হ্যাপি আক্তার : চাহিদা তীব্র হওয়ায় মাত্র ১ বছরের ব্যবধানে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ। তবে আমদানি ও বিদেশি ঋণের দায় মেটাতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো। ফলে ডলার নিয়ে চলছে কাড়াকাড়ি। বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্মিলিতভাবে কোনো উপায় বের না করলে ডলার নিয়ে সংকট আরও বাড়বে। যা বাড়িয়ে দিতে পারে বৈদেশিক বাণিজ্যের খরচ। চ্যানেল ২৪।
মাত্র এক বছর আগে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকের এক ডলারের কিনতে খরচ হলো ৭৮ টাকা ৯০ পয়সা। আর গত ১২ ফেব্রæয়ারি তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ টাকা ৫ পয়সা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে ডলারের তুলনায় টাকার মান কমেছে ৭ শতাংশের বেশি।
এর অন্যতম কারণ বিদেশি ঋণের দায় ও আমদানি খরচ মেটানোর তো পর্যাপ্ত ডলার নেই ব্যাংকগুলোর হাতে। কারণ ব্যাংকের লাগামহীন অফশোর ইউনিটের মাধ্যমে বিদেশি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকারও বেশি। আর চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধ্বে (জুলাই-ডিসেম্বর) আমদানি ব্যয় বেড়েছে ২৯ শতাংশ। অথচ প্রাপ্তির খাতায় রপ্তানি আয় ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং রেমিটেন্স ১২ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।
ডলারের সংকট এতোটাই তীব্র যে ইতিমধ্যেই আমদানি ঋণপত্রের দায় কিংবা বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে গিয়ে ব্যাংকগুলোর মধ্যে শুরু হয়েছে অসম প্রতিযোগিতা। এক ব্যাংকের গ্রাহকের রপ্তানি বিল বেশি ম‚ল্যে হাঁকিয়ে নিচ্ছে অন্য ব্যাংক। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক এই অভিযোগে বেশ কিছু ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। ব্যাংকাররা বলছেন, এটা স্থায়ী কোনো সমাধান দিতে পারছেন না।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই অবস্থা নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাফেদার সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে দ্রæত। তা না হলে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে।
এবিবি ব্যাংকের সাবেক সভাপতি মো. নূরুল আমিন বলেছেন, প্ল্যান করা ছাড়া যিনি এলসি করেছেন, তার ডলারের বিল পরিশোধ করা অতি জরুরি। সময় চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হয়তো ততোটা পান না, এটি হতেই পারে। কেন না যিনি এলসি করেছেন তিনি টাকা কোড করেননি। এই বিষয়ের কারণে অন্য ব্যাংক থেকে ডলার কিনতে হয়। সবমিলিয়ে একটি দুরদর্শিতার অভাব রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে বোঝানোর সক্ষমতা থাকতে হবে। তবে লাখ টাকার এলসি করবেন, তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে সবসময় দেদারসে ডলার দেয়া সম্ভব না।
অস্থিতিশীলতার জন্য চিহ্নিত ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা উচিৎ বলেও মনে করেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :