হাবিবুর রহমান সোহেল: নাইক্ষ্যংছড়িতে সরকারি বরাদ্দের রাসায়নিক সারে তামাকের আগ্রাসান বিস্তার লাভ করছে দিন দিন। সবজি ক্ষেতে তামাক চাষ এবং নদীর তীরে ও সরকারি সমভূমিতে তামাক চাষ আইন বিরোধী হলেও এর বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না কোনো মতেই। কৃষি অফিস ও বনবিভাগ সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নীরবতার সুযোগ নিয়ে তামাক কোম্পানী গুলো করে যাচ্ছে এসবের চাষ। যা সুশীল সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে সর্বত্র।
এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তারা অতিসত্বর এ চাষ নিরুৎসাহিত করণ ও তামাকে কাঠ পুড়ানো বন্ধ এবং ইয়াবা পাচার রোধ ও ব্যবহারে সর্বোচ্চ সর্তক থেকে প্রশাসনকে সহায়তা করতে অনুরুধ জানানো হয়। আর উপজেলা নির্বাহী অফিসারও এসব অপতৎপরতার বিষয়ে সরকারি নির্দেশ অনুসরণ ও সুশীল সমাজের পরামর্শ বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়িতে তামাক চাষ হচ্ছে প্রায় ৩শত হেক্টর জমিতে। আর তামাক চাষির সংখ্যা ৬ শতাধিক। চুল্লির সংখ্যা ৭ শতের কাছাকাছি। আর পাশ্ববর্তী গর্জনিয়া কচ্ছপিয়া এর সংখ্যা ২০ গুণ বেশী । আর এ বৃহৎ এলাকায় তামাক চাষে উৎসাহিত করছে দেশের বড় বড় তামাক কোম্পানীগুলো। যারা চাষিদের নানা সুযোগ সুবিধা নিয়েই এ সব তামাক চাষ করছে বর্তমানে। কিন্তু এ বিষয় গুলো সুশীল সমাজের কাছে মোটেও গ্রহনযোগ্যতা পায় নি কখনও।
উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বেলা ১১ টায় উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায়-সভার সদস্য উপজেলা নির্বার্হী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচিঁ, জেলার মন্ত্রীর প্রতিনিধি আলহাজ্ব খাইরুল বশর ও সোনাইছড়ির চেয়ারম্যান বাহাইন মার্মা সহ অনেকে বক্তব্য রাখেন তামাক এবং ইয়াবা টেবলেটের বিষয়ে। আলহাজ্ব খাইরুল বশর বলেন,তামাক আর ইয়াবার আগ্রাসন দিনদিন ভয়াল আকারে বেড়ে চলছে। মানুষ নাভিশ্বাস ফেলতে পারছে না এ দু’বিষয়ে। তাই এখনই এ সব বন্ধ করতে উদ্দ্যোগ নেয়া দরকার। তিনি প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এ সময়।
উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাহাইন র্মামা বলেন,তার এলাকায় অনেক তামাক চাষ । কী পাহাড়ী ঢালুতে ! কী বা রবি ও সবজি চাষের জমিতে- বালাই নেই। এ পণ্যটি পরিবেশের ক্ষতি ছাড়া কিছুই করছে না। অনেক মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচি বলেন,তামাক চাষে পরিবেশের চরম ক্ষতি। পাহাড়ি সমভূমি ও নদীর তীরবর্তী জমিতে তামাক চাষ আইন বিরোধী কাজ। তিনি আরো বলেন,চুল্লি বড় সমস্যা।
উক্যাজাই হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন তামাক চুল্লীটি স্কুলের শিশুদের নানা সমস্যা করছে। এটি সরানোর কথা থাকলেও এখনও সরায় নি সেই চুল্লী। এক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তামাক আর ইয়াবার বিষয়ে ছাড় নেই। ব্যবস্থা নেয়া হবে। সভায়, কাঠপাচার ও কর্তনে বন বিভাগের র্নিলিপ্ততায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
আর ইয়াবা গ্রাম খ্যাত ঘুমধুমের তুমরু শূণ্য রেখায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শিবির টি সেখান থেকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যেতে জোর দাবী জানান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজ।
আর সভার সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) কামাল উদ্দিন অনুরুধ জানান ,রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কের নিম্মমানের কার্পেটিং কাজ নিয়ে সজাগ হতে উপস্থিত সকলকে । আর আইন-শৃংখলা নিয়ে সকলে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সভায় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক শফিউল্লাহ,থানার ওসি তদন্ত যায়েদ নূর, উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মাঈনুদ্দিন খালেদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রাজা মিয়া সহ সরকারী-বেসরকারী অফিসের কর্মকর্তা ও উপজেলা আইন-শৃংখলা কমিটি ও অন্যান্য কমিটির সকল সদস্য ও সদস্যা।
আপনার মতামত লিখুন :