শিরোনাম
◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৪:৪৯ সকাল
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৪:৪৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

একজন নারীর দেয়া দুটি ছবি দেখে একাত্তর টিভিপ্রথম জানাতে সমর্থ হয় বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা

হোসেন সোহেল

 

আমি যাচ্ছিলাম চট্টগ্রাম। বিকেল পাঁচটায় রিজেন্ট প্লেনটি উড়ে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখন আমার পাশের আসনে বসেন এক নারী। এরপর কোমড়ে বেল্ট। প্লেনটি রানওয়েতে চূড়ান্ত বেগে ছুটে উড়ে যাবার সব প্রস্তুতি শেষ। নারীটিও শেষবার তার হ্যাজবেন্ডের সাথে কথা বলে নিচ্ছেন। কারণ নিয়ম অনুসারে মোবাইলটি অ্যারোপ্লেন মুডে রাখা বা বন্ধ করতে হবে। এদিকে রানওয়েতে দম বন্ধ করে থাকা প্লেনটি সজোড়ে টান দেবার অপেক্ষায়। নারীটি তখনও স্বল্পস্বরে কথা বলছেন তার স্বামীর সাথে। সবকিছু যখন ঠিকঠাক। তখন হঠাৎ যেন কিছু একটা বেঠিক হয়ে গেলো। কানে মোবাইলে রেখে নারীটি সজোড়ে বলে উঠে ‘বলো কি’। এরপর আমার চোখে খানিক তাকিয়ে থাকে। নিমিষেই তার চোখে ভয় ভর করে। হয়তো আমি তার পাশের আসনে তাই প্রথম নির্ভরতা আমার কাছে। আমিসহ পাশের কতোকজনের চোখও সজাগ হয় কোনো বিপদের আশঙ্কায়। তারাও তাকিয়ে রয় নারীটির চেহারায়। ওপাড়ের লাইনে থাকা মানুষটির সাথে কথা শেষ না করে এবার সে বলে উঠে ‘বাংলাদেশ বিমান হ্যাইজাক করেছে। সেকারণে বিমানটি চট্টগ্রামে জরুরি অবতরণ করেছে। গোলাগুলিও নাকি চলছে’। জানতে পারলাম নারীটির স্বামী তাকে নিতে চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টে রয়েছে। তিনি কোনো বিপদ বা গোলাগুলির ফাঁদে পড়েন কিনা এমন নানান চিন্তার ছাপ তার চেহারায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এদিকে দুরন্ত বেগে ছুটে চলা প্লেনটি ছুটবে বলে আর ছুটছে না। নারীটির প্রাপ্ত সংবাদ আর প্লেনে ছুটে না চলার সাথে হ্যাইজাকের বিষয়টি আরও সত্যি হয়ে উঠলো। তাকে অনুরোধ করি চট্টগ্রাম বন্দরে ছিনতায়ে অবতরণ করা বিমানটির বর্তমান অবস্থার কোনো ছবি দিতে পারবে কিনা। এরমধ্যে অবশ্য আমি সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি বুঝতে পারেন দেশের স্বার্থে ব্রেকিং সংবাদের জন্য তার স্বামীর পাঠানো ছবিটি কতো গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। নারীটির জন্য চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টে অপেক্ষায় থাকা মানুষটির নাম উজায়ের। তিনি খুব দ্রুত হোয়াটস অ্যাপে পরপর দুটি ছবি পাঠায় নারীটির মুঠোফোনে। এরপর আমি সেই ছবি পাঠিয়ে দিই অফিসে। ছিনতায়ের চেষ্টা করা সেই ছবি দেখে একাত্তর টিভি প্রথম জানাতে সমর্থ হয় বিমান হ্যাইজাকের বিষয়টি। যদিও উজায়ের সাহেব আরও কিছু ছবি ও কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ দিয়েছিলেন। এদিকে সব জেনে ঘুরে গেলো আমাদের বহন করা রিজেন্ট প্লেনটি। স্পিকারে বিমান হ্যাইজাকের কোনো সংবাদ না দিলেও জানালা দিয়ে দেখা যায় মহাখালির জ্যামে আটকে থাকা ট্রাক বাসের মতো রানওয়েতে লাইন ধরে পড়ে থাকা পাঁচটি অ্যারোপ্লেন। অফিসে বিমান ছিনতাইয়ের সংবাদ পৌছানোর পর ব্রেকিং স্ক্রলে যেতে থাকে। তারপর অফিসের সবার এরপর সব মিডিয়া নিউজ গেদারিং শুরু করলে আরও নানান সত্যের পাখা খুলতে শুরু করে। কে বা কারা, কি কারণে বিমান ছিনতাইয়ের কাজটি করতে চেয়েছিলো। অন্যদিকে আমি ভাবি মুঠোফোনের কারণে এমন একটি সংবাদ কতো দ্রুত টিভি স্ক্রিন বা মিডিয়াতে ছড়িয়ে যায়। সেই সাথে কতোভাবে সংবাদের সূত্রপাত হতে পারে। সেই নারীটি আমাকে বিশেষ সহযোগিতা না করতো তাহলে হয়তো দরজা আটকানো প্লেনে বসে সংবাদটি অফিসে জানাতে পারতাম না। সেকারণে মুঠোফোন এখন সকল সম্প্রচারের সবার ঊর্ধ্বে রয়েছে। সবার আগে সংবাদ, মুঠোফোনের সংবাদ। স্লোগানটি এমনই হতে যাচ্ছে আগামীর সংবাদ প্রেক্ষাপটে। শেষ কথা। রিজেন্ট থেকে নেমে এরপর ঢাকা বিমানবন্দরের উঠোনে চট্টগ্রাম ও ঢাকা ঘিরে নানা কথা। অথচ শেষ বেলায় নারীটির নাম জিজ্ঞাসা করা হয়নি, সে কারণে আমি খুব লজ্জিত।

লেখক : সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়