আল-আমিন : হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেন, আমরা একদিন রাসূল (সা.)-এর কাছে বসেছিলাম। এরই মধ্যে একজন লোক আগমন করলো, যার পরিধানে ছিল মিযান (এক প্রকার মাছ) রংয়ের জুববা। অতঃপর সে রাসূল (সা.)-এর মাথা বরাবর দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার-সাথী সঙ্গীগণ আরোহীগণকে অবদমিত করছে। বা সে বলল, সে আরোহীগণকে অবদমিত করতে ও রাখালদের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে চায়। নবী করীম (ছাঃ) তখন তার জুব্বার বন্ধনস্থল ধরে বললেন, আমি কি তোমাকে নির্বোধের পোষাকে দেখছি না?
অতঃপর তিনি বললেন, ‘আল্লাহর নবী নূহ (আঃ) মৃত্যুকালে স্বীয় পুত্রকে অছিয়ত করে বলেন, আমি একটি অছিয়তের মাধ্যমে তোমাকে দু’টি বিষয়ে নির্দেশ দিচ্ছি ও দু’টি বিষয়ে নিষেধ করে যাচ্ছি। নির্দেশ হলো- তুমি বলবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। কেননা আসমান ও জমিনের সবকিছু যদি এক পাল্লায় রাখা হয় এবং এটিকে যদি এক পাল্লায় রাখা হয়, তাহলে এটিই ভারি প্রতিপন্ন হবে। সাত আসমান ও সাত জমিন যদি একটি জটিল গ্রন্থির রূপ ধারণ করে তবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ও ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী’ তা ভেঙ্গে দিবে। কেননা এটি সকল বস্তুর তাসবীহ/সালাত এবং এর মাধ্যমেই সকল সৃষ্টিকে রুজি দেওয়া হয়।
আর আমি তোমাকে নিষেধ করে যাচ্ছি দুটি বস্তুত থেকে। শিরক ও অহংকার। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! শিরক তো আমরা বুঝলাম। কিন্তু অহংকার কী? আমাদের কারো যদি সুন্দর পোষাক থাকে আর সে তা পরিধান করে। তবে এতে কী অহংকার হবে? তিনি বললেন, না। সে বলল, তাহলে আমাদের কোন ব্যক্তির যদি এক জোড়া সুন্দর জুতা থাকে এবং, এর দু’টি সুন্দর ফিতা থাকে। তা কী অহংকারের আওতায় পড়বে? তিনি বললেন, না।
সে বলল, তাহলে আমাদের কোন ব্যক্তির যদি একটি বাহণ জন্তু থাকে যার উপর সে আরোহণ করে। তাতে কী অহংকার হবে? তিনি বললেন, না। সে বলল, তাহলে আমাদের কারো বন্ধু-বান্ধব রয়েছে যাদের সাথে সে ওঠা-বসা করে? এতে কী অহংকার হবে? তিনি বললেন, না। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! তাহলে অহংকার কী?তিনি বললেন, অহংকার হলো, সত্যকে দম্ভভরে প্রত্যাখ্যান করা ও মানুষকে হেয় জ্ঞান করা।’ (আদাবুল মুফরাদ হা/৫৪৮; আহমাদ হা/৬৫৮৩; ছহীহাহ হা/১৩৪)
আপনার মতামত লিখুন :