জিয়ারুল হক : দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের শূন্য সহিঞ্চু অবস্থান ঘোষণা করার ফলে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নজরদারি বাড়লেও বহাল তবিয়তে আছে বিআরটিএ’র দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসারেরা। বিভিন্ন সময় দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁক ফোকর গলিয়ে বেরিয়ে এসে তারা অফিস করছে নির্বিঘ্নে। ইনডিপেনডেন্ট টিভি
গাড়ির মালিক ও ড্রাইভাররা জানে বিআরটিএ’র সার্ভিস পেতে হলে কতোটা ঝামেলা পোহাতে হয়। নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত ফি না দিলে এখানে সেবা পাওয়া অসম্ভব। বিভিন্ন দালাল চক্রের মাধ্যমে তারা এসব ঘুষবাণিজ্য করে যাচ্ছে। কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এসব অসাধু কর্মকর্তারা। একেকজন হয়ে গেছেন কোটিপতি।
এমনই একজন বিআরটিএ’র সিলেট বিভাগে কর্মরত উপপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার শহীদুল্লাহ কায়সার। ঢাকার গাজীপুরের মিরেরবাজারে তুরাগ তেল পাম্পের মালিক তিনি। একই জায়গায় রাস্তার বিপরীত দিকের তেল পাম্পের মালিকও তিনি। আছে তার নিজ এলাকা টাঙ্গাইল ধনবাড়ি এলাকায় আরও একটি তেল পাম্প। ঢাকার বারিধারার দূতাবাস রোডের বিলাসবহুল ফ্লাটের মালিক। থাকেন এই ফ্লাটেই। আছে ঢাকায় এমন কয়েকটি বাড়ি। যদিও এসব সম্পদের কাগুজে মালিক তার স্ত্রী হোসনেয়ারা বীনা। সরকারি চাকরি করে কিভাবে এই সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলে কোন কথা বলেননি তিনি। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা না থাকার কারণে ব্যবস্থা নিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
বিআরটিএতে এমন সম্পদের পাহাড় গড়েছেন অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী, এদের কারো বিরুদ্ধে মামলা না হওয়ায় অনেকেই সাধু হিসেবে পরিচিত। কারো কারো বিরুদ্ধে মামরা হলেও কারোরই হয়নি বড় শাস্তি। দুর্নীতি দমন কমিশনের পাঁচটি মামলার আসামি বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক আবু আশরাফ সিদ্দিকী মান্নান। গ্রেফতার হয়ে তিনি কারাবন্দিও ছিলেন। কিন্তু হাইকোর্ট থেকে জামিন ও প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল থেকে অব্যাহতি নিয়ে বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন কুমিল্লায়।
সহকারী পরিচালক আব্দুল হানান্নœও দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন, তিনি এখন আছেন সদর দপ্তরে। দুর্নীতির মামলায় জামিনে থাকলেও সাময়িক বরখাস্ত আছেন সহকারি পরিচালক এনায়েত হোসেন মন্টু। কিন্তু উর্ধ্বতন মহলের সাথে সখ্যের সুবাদে সদর দপ্তরে বসেই তিনি নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করছেন। সদর দপ্তরে সংযুক্ত আরেক আসামি জয়নুল আবেদিনও পোস্টিং পেতে জোর তদবির চালাচ্ছেন।
তবে বিআরটিএ’র মুখপাত্র মাহবুব ই রব্বানী জানালেন দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। তিনি বলেন, আমরাতো আর জেল জুলুম দিতে পারি না। আমাদের কাজ হচ্ছে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া। যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা ও অভিযোগ আছে তারা সবাই বরখাস্ত আছে। তারা কেউ কাজে যোগ দেয়নি। তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তো আর ঢালাওভাবে ব্যবস্থা নেয়া যায় না। নিয়মনীতি আছে সেগুলো মেনেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করি।
আপনার মতামত লিখুন :