কালাম আঝাদ: নানা কথার মাঝেও দেশে তফসিলি ব্যাংকের সংখ্যা এক রকম পাল্লা দিয়েই বাড়ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানও। এমন অবস্থায় প্রতি বছর কর্মসংস্থানেও বড় ভূমিকা রাখছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সার্বিকভাবে এসব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বিষয়ে আরও কঠোর হতে যাচ্ছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে- প্রয়োজনে সংস্থাটির কোনো একটি বিভাগ এ বিষয়ে তদারকি করবে। প্রয়োজনে খোলা হতে পারে নতুন কোনো বিভাগও। এমন অবস্থায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেতে চাকরিপ্রার্থীদের একাডেমিক বিষয়ের সঙ্গে অর্থনীতি বিষয়েও জ্ঞান রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোনোভাবেই যাতে অনিয়ম-দুর্নীতি না হয়, সেজন্য নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরও বিভাগ বাড়ানো হবে।
সূত্র জানায়, প্রতিবছর কর্মসংস্থানের একটি বড় অংশ পূরণ করে থাকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এর পরিমাণ দিনদিনই বাড়ছে। কারণ ইতোমধ্যে বেসিক ও বিডিবিএলকে (বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড) বাণিজ্যিক ব্যাংক করা হয়েছে। মূল উদ্দেশ- ঋণ বিতরণের খাত বাড়ানো ও ব্যবসা বৃদ্ধি। একইসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে করা হয়েছে তফসিলি ব্যাংক। ২০১৩ সালে নতুন নয়টি ব্যাংকের কার্যক্রম শুরুর পর বাজারে এসেছে সীমান্ত কল্যাণ ব্যাংকও। একইসঙ্গে শিগগির কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে নতুন আরও তিন ব্যাংক। একই রকম অবস্থা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোরও। সার্বিকভাবে ১৯৭১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত দেশে যেখানে তফসিলি ব্যাংকের সংখ্যা ছিল ৪৭টি। সেখানে এখন কার্যক্রম চলা তফসিলি ব্যাংকের সংখ্যা ৫৮টি। আরও তিনটি ব্যাংক কার্যক্রম শুরু করলে এর পরিমাণ হবে ৬১টি।
জানা গেছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগের ব্যাপারে ধীরে ধীরে কঠোর হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংখ।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো করার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যেকোনো প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো করতে হলে এর আগের প্রশ্নগুলো দেখে ধাঁচটা বুঝতে হবে। তারপর সে অনুযায়ী প্রস্তুতি রাখতে হবে। তিনি বলেন, লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে ভাইভায় (মৌখিক পরীক্ষা) ভালো করতে হলে কনফিডেন্ট হতে হবে সবার আগে।
এ বিষয়ে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও বর্তমানে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ইন্ডিপেনডেন্ট ডিরেক্টর শফিকুর রহমান বলেন, পরীক্ষার আগের রাতে একজন পরীক্ষার্থী রিলাক্সড মুডে থাকবে। বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান ও গণিতের বাইরে অর্থনীতি বিষয়ের মৌলিক জ্ঞান থাকাটা জরুরি। একাডেমিকে ভালো ফলাফল মৌখিক পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে কনফেডিন্টলি ভুল উত্তর দিয়েও ভাইভায় ভালো করা যায়।’
সূত্র জানায়, সিএজি’র নিরীক্ষায় ব্যাপকহারে নিয়োগ অনিয়ম ধরা পড়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকে। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেশকিছু ব্যাংকের প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে সম্প্রতি এসব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানা গেছে, বর্তমানে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকসহ অন্য ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষারও দেখভাল করে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এক্ষেত্রে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তৃতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানকে (থার্ড পার্টি) দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন :