আশরাফ চৌধুরী রাজু, সিলেট : গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় নগরজীবনে বেড়েছে সিলিন্ডার গ্যাসের চাহিদা। এই চাহিদাকে পুঁজি করে নগরীতে গজিয়ে ওঠেছে গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা। অনেক আবাসিক এলাকায়ও সিলিন্ডারের দোকান খুলে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। অনুমোদন ছাড়াই ঝুঁকিপূর্ণভাবে গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান খুলে বসায় বাড়ছে ঝুঁকি। সম্প্রতি রাজধানীর চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর ঝুঁকিপূর্ণভাবে সিলিন্ডার বিক্রির বিষয়টি ফের আলোচনায় ওঠে এসেছে।
চকবাজারের এই অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ৭০ জন। দদ্ধ হন আরও অনেকে। এই অগ্নিতকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো জানা না গেলেও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুণের সূত্রপাত হতে পারে বলে অনেকের মত।
এদিকে, সিলেট নগরের পান দোকান, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান, লন্ড্রির দোকান, সিমেন্ট বিক্রির দোকান, কসমেটিকের দোকান, লাইব্রেরিসহ ফুটপাতের ছোটখাটো দোকানেও অবাদে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি দোকানেই অন্যান্য জিনিসপত্রের পাশাপাশি ৫ থেকে ২০টি সিলিন্ডার রাখা হয় বিক্রি জন্য।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, জ্বালানি কাজে ব্যবহার্য সিলিন্ডার গ্যাস কোনো আবাসিক এলাকা বা মার্কেটে বিক্রি করা নিষিদ্ধ। গ্যাস সিলিন্ডার রোদে না রাখা, নিরাপদ দূরত্বে সিলিন্ডার মজুদ করা, উপড় থেকে সিলিন্ডার নিচে না ফেলার নির্দেশনাও রয়েছে। এছাড়াও এই সিলিন্ডার বিক্রি করতে গেলে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপক কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র নিতে হয়। তবে এসব নিদের্শনা আর নিষেধাজ্ঞা মানছেন না সিলেটের ব্যবসায়ীরা।
সিলেট বিস্ফোরক পরিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সিলেট জেলায় ৪৮৭ টি প্রতিষ্ঠানের নামে বিস্ফোরক লাইসেন্স নেওয়া আছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০টি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে অ্যামোনিয়া গ্যাসের এবং ৪০টির অধিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। সিলেট বিস্ফোরক পরিদপ্তর থেকে ৪০টি সিলিন্ডারের কম ব্যবসাকারী কোনো ব্যবসায়ীকে অনুমোদন দেওয়া হয় না।
তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, সারা জেলায় যে পরিমান অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এর চেয়ে বেশি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলেট নগরেই রয়েছে। অবৈধ ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নির্দেশনা থাকলেও জনবল সংকটের কারনে অভিযান পরিচালনা করতে পারছেন না বলে জানান সিলেট বিস্ফোরক পরিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অফিসের সহকারী পরিচালক তন্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জামাদি ছাড়া গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা করা অনেক বিপদজনক। গ্যাস সিলিন্ডার ডিলাররা ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করলেও খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স দিয়েই ব্যবসা করছেন।
এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘যততত্র সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করা অনেক বিপদজনক। এ সপ্তাহে তিনি আসলেই অবৈধ সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :