রাশিদ রিয়াজ : পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্র যে ৪৫টি এফ-১৬ জঙ্গিবিমান দিয়েছে তা শুধুমাত্র জঙ্গি দমনে এবং কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্যে নয় এমন শর্তের কথা সম্প্রতি ভারতীয় মিডিয়ায় জোরেশোরে প্রচার হচ্ছিল। কিন্তু ওই চুক্তিতে ওয়াশিংটন শুধু একথাই স্বীকার করে নি যে, ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান এ বিমান ব্যবহার করতে পারবে বরং তাতে একথাও বলা হয়েছে যে, পাকিস্তানকে এফ-১৬ জঙ্গিবিমান সরবরাহ করলে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্ভাব্য পরমাণু সংঘাত ঠেকানো সম্ভব হবে। যদিও মার্কিন মিডিয়া সিএনএন বলছে সর্বশেষ ভারতে পাকিস্তান যে বিমান হামলা চালিয়েছে তাতে দেশটি চীনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নির্মিত জেএফ-১৭ যুদ্ধ বিমান ব্যবহার করেছে। এছাড়া ভারত পাকিস্তানের একটি এফ-১৬ বিমান ভূপাতিত করার দাবি করলেও তা নিশ্চিতভাবে প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে।
পাকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত অ্যানে প্যাটারসন ২০০৮ সালের ২৪ এপ্রিল মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েকে বিশেষভাবে এ দুটি বিষয় উল্লেখ করে একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন। প্যাটারসনের এ বার্তার কথা তুলে ধরেছে অনুসন্ধানী ওয়েবসাইট উইকিলিকস। মার্কিন রাষ্ট্রদূত তার ওই বার্তায় পাকিস্তানকে আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য মধ্যম পাল্লার ৫০০টি এআইএম-১২০-সি৫ অ্যাডভ্যান্সড ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার কথা বলেছিলেন। ভারত দাবি করছে, গত সপ্তাহে পাকিস্তান ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিরুদ্ধে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।
এফ-১৬ বিমান সরবরাহের ব্যাপারে ভারত সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আপত্তি জানালে জবাবে রাষ্ট্রদূত প্যাটারসন মার্কিন প্রশাসনকে বলেছিলেন, যদি আমাদের লক্ষ্য হয় পাক সেনাদের কৌশল পরিবর্তনে চাপ সৃষ্টি করা এবং ভারত সীমান্ত থেকে সেনা পুনঃমোতায়েন করানো তাহলে এফ-১৬ বিমান নিয়ে চুক্তি বাতিল করলে তা আমাদের লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করবে না।
একই বার্তায় তিনি বলেছিলেন, এফ-১৬ বিমান পেলে পাক সামরিক বাহিনী ভবিষ্যত যুদ্ধের সময় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের পরিবর্তে প্রচলিত যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহারে উৎসাহিত হবে। এছাড়া, ভারত যেহেতু বিমান শক্তিতে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে সেক্ষেত্রে এফ-১৬ বিমান ভারতের প্রাধান্য কমাবে না। অন্যদিকে, এই বিমান সরবরাহে দেরি করলে পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনা করবে। সেসময় তিনি ভারতের ১২৬টি এফ-১৮ কিংবা সমমানের বিমান কেনার কথাও উল্লেখ করেন। প্রেসটিভি/সিএনএন
আপনার মতামত লিখুন :