ডেস্ক রিপোর্ট : বুড়িগঙ্গা ইকোপার্করাজধানীতে নতুন তিনটি ইকোপার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ নদীর তীরভূমিতে ইকোপার্ক তিনটি নির্মাণ করা হবে। এছাড়া এসব নদীর নিচু ও উঁচু তীরভূমিতে ৫২ কিলোমিটার দৈর্ঘের ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। এ লক্ষ্যে এই চারটি নদীর তীরে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা বাঁধ, ওয়াকওয়ে ও জেটি নির্মাণসহ আনুসঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প গ্রহণ করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের জুলাইতে, শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২২ সালের ৩০ জুন। অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা জমিতেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আওতায় উত্তরখান, তুরাগ, মিরপুর, কামরাঙ্গীরচর, মোহম্মদপুর ও কোতোয়ালি; নারায়নগঞ্জ জেলার আওতায় নারায়নগঞ্জ সদর, বন্দর, ও সোনারগাও; গাজীপুর জেলার আওতায় গাজীপুর সদর ও টঙ্গী এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। সূত্র জানিয়েছে, চারটি উদ্দেশ্যে এই প্রকল্পটি সরকার হতে নিয়েছে। তা হলো—বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষা, তুরাগ ও বালু নদীর তীরভূমিকে অবৈধ দখল মুক্ত করা, দখলমুক্ত অংশের সৌন্দর্য বাড়ানো, নদীর উভয় তীরের পরিবেশের উন্নয়ন ও দখলমুক্ত তীরভূমিতে অবকাঠামো নির্মাণ করে তা ব্যবহার উপযোগী করা।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় তিনটি ইকোপার্ক নির্মাণের পাশাপাশি নিচু তীরভূমিতে ৩৫ দশমিক ৫১ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। এছাড়া উঁচু তীরভূমিতে ১০ দশমিক ২৭ কিলোমিটার ও তীরের কলামের ওপর পাঁচ দশমিক ৯২ কিলেমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। পায়ে হাঁটার সেতু নির্মাণ করা হবে শূন্য দশমিক ৩০ কিলোমিটার। নদীর তীররক্ষা করা হবে ৪৪ দশমিক ৭৮৩ কিলোমিটার। নদীর তীরে সিমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে দেড় কিলোমিটার। সীমানা পিলার বসানো হবে ১০ হাজার ৮২০টি। আর সিসিসি জেটি নির্মাণ করা হবে ১৯টি। ওয়াকওয়ের পাশে তীর ঘেষে বসার বেঞ্চ নির্মাণ করা হবে ৪০৯টি।
মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে তিন কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্য দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের জন্য জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। সদরঘাট থেকে বাবুবাজার পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা নদীর ঢাকা প্রান্তে প্রকল্পের আওতায় একটি নান্দনিক স্থাপত্যকর্ম প্রস্তুতের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুস সামাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নদী রক্ষা করতে হবে। আর এর জন্য অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নদী তীর সংশ্লিষ্ট বিভাগের আওতায় থাকবে। ভবিষ্যতে আর বেদখল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুব উল ইসলাম বলেন, ‘আমি যে টুকু জেনেছি, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এটি বাস্তবায়ন হলে নদী রক্ষায় যথেষ্ট সহায়ক হবে। এতে নদীর সীমানা চিহ্নিত হওয়ার পাশাপাশি তা রক্ষা হবে।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :