শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৩:৫৫ রাত
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৩:৫৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক পদার্থের গোডাউন, দোকান বা ব্যবসা কোনোভাবেই অনুমোদনযোগ্য নয় : অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান

নাঈমা জাবীন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, আমরা চকবাজারের ঘটনায় দেখলাম একটি ভবনে আগুনের সূত্রপাত, কিন্তু ছড়িয়েছে ৫টি ভবনে। দাহ্য কেমিক্যাল আগুনের স্পর্শে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। সূত্র : সমকাল
তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলেছেন, বিভিন্ন কেমিক্যাল, বডি স্প্রে, প্লাস্টিক দ্রব্য প্রভৃতির কারণে আগুন ছড়িয়েছে। এসব কেমিক্যালে যখন আগুন লাগে তখন আশপাশের বাতাস হালকা হয়ে যায়। সেখানে ভারি এক ধরনের বাতাস প্রবাহিত হয়। সে ধোঁয়ার কারণেও মানুষের মৃত্যু হতে পারে। একইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এসব আগুন আমাদের ফায়ার সার্ভিসের ছিটানো পানিতে নেভে না। বরং পানির কারণে সেখানে এক ধরনের গ্যাস তৈরি হয়। ফলে বিদেশে যখন এ রকম পদার্থে আগুন লাগে তখন তারা আগুন নেভাতে ‘লিকুইড নাইট্রোজেন’ ব্যবহার করে। এটি কিছুটা ব্যয়বহুল বটে, কিন্তু কেমিক্যালের আগুন নেভাতে কার্যকর।
ফায়ার সার্ভিস যদি দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো, তাতে ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা নিশ্চয় কমতো। আগুন ছড়ানোর এটাও একটা কারণ যে, এখন শুষ্ক মৌসুম। তার ওপর পুরান ঢাকা ঘিঞ্জি এলাকা। এখানে এক বাসার জানালা খুললে আরেক বাসার জানালার সঙ্গে লেগে যায়। অত্যন্ত জনবহুল এলাকাটিতে জমির দাম আকাশচুম্বী। এখানকার মানুষ অন্য জায়গায় গিয়ে থাকতে চায় না। অধিকাংশ বাসাবাড়িও রাজউকের শর্তাবলী অনুসরণ করে তৈরি হয় না বলেই মনে হয়। রাস্তাঘাটে চলাচল করা দায়। এখানে রাজউকেরও একটা ভূমিকা আছে বলে আমি মনে করি।
তিনি আরো বলেন, আগুন লাগলেই পুরান ঢাকায় যে ট্রাজেডি হয়, তার স্থায়ী সমাধান একটাই- কেমিক্যালের কারবার স্থানান্তর করা। তা না হলে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে। আমাদের জীবন বাঁচাতে হলে পরিকল্পনা করে এ কাজটি করতে হবে। নিমতলী ট্র্যাজেডির পর আমরা প্রফেশনাল কেমিস্টদের সংগঠন থেকে জোর দাবি জানিয়েছিলাম- রাসায়নিক দ্রব্যাদি এখান থেকে সরানো হোক। আমরা এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দেন-দরবারও করেছিলাম। তাতে অবশ্য সরকারের টনক নড়ে। আমরা কেরানীগঞ্জে কেমিক্যাল পল্লি প্রতিষ্ঠার কথা জানি। সেখানে রাসায়নিক পদার্থের সব কারবার যেন দ্রুত স্থানান্তর হয়। আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক পদার্থের গোডাউন, দোকান বা ব্যবসা কোনোভাবেই অনুমোদনযোগ্য নয়। আমরা আশা করি, সরকার আরেকটা দুর্ঘটনা ঘটার আগেই স্থানান্তরের কাজটি দ্রুত সমাধা করবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়