শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রকাশিত : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০২:১৮ রাত
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০২:১৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এর মাসে বাংলা ভাষার অবমাননা – বাংলা বর্ণমালা নাকি হিন্দুদের বর্ণমালা!

তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ : ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় দুটি সভায় ভাষণ দেন। ১৯ এবং ২১ মার্চের ওই দুই ভাষণেই তিনি বলেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা। তাঁর এই ঘোষণা ছিল এই অঞ্চলের মানুষের দাবির সম্পূর্ণ বিপরীতে। এই কারণেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ মুসলিম লীগের উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলে, আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে নতুন দল গঠিত হয়। এই দলটিই পরে আওয়ামী লীগ নাম ধারণ করে, আর এর নেতৃত্বে থাকেন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।

১৯৫০ এর ১১ মার্চ আব্দুল মাতিনকে আহবায়ক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভাষা আন্দোলন কমিটি গঠন করা হয়। ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারী পূর্ব বাংলার মুখ্য মন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ঢাকায় একটি সভায় আবার বলেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা। তাঁর এই ঘোষণার নেতিবাচক প্রভাব পরে ছাত্রদের মধ্যে। "রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই" - এই শ্লোগানে ফেটে পরে তারা। শুরু হয় আন্দোলন। ছাত্ররা ২১ ফেব্রুয়ারিতে হরতাল আহবান করে, এবং একই দিন শোভাযাত্রার ঘোষণা দেয়। সরকার একই দিনে ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারী করে। এর প্রতিবাদে ছাত্ররা ২০ ফেব্রুয়ারি সভা করে এবং পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল ১১টায় সভার মাধ্যমে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সভা থেকে ছাত্ররা মিছিল করে বের হতে গেলে পুলিশের গুলিতে জব্বার, বরকত, সালাম, রফিক সহ অনেকে মারা যায়। এই ছাত্ররা যেখানে মারা যায় সেখানেই গড়ে ওঠে শহীদ মিনার। এরপর থেকেই প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয়। এরপর ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। তখন থেকে দুনিয়া জুড়ে দিবসটি পালিত হয়। বাংলাদেশে এটি সরকারি ছুটির দিন।

ভাষা আন্দোলনের এই সংক্ষিপ্ত ইতিহাস থেকেই উপলব্ধি করা যায় বাংলাকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান দিতে কি অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করেছে এদেশের মানুষ। একারণেই আমাদের নতুন প্রজন্মের উচিত মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। কিন্তু এই প্রত্যাশার বিপরীতে কি দেখতে হচ্ছে আমাদেরকে?

এবছর এই ভাষার মাসে সারা দেশে এস এস সি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একুশ লাখ ছাত্র ছাত্রী এতে অংশ নিচ্ছে। এই পরীক্ষার যশোর বোর্ডের প্রশ্নপত্রে বাংলা বর্ণমালাকে হিন্দুদের বর্ণমালা হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। অগ্রহণযোগ্য এমন একটা ভয়ংকর ভুল কি করে এস এস সি পরীক্ষার বাংলা প্রশ্নপত্রে লেখা হলো, এর জন্য কে বা কারা দায়ী- সেটা অবশ্যই চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা দরকার। কারণ এমন একটি ভুলের কারণে সারা দেশের কোমলমতি ছেলে মেয়েরা যে বিভ্রান্তিকর তথ্য পেল, সেটা আমাদের সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘরষিক। এই প্রশ্নপত্র যারা তৈরি করেছে, যারা সম্পাদনা করেছে, তারা আসলে পাকিস্তানের প্রতি তাদের আনুগত্যকেই যেন প্রকাশ করেছে। সাংবাদিক, গবেষক, এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক আফসান চোধুরির মতে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানকে সমর্থন করা কোন রাজনৈতিক মতাদর্শ কেবল নয়, সেটা প্রকারন্তরে গণহত্যাকেও সমর্থন করার নামান্তর। আমরা আশা করবো, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

(লেখক- ডেইলি আওয়ার টাইমের নির্বাহী সম্পাদক। )

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়