শিরোনাম

প্রকাশিত : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৫:৩৮ সকাল
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৫:৩৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যত দ্রুত সম্ভব পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন সরিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ: সেতুমন্ত্রী

জিয়াউদ্দিন রাজু: দুর্ঘটনা এড়াতে সিলিন্ডার ব্যবহার বন্ধের ব্যপারে অচিরেই সিদ্ধান্ত আসছে বলে জানিয়েছেন সরকারের সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর শুক্রবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ওই অগ্নিকাণ্ডে আহতদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান ওবায়দুল কাদের।

সিলিন্ডার ব্যবহারের বিষয়ে সরকারের কোন নির্দেশনা আছে কিনা জানতে চাইলে ওবাযদুল কাদের বলেন, “সিলিন্ডার ব্যাপারে আমি আমার মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পরামর্শ দিয়েছি। বিআরটিএ এই বিষয়টিতে একটা সমাধানে পৌঁছার জন্য। আমি এটাও বলেছি সিলিন্ডার যেহেতু এত বিপদজনক অবস্থানে পৌঁছেছে সুতরাং এই সিলিন্ডার ব্যবহার না করাই ভালো।

“কাজেই এই সিলিন্ডার বন্ধ করার ব্যাপারে সচিবকে পরামর্শ দিয়েছি। এটা আমার মনে হয় অচিরেই একটা ব্যবস্থা হবে।”

সিলিন্ডার বন্ধ হলে এর কোন বিকল্প থাকছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “বিকল্প নিয়েই আমি ভাবতে বলেছি। বন্ধ করে বিকল্প কি করা যায়, সেটার একটা প্রপোজাল নিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলেছি। বিকল্প কি হবে সেটাও ভাবতে বলেছি “

কাল বিলম্ব না করে কেমিক্যাল ফেক্টরি বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “যেটা হয়ে গেছে এবং যারা চলে গেছে, ক্ষয়ক্ষতি যা হয়ে গেছে সেটা তো আর ফেরত দেওয়া যাবে না। এখন ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

“সেটা আরও আগে করা উচিত ছিল, করা হয় নি, চেষ্ট ছিল। কিন্তু এটা এমন একটা ঘনবসতি পূর্ণ ঘিঞ্জি এলাকা, এখানের কেমিক্যাল গোডাউন গুলো আবার ভেতরে ভেতরে এসে জায়গা নিয়ে ফেলেছে। এটা একটু মনিটরিং করলে হয় তো এড়ানো যেতো।

“যেটা ভুল এটা সংশোধন করে নতুন করে পথ চালার বিকল্প কিন্তু নেই। এখন প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব কেমিক্যাল গোডাউন গুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছে এবং মেয়র এ ব্যপারে পদক্ষেপ নিবেন, শুরু করেছেন। প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে বলেছেন।”

“আশা করি মেয়র সাহেব কাল বিলম্ব না করে পদক্ষেপ নিবেন। এখানে যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবার পরিজনের অনেকে সামর্থবান ব্যক্তি, টাকা পয়সা দিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে না। তার পরেও এ ব্যপারে সরকার মানবিক, আর্থিক সাহায্য পুনর্বাসন এ ব্যপারে যা যা করণীয় প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা নিয়েছেন।”

কবে নাগাদ কেমিক্যাল গোডাউন বন্ধ হতে পারে এবং কোন কোন কেমিক্যালের গোডাউন বন্ধ হচ্ছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “এখানে কেমিক্যলে যে ঘোডাইন গুলো আছে, অনতি বিলম্বে কেমিক্যলের গোডাউন গুলো সরিয়ে নিতে হবে। এখানে রাখা যাবে না। এ ব্যপারে কোন প্রকার গাফিলতি আরও বড় ক্ষতি ডেকে আনবে। দিন ক্ষণ এবাবে বলা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী যেখানে নির্দেশ দিয়েছেন সেখানে দিন ক্ষণের কি আছে “

“কোন কেমিক্যাল ক্ষতিকর কোনটা না সেটা মেয়র দেখবেন, ঝুঁকি পূর্ণ বা ক্ষতিকর কেমিক্যাল আছে বা অন্যান্য ক্ষতিকর কেমিক্যাল সেটা বিশেষজ্ঞরা জানেন, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে কোন প্রকার কাল বিলম্ব করা যাবে না।”

সরকার এই দুর্ঘটনার দায় এড়াতে পারে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুর কাদের বলেন, “সরকার নাকে তেল দিয়ে ঘুমায় না, সরকার প্রাথমিক পর্যােয়ে কিছু কিছু গোডাউন সরিয়ে নিয়েছে। পরবর্তীতে গোপনে এসে অনেকে ঝেকে বসেছে। এটার ক্লোজ মনিটরিংটা হলে হয়তোবা এমনটা হতো না, সেটা ঠিক আছে।

“এখন দায় দায়িত্ব; কোন কিছু দেশে ঘটলেই যেহেতু সরকার ক্ষমতায় আছে, দায় তো সরকার এড়াতে পারবে না। এটা তো সত্য কথা। কিন্তু জনসাধারণ যারা এই ব্যবসার সাথে জড়িত, তাদেরও সচেতনতার দরকার। কারণ তাদের এখানে জীবিকার চেয়ে জীবনের ঝুঁকি বেশি। সেখানে সচেতনতাও একটা ব্যপার ছিল, সতর্কতার ব্যাপার ছিলো।”

দর্শনার্থীদের ভীড় না করার পরামর্শ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমি একটা অনুরোধ করবো, যারা বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন, এখানে যদি দর্শনার্থী বাড়তে থাকে, তাহলে রোগীর জন্য খারাপ হবে। ডাক্তাররা বার বার বলছে আপনজনকে বাঁচাতে হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। দর্শনার্থী বাড়ানো যাবে না।”

কেমিক্যাল থেকে আগুন ছড়ায়নি শিল্পমন্ত্রীর এমন বক্তব্যকে কিভাবে নিচ্ছেন জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেন, “আমি পত্র পত্রিকার যা দেখেছি তিনি সেখানে বলেছেন, এখানে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত সিলিন্ডার থেকে। তিনি বলেননি যে কেমিক্যালের কারণে আগুন ছড়ায়নি। একথা তিনি বলেননি। তিনি বলেছেন সিলিন্ডার সূত্রপাত।”

সরকারের দায়িত্বহীনতায় চকবাজারে অগ্নিকাণ্ড বিএনপি মহাসচিবে এমন বক্তব্যের জবাব জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপির মহাসচিব কি বলছে সেটা না বলে আমি একটা কথা বলতে চাই, যে বিষয়টা হয়ে গেছে এই বিষযটা নিয়ে এই দুর্ঘটনা নিয়ে প্রত্যেকেরই দায় দায়িত্ব আছে, নাগরিক হিসেবে সবাইকে পজেটিভ কিছু করতে বলবো।

“রাজনৈতিক দল হিসেবে, এগুলো লোকের প্রানহানি মানুষের দুঃখ দুর্ঘটনাকে পুঁজি করে আমাদের কারও রাজনীতি করা উচিত না। এ বিষযটি আর যাই করুন রাজনীতিতে নিয়ে আসবেন না।”

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়