ডেস্ক রিপোর্ট : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রীদের ডেকে নিয়ে র্যাগিংয়ের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। র্যাগিংয়ের নামে ওই ছাত্রীদের সিনিয়র ভাইদের সঙ্গে প্রেমের জন্য বলপ্রয়োগ করা হয়। এতে রাজি না হওয়ায় তাদের নাজেহাল করা হয়। একপর্যায়ে ওই ছাত্রীদের মুখে সিগারেটের ধোয়া ছেড়ে দেয়া হয়। পরে আবাও তাদের দ্বিতীয় দফায় নাজেহাল করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য প্রতিষ্ঠিত সমাজকল্যাণ বিভাগে এমন ভয়ংকর র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে র্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িত ওই বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এঘটনায় অধিকতর তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা সবাই বিভাগের প্রথম ব্যাচের (২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে এক ছাত্রীও রয়েছে। একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের তিন ছাত্রীকে র্যাগ দেওয়ার অভিযোগে তাদেরকে এ শাস্তি দেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই তিন ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সাময়িক বহিষ্কার করে বলে রেজিস্ট্রার দফতর থেকে জানানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী ৩ ছাত্রীর অভিযোগ, সোমবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান (রোল: ১৭২৮০০৩), মেহেদী হাসান রোমান (রোল:১৭২৮০১৪), সুমাইয়া খাতুন (রোল:১৭২৮০৭৪), আহমেদ যুবায়ের সিদ্দিকী (রোল:১৭২৮০২০) এবং মুহিদ হাসান (রোল:১৭২৮০১০) তাদের ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় তারা তাদের মুখে সিগারেটের ধোঁয়া দেয় এবং বিভাগের সিনিয়রের সাথে প্রেম করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এ সময় জুনিয়ররা সম্পর্কে জড়াতে অস্বীকৃতি জানায়। পরদিন মঙ্গলবার অনুষদ ভবনের ১৩১নং কক্ষে রিহার্সেলের সময় তাদের আবারও র্যাগিং করা হয়।
ওই ছাত্রীরা আরো অভিযোগ করেন, সিনিয়র ছাত্ররা তাদের বিভিন্ন অশ্লীল কথাবার্তা এবং অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে দেখানোর কথা বলেন। নাচতে ও গান গাইতে বলা হয়।
ওই ঘটনা ভুক্তভোগী ছাত্রীরা তাদের বিভাগীয় শিক্ষকদের জানান এবং পাঁচ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে বিভাগীয় সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের শাস্তি চেয়ে সুপারিশ করেন। সুপারিশের প্রেক্ষিতে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক জরুরী সভায় অভিযুক্ত ওই পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিস্কার করেন।
এদিকে, ঘটনার তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নাসিম বানুকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন এবং ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান। কমিটিকে আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম
আপনার মতামত লিখুন :