মোহাম্মদ মাসুদ : সেভ দ্য চিলড্রেন-এর পরিচালক (শিশু সুরক্ষা ও শিশু অধিকার বিষয়ক সুশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, বিভিন্ন খন্ডিত গবেষণা থেকে ধারণা করা হয় বাংলাদেশে পথশিশুর সংখ্যা আড়াই লাখ থেকে চার লাখ হতে পারে। শিশুরা যত ধরনের ঝুঁকির মধ্যে থাকতে পারে, তার সবই আছে পথশিশুদের। বিশেষ করে তাদের অধিকারের জায়গা থেকে, বঞ্চনার জায়গা থেকে, সব ধরনের ঝুঁকিতে থাকা শিশুরাই পথশিশু। এটাই আমরা মনে করি।
বুধবার ডয়চে ভেলেকে তিনি আরো বলেন, একটা শিশুর সবার আগে বাসস্থানের অধিকার রয়েছে, নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে, খাদ্যের অধিকার রয়েছে, শিক্ষার অধিকার রয়েছে। এসব কিছুই কিন্তু পথশিশুদের জন্য প্রযোজ্য। এর কোনো অধিকারই তারা পাচ্ছে না। তার ওপর শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের ঝুঁকি থাকছে রাস্তা-ঘাটে। তাদের ওপর অর্থনৈতিক নিপীড়ন থাকছে এবং এর চেয়েও বেশি ঝুঁকি হচ্ছে মাদক এবং নানাধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড শিশুদের জড়ানো । ফলে সার্বিকভাবেই ভয়াবহ থেকেও ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে পথশিশুরা রয়েছে।
তিনি বলেন, ২০৩০ না ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশুশ্রম বন্ধ করার লক্ষ্য রয়েছে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রায়। সেই লক্ষ্যমাত্রায় সরকার অনেকখানি কাঠামোগতভাবে এগিয়েছে। কাঠামোগত বলতে আমরা যেটা বুঝি বা বলছি যে, এটা করার জন্য সরকারের যে ধরনের আইন-কানুন, পলিসি দরকার, যেমন ধরেন আমাদের একটা জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতিমালা রয়েছে। সেটা ২০১০ সালে হয়েছে। সেটির আলোকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত একটি কর্মপরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি জানান, আমরা যদি বলি, ন্যাশনাল প্ল্যান অফ অ্যাকশন রয়েছে। জাতীয় পরিকল্পনা ২০২১ সাল পর্যন্ত এবং সম্প্রতি সরকারি অর্থায়নে একটি অর্থনীতি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম থেকে সরিয়ে নিয়ে আসার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আসলে কাঠামোগতভাবে যেভাবে এগোচ্ছে, সেটুকু অনেক আশা জাগায়। কিন্তু শিশুশ্রম নিরসনে একটা জায়গায় মনে হয় আমরা কম গুরুত্ব দিচ্ছি। সেটি হচ্ছে, আমরা যেটা বলে থাকি সর্বশেষ জরিপে ১২ লাখ আশি হাজার শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সাথে জড়িত। আমরা কেবল তাদের ওখানে নজর দিচ্ছি যে, এই বারো লাখ আশি হাজার শিশুকে সরিয়ে নিরাপদে নিয়ে যেতে পারি কিনা। কিন্তু আমাদের এটা মাথায় রাখতে হবে, নতুন করে যেন কোনো শিশু সেই জায়গায় না আসে।