্রলীগ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়।
এছাড়া নুরুল হক নুর গতকাল ক্যাম্পাসে প্রহৃত হয়েছেন -এমন অপপ্রচারে শিক্ষার্থীদের ‘সিমপ্যাথি’ ভোট তার পক্ষে গেছে। অন্য এক ছাত্রলীগ কর্মী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব ছাত্রলীগ ইচ্ছা করেই নুরুল হকদের হাতে তুলে দিয়েছিল। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তারা নেতৃত্বে না এসে নুরুল হকদের সামনে এগিয়ে দিয়েছে। ফলে ওই সুযোগে তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে ঠাঁই করে নিয়েছে। যার প্রভাব ডাকসু নির্বাচনে পড়েছে।
এছাড়া ডাকসুর ভিপি পদ হারানোর পেছনে মিডিয়াও দায়ী বলে মনে করছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। তারা বলেন, ছাত্রলীগের কার্যক্রমকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন ও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পক্ষে অবস্থান নেয়া এবং তাদের হাইলাইট করে প্রচার করায় প্রভাব পড়েছে ডাকসুতে।
আপনার মতামত লিখুন :