শিরোনাম
◈ ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনা, সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন ◈ সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে: মির্জা ফখরুল ◈ বাংলাদেশের রাজনীতির অবনতি দুঃখজনক: পিটার হাস ◈ সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বাড়লো ১০ টাকা  ◈ নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের আহবান শিল্পমন্ত্রীর  ◈ প্রচণ্ড গরম থেকেই ঘটতে পারে মানবদেহের নানা রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি ◈ অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি  ◈ ইসরায়েল পাল্টা হামলা করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান: উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ মিয়ানমারের আরও ১৫ সেনা সদস্য বিজিবির আশ্রয়ে ◈ সয়াবিনের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১১:২০ দুপুর
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১১:২০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছয় মাসেই বাড়ল ১৬ হাজার কোটি টাকা

প্রথম আলো :  চট্টগ্রাম বন্দরে ৯ বছর আগে ২০০৯ সালের ৫ ডিসেম্বর ‘এমভি মারথা’ থেকে নামানো হয়েছিল ২০ ফুট লম্বা একটি কনটেইনার। কনটেইনারটিতে ছিল বিদেশি নুডলস। ঢাকার তোপখানা রোডের সিদ্দিক ফুডস অ্যান্ড অ্যাগ্রোবেইস ইন্ডাস্ট্রিজ ওই নুডলস আমদানি করেও খালাস নেয়নি। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিয়ম মেনে ৩০ দিন পর তা নিলামে তোলার জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠায়। কিন্তু কাস্টমস তা নিলামে তুলে বিক্রি করতে পারেনি। এই পণ্য বহুদিন আগেই নষ্ট হয়ে গেছে।

বিদেশি মুদ্রায় আমদানি করা এই পণ্যের এখন শেষ গন্তব্য চট্টগ্রামের হালিশহরের আবর্জনাগার। কারণ, বহু আগেই এই নুডলস খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে গেছে। এই কনটেইনারের মতো মোট ১৩০ কনটেইনার আমদানি পণ্য গতকাল সোমবার থেকে মাটি ও আবর্জনাগারে পুঁতে ফেলতে শুরু করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এই ধ্বংসযজ্ঞ চলবে ১০ দিন। তবে সময়মতো নিলামে তুলে বিক্রি করা হলে এসব পণ্যের বড় অংশই নষ্ট হতো না বলে ব্যবসায়ীদের দাবি।

কাস্টমস ও বন্দর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যে ১৩০ কনটেইনার পণ্য মাটিচাপা দিচ্ছে, তার মূল্য বাবদ অন্তত ১৩ লাখ ডলার বৈদেশিক মুদ্রা পরিশোধ হয়েছে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১১ কোটি টাকা (প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৫ টাকা ধরে)। এখন আমদানি করা এসব পণ্য মাটিচাপা দেওয়ায় আমদানি, পরিবহন ও সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িত সরকারি-বেসরকারি সব সংস্থার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। যেমন কাস্টমস এই পণ্য আমদানিতে রাজস্ব পায়নি। বন্দর কনটেইনার রাখার ভাড়া পায়নি। শিপিং এজেন্ট কনটেইনারের ক্ষতিপূরণ মাশুল পায়নি।

জানা গেছে, নুডলসের চালানটি বন্দরে নামানোর পর দেশীয় ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশি সরবরাহকারীর কাছে পণ্যের মূল্য বাবদ ডলারও পরিশোধ করতে হয়েছে। জাহাজ থেকে বন্দর চত্বরে নামানোর পর এই চালান মোট ৩ হাজার ৩৫০ দিন বন্দরে পড়ে ছিল। এ হিসাবে শুধু কনটেইনারটি বন্দরে পড়ে থাকা বাবদ শিপিং এজেন্টকে মাশুল দিতে হবে ১ লাখ ৩৩ হাজার ডলার। আবার বন্দর কর্তৃপক্ষকে মাশুল দিতে হবে ৮০ হাজার ডলার, যদিও এসব মাশুল আদায়ের আর সম্ভাবনা নেই।

কনটেইনারটির মালিকপক্ষ মেডিটেরানিয়ান শিপিং কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির এ দেশের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আজমীর হোসাইন চৌধুরী  বলেন, আমদানিকারকের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া মেলেনি।

গতকাল হালিশহরের সিটি করপোরেশনের আবর্জনাগারে দেখা যায়, প্রথম দিনের ধ্বংসের তালিকায় থাকায় ১৯টি কনটেইনার পণ্য গাড়িতে করে আবর্জনাগারের পাশের সড়কে নেওয়া হয়েছে। এসব কনটেইনারে রয়েছে মাল্টা, আপেল, নাশপাতি, আদা, পেঁয়াজ ও আইসক্রিম। কনটেইনার খুলে খোলা ট্রাকে শ্রমিকেরা এসব পণ্য বোঝাই করার সময় সেখানে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নবনিযুক্ত কমিশনার কাজী মোস্তাফিজুর রহমান  বলেন, একেক কনটেইনার একেক কারণে নিলামে তুলে বিক্রি করা যায়নি। হয়তো নিলামে তোলার আগে পণ্যের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। আগে যা–ই হোক না কেন, এখন থেকে নিলামের পণ্য দ্রুত বিক্রির ব্যবস্থা করতে বড় ধরনের বিশেষ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, নষ্ট হয়ে যাওয়া পণ্যগুলো আমদানিতে বিদেশি মুদ্রা ব্যয় করতে হয়েছে। যথাসময়ে উদ্যোগ নেওয়া হলে হয়তো এসব পণ্যের বড় অংশই নষ্ট হতো না। নিলামে বিক্রি করার সুযোগ ছিল। বৈদেশিক মুদ্রায় আনা পণ্য যাতে মাটিচাপা দিতে না হয়, সে জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে বিশেষ কর্মসূচি হাতে নেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়