বণিক বার্তা থেকে:

রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ৬৭ জনের মধ্যে ৪৮ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ১৯টি মরদেহ শনাক্তকরণে এখন পর্যন্ত ৩৮ স্বজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এই মরদেহগুলোর মধ্যে ১৪টি মরদেহ শনাক্তকরণে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মতো সময় লাগবে। এছাড়া বাকি চারটি মরদেহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অন্তত তিন সপ্তাহ সময় লাগবে।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর মালীবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, ৬৭ টি মরদেহের মধ্যে ১৯ টি এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে ১৪টি মরদেহের মাসল স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে, যেগুলোর পরিচয় নিশ্চিত হতে সর্বোচ্চ ১৫ দিন সময় লাগবে। বাকি চারটি মরদেহের অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ায় সেগুলোর হাড়ের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো থেকে স্যাম্পল সংগ্রহের পর্যায়ে আসতেই অন্তত তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। এরপর ডিএনএ ম্যাচিংয়ের বিষয়টি আসবে।

অগ্নিকাণ্ড স্থলের বিষয়ে সিআইডি কোনো পরীক্ষা করবে কী না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, আমাদের মহাখালীতে কেমিক্যাল ল্যাব রয়েছে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত দফতর ফায়ার সার্ভিস যদি আমাদের সহায়তা চায়, তাহলে সেসব স্যাম্পল পরীক্ষায়ও সহায়তা করা হবে।

পরবর্তীতে কোনো পরিবার মরদেহের দাবি জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৬৭ টি মরদেহের স্যাম্পলই আমাদের কাছে রয়েছে এবং এটা যুগ যুগ ধরে সংরক্ষিত থাকবে। কোনো পরিবার যদি পরবর্তীতে দাবি জানায়, তাহলে তখন পরীক্ষা করা হবে, তবে এই চ্যালেঞ্জের বিষয়টি অবশ্যই আদালতের মধ্যদিয়ে আসতে হবে।

এর আগে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আক্তার তিনি বলেন, চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিচয় শনাক্তে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ শুরু করে।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আক্তার জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে ৬৭ টি মরদেহ থেকে ২৫৬ টি (রক্ত, টিস্যু, হাড় ও বাক্কাল সোয়াব) ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি একটি বিচ্ছিন্ন পৃথক হাতকে পৃথক আলামত হিসেবে গণ্য করে সেটি থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর ফলে মোট সংগৃহীত নমুনার পরিমান দাঁড়ায় ২৫৭টি।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, অশনাক্তদের পরিচয় নিশ্চিত হতে সিআইডির ফরেনসিক টিম ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছে। সিআইডির ডিএনএ ল্যাব টিম সর্বোচ্চ দ্রুততার সঙ্গে ডিএনএ পরীক্ষা করে অশনাক্তদের পরিচয় শনাক্তের কাজ শেষ করবে।

উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের চুড়িহাট্টাতে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে মারা যান ৬৭ জন। তাদের মধ্যে থেকে ৪৮ জনের মরদেহ শনাক্ত করার পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিদের মরদেহও শনাক্ত না হওয়ায় ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে।