মো.সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও : অজ্ঞাত রোগে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভান্ডারদহ নয়াবাড়ি গ্রামে আরও আক্রান্ত হয়েছে নারীসহ ৫জন। কয়েকদিনের ব্যবধানে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু হয়। এমন মৃত্যুতে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সমর কুমার চ্যার্টার্জ জানান, প্রথমে ওই গ্রামের আবু তাহের মৃত্যু হয়। পরে একই দিনে তার স্ত্রী হোসনে আরা ও জামাই হাবিবুর রহমানের। অবশিষ্ট দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে ইউসুফ রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে মারা যান। অপর ছেলে মেহেদী হাসান রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মারা যান রাত সাড়ে ৯টায়। মাত্র ১৯ দিনের ব্যবধানে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের ভান্ডারদহ নয়াবাড়ি গ্রামে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নে ভান্ডারদহ নয়াবাড়ি গ্রামের আবু তাহের মৃত্যুবরণ করেন। আবু তাহের বয়স্ক হওয়ার কারণে বিষয়টি তেমন গুরুত্বের সঙ্গে দেখেনি তার পরিবার। এরপর গত বুধবার আবু তাহেরের জামাই হাবিবুর রহমান একইভাবে আক্রান্ত হন। পরদিন সকালে ৯টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে হাবিবুরের মৃত্যু হলে জামাইয়ের সেই মৃত্যুর সংবাদ শোনার কিছুক্ষণ পর আবু তাহেরের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম মৃত্যুবরণ করেন।
রোববার সকালে একই রোগে আক্রান্ত হন আবু তাহেরের দুই ছেলে ইউসুফ আলী ও মেহেদী হাসান। তাদের দুজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেয়ার পথে সকালে ইউসুফ এবং রাতে সাড়ে ৯টার দিকে মেহেদী মারা যান। রোববার সকালে মৃত্যুবরণ করা ইউসুফের স্ত্রী কোহিনুর বেগম ও তার একমাত্র ছেলে সন্তান আবির রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অপরদিকে একই গ্রামের সালমা (৩৫)ও মৃত্যুবরণ করা ইউসুফের শ্বশুর রবিউল (৫৭), শ্বাশুড়ী হালিমা বেগম (৪৮)সহ ৩ জন কে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নয়াবাড়ি গ্রামের পসিরুল ইসলাম বলেন, মৃত্যুবরণ করা আবু তাহের বাড়িতে দেবতার আছর বসিয়েছিলেন। দেবতাকে তুষ্ট করতে না পারায় তার ও তার পরিবারের ৫জনের মৃত্যু হয়েছে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফিরোজ জামান জুয়েল অজ্ঞাত রোগে ৫জনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রামের মানুষের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি হয়েছে এটা দেও-দেবতা দ্বারা সংঘটিত হয়েছে।
তবে এটা ভাইরাস জনিত রোগ। রোগ নিরাময়ে মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। এ ব্যাপারে গ্রামবাসিদের আতংক না হওয়ার পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, সদর উপজেলার রহিমান পুর ইউনিয়নে গত দুই বছরে অজ্ঞাত রোগে নারী ও পুরুষ সহ ১৫জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই গ্রামে প্রায় ৩ মাস আগে রাজধানী ঢাকা মহাখালী রোগত্বত্ত ও রোগ নির্ণয় এবং গবেষণা ইনস্টিটিউটের মেডিক্যাল টিম ঘুরে যান। কিন্তু আজ পর্যন্ত জানতে পারেনি ওই গ্রামের মানুষ কি রোগে তাদের স্বজনরা মারা গেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :