শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০২:৫৯ রাত
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০২:৫৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনে বিরামহীন প্রচারণায় মেয়র প্রার্থীরা

রফিক আহমেদ : অনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের প্রচার শুরু করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম। বসে নেই ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরও। গত রোববার আনুষ্ঠানিভাবে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলদের প্রতীক বরাদ্ধ দেয় নির্বাচন কমিশন ইসি। গত সোমবার সকালে রাজধানীর উত্তরখানের শাহ কবির মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেন মেয়র প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম। একইভাবে ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) উত্তর ও দক্ষিণের নতুন ৩৬টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি- উভয় অংশের প্রতিটি ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে রাজধানীর অলিগলি। নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভোটারদের দৃষ্টি কাড়তে দেয়া হচ্ছে উন্নয়নমূলক নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছবিসহ এসব পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন টানানো হয়েছে। কেউ কেউ আবার বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামসহ এলাকার উন্নয়নে নিজের ভূমিকা তুলে ধরে লিফলেট প্রকাশ করে ভোটারদের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন। প্রার্থীদের বেশিরভাগই ভোট চেয়ে এলাকাবাসীর সাথে গণসংযাগ ও মতবিনিময়, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন এবং দুস্থদের মধ্যে দান-খয়রাতের মাধ্যমে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা এবং প্রতীক বরাদ্দের পর সব এলাকাতেই এখন নির্বাচনী হাওয়া বইছে।

ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরা, সভা-সমাবেশ, মিছিল বা মাইকে প্রচারণা এই ছিল চিরাচরিত নির্বাচনী প্রচার কৌশল। কিন্তু এখন অনেক নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হয়েছে। অনলাইনের কল্যাণে ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে নির্বাচনী প্রচারণায়। এখন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে না গিয়েও তাঁদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে প্রার্থীদের বার্তা। অনলাইন খুঁজে দেখা গেছে, সবারই ফেসবুক পেজ আছে। এসব পেজে নির্বাচন উপলক্ষে ভোটারদের কাছে ভোট চাওয়ার পাশাপাশি নিজের সমাজ সেবামূলক কার্যক্রমও তুলে ধরা হয়েছে।

এদিকে, ৬৪ নং ওয়ার্ডে মাদক-সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নিমূলে তরুণসমাজকে সাথে নিয়ে আর্দশ ওয়ার্ড গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে নির্বাচনী গণসংযোগ করছেন ডেমরা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সিফাত সালেহীন চপল। তিনি বলেন, আমি অতি সাধারণ মানুষ কিন্তু আমার ইচ্ছা সমাজের মানুষের জন্য কিছু করা। জনগনের পাশে থেকে তাদের সেবা করাই আমার লক্ষ্য। একই ঘোষণা দিয়েছেন ৬৪ নং ওয়াডের প্রার্থী বীরমুক্তিযোদ্ধা ও এমপি আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মোল্লার ছোট ভাই মাসুদুর রহমান মোল্লা বাবুল। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে একটি সুন্দর-মাদকমুক্ত পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড গড়ে তোলতে যা যা করনীয় সবই করা হবে। এই দুই প্রার্থী সম্পর্কে দাদা-নাতি। আর মাতুয়াইল ৬৫নং ওয়ার্ডের জলাবদ্ধতা-রাস্তাঘাটসহ এলাকার সাবিক উন্নয়নের ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. এনামুল ইসলাম এনাম গণসংযোগ শুরু করেছেন। মঙ্গলবার ৬৫ নং ওয়ার্ডের আর্দশবাগ, মুসলিমনগর,বাদশামিয়া রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় গনসংযোগ করেন।

এ সময় মো. এনামুল ইসলাম এনাম বলেন, আমি শতভাগ আশা করি দলের মনোনয়ন পাবো। নির্বাচিত হলে সবার আগে এলাকার জলাবদ্ধতা ও মাদক নিরসনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করব। তবে ব্যতিক্রম ভাবে নির্বাচনী গণসংযোগ করছেন ৬৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সাবেক ৯নং ওয়ার্ডের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ও কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব হানিফ তালুকদার। তিনি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৬৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে তার পরিকল্পনার কথা তোলে ধরছেন। ভোটাররাও তার পরিকল্পনাকে লুফে নিচ্ছেন। মঙ্গলবার তিনি ডগাইর, বাশেরপুল, আইডিয়াল রোড, মাজার রোডসহ বেশ কিছু এলাকায় গণসংযোগকালে নানা পরিকল্পার কথা ভোটারদের কাছে তোলে ধরেন।

গত রোববার সকালে ডিএনসিসির রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম ৫ মেয়র প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন। তাদের মধ্যে-আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম (নৌকা), জাতীয় পার্টির শাফিন আহমেদ (লাঙ্গল), প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) থেকে শাহিন খান (বাঘ), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনিসুর রহমান দেওয়ান (আম) ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী নর্থ সাউথ প্রপার্টিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহিম (টেবিল ঘড়ি) প্রতীক পেয়েছেন।

প্রসঙ্গত, দুই সিটিতে ২০১৭ সালে ১৮টি করে ৩৬টি নতুন ওয়ার্ডযুক্ত হলে এই ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচন করা হচ্ছে। মেয়র পদে শূন্য আসনে উপ-নির্বাচন ৩৬টি নতুন ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন করতে ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি ডিএনসিসি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত বছরের ২৬ ফেব্রæয়ারি ভোট গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু গত বছরের ১৭ জানুয়ারি এই নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। পরে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি স্থগিতের আদেশ খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এরপর গত ২২ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন (ইসি) নতুন তফসিল ঘোষণা করে। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ডিএনসিসি মেয়র ও দুই সিটির ১৮টি করে ৩৬টি ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) উত্তর ও দক্ষিণের নতুন ৩৬টি ওয়ার্ডের নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে প্রচার- প্রচারণায় নেমে পড়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। গত রোববার প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধের পর তাদের এই প্রচার ও গণসংযোগ শুরু হয়েছে। সেইসাথে কাউন্সিলর পদে দলীয় সমর্থন নিশ্চিত করতে নানামুখী তদবির ও লবিং চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীদের।

এদিকে, ডিসিসি উত্তর ও দক্ষিণ অংশের ৩৬টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ থেকে গড়ে ৪-৬ জন করে সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। সংরক্ষিত ১২টি ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর পদেও প্রায় অর্ধশত নারী নেত্রী সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জোর তদবির- লবিংয়ের পাশাপাশি নির্বাচনী তৎপরতা চালাচ্ছেন। এ হিসাবে কেবল সরকারি দল থেকেই চারশ'র বেশি সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী এখন নির্বাচনী মাঠে সক্রিয়। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় বিদায়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং বিদায়ী ইউপি মেম্বারদের সংখ্যাই বেশি। ইউনিয়ন ভেঙে সিটি করপোরেশনের নতুন ওয়ার্ড গঠিত হওয়ায় এসব জনপ্রতিনিধি এবার কাউন্সিলর নির্বাচন করার দিকে ঝুঁকেছেন। এ ছাড়া দল, সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মহানগর, থানা ও সদ্য সাবেক ইউনিয়ন নেতারাও দলীয় সমর্থন প্রত্যাশী। প্রায় সবাই নানা তদবির-লবিংয়ের পাশাপাশি দলের কেন্দ্রীয় ও নগরের প্রভাবশালী নেতাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে দলীয় সমর্থন লাভের চেষ্টা করছেন। তবে সরকারি দলটি এবার মেয়র প্রার্থী ছাড়া বাকী ওয়ার্ডভিত্তিক কাউন্সিলর প্রার্থী উন্মুক্ত করে দেয়ায় অনেকেই বিপাকে রয়েছেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান জানান, উত্তরের নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে দল সমর্থিত প্রার্থী না থাকায় আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। আর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। সেই ক্ষেত্রে প্রার্থীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি হবে-এটিই স্বাভাবিক। তবে এবার দল সমর্থিত প্রার্থী না থাকায় স্বতন্ত্র হিসেবে অনেকেই নির্বাচন করছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়