শিরোনাম
◈ আবদুল্লাহ জাহাজে খাবার থাকলেও সংকট বিশুদ্ধ পানির ◈ কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম, বেড়েছে আলুর ◈ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় কোনো ভাষা জানেন না, সময় এসেছে তৃতীয় ভাষার ◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র

প্রকাশিত : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৩:৫৪ রাত
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৩:৫৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রফেসর ড. এম শাহ্ নওয়াজ আলি বললেন, শহীদ শামসুজ্জোহা শিক্ষকসমাজের জন্য আদর্শ

আমিরুল ইসলাম : আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি শহীদ শাসমুজ্জোহার প্রয়ান দিবস। সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা ছিলেন একজন বাঙালি শিক্ষাবিদ এবং অধ্যাপক। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক (তৎকালীন রিডার) ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্ব পালনকালে ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হন। মহান এই শিক্ষকের সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. এম শাহ্ নওয়াজ আলি বলেছেন, ছাত্রের জন্য শিক্ষকের আত্মবলিদান শিক্ষক সমাজ তথা বিদ্বান মানুষের মধ্যে একেবারে বিরল।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, শহীদ শামসুজ্জোহা ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি খান সেনাদের হাতে খুন হন। তখন আমি রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী। আমাদের শিক্ষকদের মধ্যে স্বাধীনতার ওই সময় তিনি স্বাধীনতার আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য তার রক্ত ঝরিয়েছেন। সেই কারণে তিনি চিরকাল স্মরণীয় এবং বরণীয় শিক্ষক হিসেবে। আজকের সমাজে ছাত্রের জন্য বা ছাত্র সমাজের জন্য কোনো শিক্ষক এ রকম রক্ত ঝরাবেন এ রকম চিন্তা করাও অসম্ভব। কিন্তু তিনি এটা করেছিলেন। সেই সময়ের সমাজ ব্যবস্থায় পাকিস্তানি শাসকদের অত্যাচার,অনাচারের বিরুদ্ধে আমাদের সাধারণ জনগণের যে বিক্ষোভ ছিলো ও বিক্ষুব্ধ পরিবেশ ছিলো, সেইটাকে তিনি ধারণ করে ছাত্রদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে খান সেনাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন,‘তার ছাত্রের বুকে গুলি লাগার আগে যেন তার বুকে গুলি লাগে’। সেটা তিনি প্রমাণ করে গেছেন। আজকের সমাজ ব্যবস্থায়, আজকের বাজার অর্থনীতির যুগে একজন শিক্ষকের এ রকম আত্মবলিদান আর পাওয়া যাবে না। তিনি শিক্ষক সমাজের জন্য আদর্শ। তিনি ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে যে আত্মবলিদান করেছেন, জাতি চিরকাল সেটা মনে রাখবে। আমারও শিক্ষক হিসেবে এ রকম একজন মানুষকে দেখার সুযোগ ছিলো বলে নিজেকে আমি ধন্য মনে করি। আর আজকে আমাদের যে আর্থ-সামাজিক অবস্থান। আমাদের যে ভোগী সমাজ ব্যবস্থা, সে সমাজ ব্যবস্থা থেকে শিক্ষকদের ফিরে আসার সময় হয়েছে। বাংলাদেশে তথা পুরো পৃথিবীতে শিক্ষকদের একটা ভূমিকা আছে। চিরকাল তারা ন্যায়ের পথে থাকে। ন্যায়কে ধারণ করে, সেই ন্যায়ের ধারণা থেকে আমাদের শহীদ শামসুজ্জোহাকে স্মরণ করা দরকার। আমাদের ছাত্র সমাজকে মনে রাখা দরকার একজন শিক্ষক ছাত্রদের বাঁচাবার জন্য তার রক্ত দিয়েছেন। আজকের সমাজ শুধু ভোগ-বিলাসে বিশ^াসী। শহীদ শামসুজ্জোহার মতো একজন শিক্ষকের খুব প্রয়োজন আমাদের সমাজে। আমাদের দেশের প্রতিটি মানুষের মধ্যে তার চেতনা, তার নাম যুগ যুগ ধরে জ¦ল জ¦ল করবে। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এবং শিক্ষক হিসেবে আজকের দিনে ১৮ ফ্রেব্রুয়ারিকে স্মরণ করে আমি তার আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি এবং যুগে যুগে তার নাম স্মরণীয় বরণীয় হয়ে থাকবে বাংলার আকাশে-বাতাসে। আমাদের ভোগ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, ত্যাগের মানসিকতা তৈরি করতে হবে। এটা আমাদরে দেশের মানুষদের বিশেষ করে শিক্ষক শ্রেণির ভাবার সময় এসেছে। বাংলাদেশ এখন উন্নতির একটা পর্যায়ে চলে গেছে, এই সময়ে এই মানুষগুলোকে স্মরণ করা দরকার এই কারণে যে, এখন আমরা যে মুক্ত ও স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি, যে সমস্ত শিক্ষকের রক্তকে ধারণ করে বাংলাদেশের স¦াধীনতা অর্জিত হয়েছে তাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে হবে। আমাদের ন্যায়ের পথে থাকতে হবে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে মহান শিক্ষকদের সত্য ও শাশ^ত বাণীকে রক্ষা করতে হবে। তবেই আমরা সঠিক বাঙালি হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো বলে আমি বিশ^াস করি। তিনি আরও বলেন,বর্তমান যুগে ছাত্রদের জন্য, শিক্ষার জন্য শিক্ষকরা কী করছেন? এই আত্মজিজ্ঞাসাটা সবার মধ্যে হওয়া উচিত। শহীদ শামসুজ্জোহা একজন ত্যাগী, বিচক্ষণ ও প্রগতিবাদী এবং প-িত মানুষ ছিলেন। এই মানুষটি তার পরিবার-পরিজনের কথা বাদ দিয়ে তার জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। একেবারেই তার সম্ভাবনাময় সময়ে। আজকের সমাজে শিক্ষক থেকে আরম্ভ করে সব বিদ্বান মানুষরা কী এ বিষয়গুলোকে কখনো ধারণ করি? কখনো মনে রাখি? জীবন তো একটাই। তিনি কিন্তু সে জীবনটা দিয়ে গেছেন দেশের মানুষের জন্য, দেশের স্বাধীনতার জন্য। আজকের সমাজে যারা জ্ঞান লাভ করেছে, যারা জ্ঞান ধারণ করে, তাদের এ বিষয়টিকে নতুনভাবে পর্যবেক্ষণ করা দরকার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়