স্পোর্টস ডেস্ক : অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে জাপানের নাওমি ওসাকার কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিলো পেত্রা কেভিতোভার। সেই ক্ষত শুকানোর আগে আবারও শিরোপা হারানোর ব্যথা পেতে হলো কেভিতোভাকে।
শনিবার বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের চার নম্বর তারকাকে পরাজিত করে দুবাই চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরলেন বেলিন্ডা বেনচিচ। সেই সঙ্গে ২০১৫ সালের পর প্রথম কোন ট্রফি জয়ের স্বাদ পেলেন সুইস টেনিসের এই প্রতিভাবান খেলোয়াড়।
শনিবার দুবাই চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বেলিন্ডা বেনচিচ ৬-৩, ১-৬ এবং ৬-২ গেমে পরাজিত করেন পেত্রা কেভিতোভাকে।
এই শিরোপা জয়ের পথে বেনচিচ হারিয়েছেন বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দশে থাকা চার খেলোয়াড়কে। তাও আবার টানা চার ম্যাচে বিশ্বের শীর্ষ চার তারকাকে পরাজিত করেছেন তিনি। ২১ বছরের এই সুইস তারকার তাই অনুভূতিটাও অবিশ্বাস্য! ম্যাচ শেষে বেনচিচ নিজের মুখেই বলেছেন, ‘এটা সত্যিই বিস্ময়কর। আমি শুধু চেয়েছিলাম যতটুকু সম্ভব পারি বলে আমার সেরা চাপটা প্রয়োগ করতে। শেষ পর্যন্ত পেরেছি। এই অনুভূতিটা অসাধারণ।’
দুবাই চ্যাম্পিয়নশিপে ৪৫তম বাছাই হিসেবে খেলতে নেমেছিলেন বেলিন্ডা বেনচিচ। কিন্তু পারফর্মেন্সের কাছে এসব পরিসংখ্যান যে শুধুই একটা সংখ্যা সেটাই প্রমাণ করে দিলেন সুইস তারকা। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই অসাধারণ খেলেছেন তিনি। এই পথে বেলিন্ডা বেনচিচ হারিয়েছেন রোমানিয়ার দুই নম্বর খেলোয়াড় সিমোনা হ্যালেপ, ইউক্রেনের ছয় নাম্বার খেলোয়াড় এলিনা সিতলিনা এবং বেলারুশের নয় নম্বর খেলোয়াড় এরিনা সাবালেঙ্কাকে। পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতায় ফাইনালে চার নম্বর তারকা পেত্রা কেভিতোভাকেও পরাজয়ের স্বাদ উপহার দিয়েছেন তিনি।
এদিকে পেত্রা কেভিতোভাও এই বছরের শুরু থেকে দুর্দান্ত খেলছেন। শুরুটা করেন সিডনি ইন্টারন্যাশনাল টেনিস টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হয়ে। এরপর চমকপ্রদ পারফর্মেন্স উপহার দেন মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফাইনালে হেরে যান তিনি। মেলবোর্নের ফাইনালে জাপানের নাওমি ওসাকার কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় কেভিতোভার।
এরপর সেন্ট পিটার্সবার্গ ওপেনেও ব্যর্থ হন ২৮ বছরের এই চেক তারকা। তবে দুবাই চ্যাম্পিয়নশিপে যেন স্বরূপে ফিরেন দুইবারের উইম্বলডন জয়ী এই তারকা খেলোয়াড়। দারুণ খেলে ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেন তিনি। যা নতুন মৌসুমে তার তৃতীয় ফাইনাল। তবে এবারও ফাইনালে হেরে গেলেন বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের এই চার নম্বর খেলোয়াড়। আরেকটি ফাইনালে হেরে চরম হতাশ চেক তারকা। তবে কেভিতোভা জানালেন, দুবাইয়ের চেয়ে মেলবোর্নে অনেক বেশি ভাল পারফর্ম করেছিলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে কেভিতোভা বলেন, ‘আমি মনে করি মেলবোর্নে অনেক ভাল পারফর্ম করেছিলাম। মেলবোর্ন আর দুবাইয়ে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য। সেখানে অনেক ভাল সার্ভ করেছিলাম। এখানে শুরু থেকেই আমার সার্ভ নিয়ে লড়াই করতে হয়েছে। আমার কাছে এটা খুব বাজে মনে হলো।’
বেনিচচ অবশ্য প্রতিপক্ষের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। যার কাছে হেরে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে বিদায় নিয়েছিলেন সেই কেভিতোভাকে হারিয়ে বেনচিচ বলেন, ‘কেভিতোভার কাছ থেকে আমি অনেক সম্মান পেয়েছি। এ কারণেই তিনি বিস্ময়কর খেলোয়াড়। সত্যিই সে অসাধারণ একজন চ্যাম্পিয়ন। ম্যাচের কোন সময়ই আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না যে, কেভিতোভাকে আমি হারাতে পারব। সত্যি বলতে এটাই আমার মনের মধ্যে ছিল। তাই তার বিপক্ষে ম্যাচ থেকে আমি পয়েন্ট বাই পয়েন্ট পেয়ে এগিয়ে যেতে চাইছিলাম। এরচেয়ে বেশি কিছু আমি ভাবতে পারিনি। তার বিপক্ষে যখন জিতলাম সেই অনুভূতিটা সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
কেভিতোভাকে হারিয়ে একটা ইতিহাসও গড়েছেন বেনচিচ। এযাবতকালের ইতিহাসে সুইজারল্যান্ডের মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে এই টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন তিনি। তার আগে এই রেকর্ড গড়েছিলেন মার্টিনা হিঙ্গিস ২০০১ সালে।
আপনার মতামত লিখুন :