আর রাজী : আমি কবিতা বুঝি না। কিন্তু কিছু কিছু কবিতা আমাকে বোঝে। বোঝে বলেই একেবারে অন্তরের গভীরে কৌশলে স্থির জায়গা করে নিতে পারে। এভাবেই জায়গা করে নিয়েছে আল মাহমুদের অনেকগুলো কবিতা।
যখন প্রথম শ্রেণিতে পড়ি, তখন প্রথম আল মাহমুদের কবিতার সাথে পরিচয়। ‘সোনালী কাবিন’ কবিতা বেশ একটু উচ্চস্বরে পড়ছিলেন আমার ছোটখালা। সুধাময় এক শব্দ¯্রােত আমার কানে বয়ে চলছিলো। হঠাৎ আমাকে উদ্দেশ্য করে পাশে থাকা নানার সরস এক মন্তব্য আমাকে ওই কবিতা নিয়ে অতি উৎসাহী করে তোলে। নানা মৃদু কণ্ঠে দুষ্টামি কিংবা শ্লেষ মিশিয়ে বলেন, ‘ভার্সিটিতে এইসব কী কবিতা পড়ায়?’
উল্লেখ্য, খালা তখন ঢাবিতে বাংলা বিভাগের ছাত্রী, হয়তো কোর্সের পড়া পড়ছিলেন তিনি। কিন্তু নানার ওই কথার মধ্যে কিছু একটা ছিলো যা আমাকে ওই কবিতাটি সম্পর্কে কৌতূহলী করে তোলে। এবার আমি ‘সোনালী কাবিন’ নিয়ে পড়তে বসি। এক অদ্ভুত মুগ্ধতার আবেশ আমাকে ঘিরে ধরতে শুরু করে। ওই সময় আমি ‘সোনালী কাবিন’সহ বেশ কিছু কবিতা এতোবার পড়ি যে সেসব আমার অন্তরে স্থায়ী হয়ে যায়। আজও সোনালি কাবিন কবিতাটির অধিকাংশ পঙক্তি আমার হৃদয়ে তরতাজা রয়ে গেছে। ‘ছলনা জানি না বলে আর কোনো ব্যবসা শিখিনি’- এমন সব আশ্চর্য মহার্ঘ্য পঙক্তি, আমার জীবনপ্রশ্নের অনিবার্য উত্তর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এখনও।
আজও বাংলা ভাষার যেসব কবি আমাকে মুগ্ধ করে, আল মাহমুদ তাদের মধ্যে অনন্য। তার প্রতিভাকে আমার প্রণাম। আমার নতমস্তক নমস্কার গ্রহণ করুন কবিবর। প্রিয় কবি, বিদায়বেলায় গ্রহণ করুন, আমার অশ্রুসিক্ত ভালোবাসা। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :