হাসান শান্তনু : মুক্তিযুদ্ধ পরের বাংলাদেশে হলুদ সাংবাদিকতার জনক দৈনিক গণকণ্ঠের সম্পাদক, কবি আল মাহমুদ। একমাত্র তিনিই নিজের সম্পাদিত পত্রিকায় ছেপেছিলেন রাষ্ট্রপতির ছেলের ব্যাংক ডাকাতির ভয়ানক মিথ্যার প্রতিবেদনটি। তবু নব্বইয়ের দশকের আগে তার স্বাভাবিক মৃত্যু হলে তিনি বাংলা সাহিত্যের মৌলিক কবিদের একজনই থাকতেন। ব্যক্তি কবির আকাক্সক্ষা হয়তো ছিলো অজ¯্র বছর বেঁচে থাকার।
বেঁচে থাকা বা পরজন্মের সুযোগ থাকলে বারবার নারীর কাছে ফিরে যাওয়ার আকুতি নানা বক্তব্যে তিনি ব্যক্তও করেছিলেন। সত্য হচ্ছে নব্বইয়ের দশক থেকে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত সময়টা ছিলো আল মাহমুদের শুধু নষ্ট হওয়ার। নিজের দুর্দান্ত, অনন্য কবিতা, গল্পগুলো তিনি নষ্ট হওয়ার আগেই লিখেছিলেন।
এক সময়ের সমাজতান্ত্রিক আদর্শে বিশ^াসী কবি আল মাহমুদ নব্বইয়ের পর থেকে হয়ে উঠতে থাকেন ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর ‘রাজনৈতিক কবি’। আরো স্পষ্ট করে বললে, ঢাকার মগবাজারের দল জামায়াতের ‘আবাসিক কবি’। পরিণত জীবনে বা একটা বিশেষ বয়স থেকে তিনি বনে যান জামায়াতিদের ‘আবাসিক কবি’। সব অর্থে জামায়াতিদের ‘আবাসিক কবি’ হতে তিনি একপর্যায়ে মগবাজারের স্থায়ী বাসিন্দার তালিকায়ও নাম লেখান। ‘সোনালী কাবিনের’ শক্তিমত্তার কবি কানা মাহমুদ একটা সময় এসে জামায়াতিদের সঙ্গে ভয়ানক ‘কাবিন’ করেন।
আল মাহমুদ যৌবনে বলতেন, ‘ধর্ম একদিন ওঠে যাবে, ধর্মের জায়গা দখলে নিবে কবিতা।’ নামাজকে বিদ্রুপের চোখে বিশ্লেষণ করে কবিতাও লেখেন তিনি। সেই আল মাহমুদ যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠীর ‘রাজনৈতিক ইসলামের মহিমা’ নিজের ‘ডাহুকী’ বা অন্য লেখায় শুধু বর্ণনাই করেননি, ব্যক্তিজীবনেও নাকি তিনি সেসবের অনুকরণ করতেন। তিনি ‘শুক্রবারে মৃত্যুর খায়েশ’ ব্যক্ত করেছিলেন! কী নির্লজ্জ ধর্মান্ধতা। অন্যের কলেমা পড়া বউয়ের প্রেমিকখ্যাত রাষ্ট্রপতি হো. মু এরশাদ ক্ষমতা দখলের পর ‘রাষ্ট্রধর্ম’ নাজিলের পাশাপাশি সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবারে করেন। এরপর থেকে শুক্রবারের রাজনৈতিক মাহাত্ম্য বাড়তে থাকে। অথচ মুসলমান জনসংখ্যায় এগিয়ে থাকা পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবারে নয়। ইসলাম ধর্মের নবীর মৃত্যুও শুক্রবারে হয়নি। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :