শিরোনাম
◈ অবশেষে মার্কিন সিনেটে সাড়ে ৯ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ পাস ◈ কক্সবাজারে ঈদ স্পেশাল ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল চলাচল বন্ধ ◈ ইউক্রেনকে এবার ব্রিটেননের ৬১৭ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা ◈ থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ◈ জিবুতি উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবিতে ৩৩ জনের মৃত্যু ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ এফডিসিতে মারামারির ঘটনায় ডিপজল-মিশার দুঃখ প্রকাশ ◈ প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আয়ে ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ◈ প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাত চেয়ারম্যানসহ ২৬ জন নির্বাচিত ◈ বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ আহ্বান রাষ্ট্রপতির

প্রকাশিত : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৩:৩৯ রাত
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৩:৩৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নামাজে মনোযোগী হওয়ার কিছু উপায়

নারগিস সুলতানা নাহিদা : ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি হলো নামাজ। নামাজ বান্দাকে আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে সাহায্য করে। নামাজের মাধ্যমে পরিপূর্ণতা আসে। নামাজ বান্দাকে সুন্দর পথ দেখায়। সুস্থ থাকতে বান্দাকে সাহায্য করে। হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, বান্দা যখন সিজদায় যায় তখন সে আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় হয়। কোরআনে প্রায় ৮২বার আল্লাহ নামাজ আদায় করার কথা বলেছেন।

হাদিসে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) অনেক তাগিদ দিয়েছেন নামাজ আদায়ের ব্যাপারে। নামাজ হলো এমন এক ইবাদত যা মুসলিম ও অমুসলিম এর মাঝে পার্থক্য করে দেয়। নামাজ মানুষকে সবপ্রকার পাপ কর্ম থেকে দূরে রাখে। কিন্তু নামাজ আদায় করতে গিয়ে আমাদের মধ্যে অনেকেরই মনোযোগ থাকে না। কেন নামাজে মন থাকে না তার বাস্তবসম্মত কিছু কারণ তুলে ধরা হলো। এসবের কারণ হতে পারে নিচের যেকোনো একটি বা একাধিক বিষয়েঃ

সালাতকে নিছক ধর্মীয় অনুষ্ঠান মনে করা : কেবলমাত্র কিছু মুখস্ত সূরা, দোয়া, মন্ত্রের মত পাঠ করা। তারপর রুকু করা, সিজদাহ করা- এভাবে নামাজ শেষ করা। পুরো বিষয়টি কেমন যেন একটা যান্ত্রিকতা ও অনুষ্ঠানিকতা। সালাতের সাথে অন্তরের একটা যে যোগসাজশ আছে তা অনেকেরই উপলব্ধি হয় না।

সালাতকে যথাযথ মূল্যায়ন না করা : দৈনন্দিন আর পাঁচটা কাজের মত মনে করা। অথচ দুনিয়া ও আখেরাতে কামিয়াবির একমাত্র উপায় হচ্ছে নামাজ ।

পাপ কাজে ডুবে থাকা : নিয়মিত নামাজ আদায় করা সত্তে¡ও অনেক মুসল্লি আছেন যারা প্রকাশ্য ও নিয়মিত পাপে ডুবে থাকেন। মানুষ স্বভাবত যেসব করে তা তার সবসময় মনে থাকে। নামাজে সিনেমার কোনো অংশ মনে আশাটা অসম্ভব নয়। অনেকে আবার নাটক, সিনেমার মাঝে বিরতি বা অ্যাড দেয়ার সময় খুব তাড়াতাড়ি করে নামাজ সেরে ফেলেন।

অর্থ না বোঝা : নামাজ যেহেতু পুরোটাই আরবি ভাষায় তাই এর অর্থ আমরা সহজেই বুঝি না। অর্থ না বোঝার ফলে আমাদের মুখস্ত সুরাগুলো মুখে বলতে থাকি কিন্তু অলস অন্তর অন্য চিন্তায় ব্যস্ত থাকে। আর যদি বোঝা যেত তাহলে অন্তর সেটা নিয়ে ভাবতো।

আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার বেশি মূল্যায়ন করা : নামাজের ওয়াক্তে নামাজকে ভুলে অন্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকা। বিশেষ করে উপার্জনের ব্যাপারে ইসলামের তোয়াক্কা না করা।

সালাতের হুকুম-আহকাম ঠিকভাবে অনুসরণ না করা : রাসূলে করিম (সা.) যেভাবে নামাজের নিয়ম দেখিয়েছেন তা সঠিকভাবে না মানা।

শয়তানের ধোঁকা : যেহেতু সালাত সবচেয়ে বড় ইবাদত তাই এতে শয়তানের ধোঁকাও বেশি। শয়তান তার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে বান্দার সালাত নষ্টের কাজে নেমে পড়ে। সালাতে এদিক-ওদিক তাকানো এটাও শয়তানের প্রভাবের ফল।

নিয়মিত কোরআন-হাদিস পাঠ না করা : কোরআন-হাদিস নিয়মিত পাঠ না করলে শয়তান বান্দাকে অন্যদিকে ধাবিত করে।

নামাজে মনোযোগী হবার কিছু উপায় : আসুন জেনে নেই নামাজে মনোযোগী হবার কার্যকরী ৭টি উপায়-
১) অর্থের প্রতি খেয়াল রেখে সবকিছু করা। অন্তত সালাতে যে সূরাগুলো পড়া হয় এবং রুকু, সিজদা ও বসা অবস্থায় তাসবীহ ও দোয়াগুলোর অর্থ শব্দের প্রতি খেয়াল রেখে পড়া।

২) তাকবীরে তাহরিমা তথা আল্লাহু আকবার বলে হাত বাঁধার আগে চিন্তা করা; আমি কার সামনে দাঁড়াচ্ছি। যার সামনে দাঁড়াচ্ছি তিনি কতো বড়, কতো মহান। দুনিয়ার একজন সামান্য প্রেসিডেন্টের সামনে যদি আমি দাঁড়াই তবে যেরকম মনোযোগ সহকারে স্থির হয়ে দাঁড়াতাম, তাহলে সমগ্র সৃষ্টিজগতের মালিকের সামনে দাঁড়ালে আমার আচরণ কেমন হওয়া দরকার?

৩) তাজভীদ সহকারে ধীরে ধীরে কুরআন তেলাওয়াত করা ও রুকু সিজদার তাসবীহ ভক্তিসহকারে আদায় করা।
৪) হাদিসে এসেছে, বান্দা যখন সিজদাহ অবস্থায় থাকে তখন সে মহান আল্লাহর খুব নিকটবর্তী হয়ে যায়। তাই সিজদাহ অবস্থায় আমাদের মনে এই ধ্যান আসা উচিত যে আমার দেহের সবচেয়ে সম্মানের অঙ্গ মাথাকে আমার মালিকের সামনে লুটিয়ে দিলাম শুধুমাত্র তারই অনুগ্রহ পাওয়ার আশায়।

৫) এই ধ্যান করা যে আমার মনের অবস্থা একমাত্র আল্লাহই জানেন। রিয়া তথা লোকদেখানোর চিন্তা মাথায় আসার সাথে সাথেই ঝেড়ে ফেলা, শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই সালাতকে সুন্দর করার চেষ্টা করা। আর কাল হাশরের ময়দানে এই সালাতের প্রতিদানের আশা করা, সাথে সাথে নিজের গুনাহ ও দুর্বলতার কারণে সালাত অগ্রাহ্য হওয়ার আশঙ্কাও রাখা। ৬) নড়াচড়া করা, গা চুলকানো, মশা তাড়ানো, টুপি ঠিক করা, জামা টেনে টুনে ঠিক করা ইত্যাদি অযথা কাজ পরিহার করার চেষ্টা করা। ৭) মনে মনে চিন্তা করা যে আমি পুলসিরাতের উপর দাঁড়িয়ে আছি, আমার ডানে জান্নাত, বামে জাহান্নাম, মাথার উপর গুনাহের বোঝা, পেছনে মালাকুল মাউত জান কবজের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। মনে করা যে এটিই আমার জীবনের শেষ সালাত, এরপর হয়তো আমার আর সালাত আদায়ের সুযোগ হবে না।

মহান আল্লাহ আমাদেরকে মনোযোগী হয়ে সালাত আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়