জিয়ারুল হক : খুলনার বটিয়াঘাটা বাজারে সুমন শীলের সেলুন। এখানে সে গড়ে তুলেছে লাইব্রেরি। বই পড়ার আগ্রহই আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে লাইব্ররি গড়ে তুলতে, জানালেন সেলুন মালিক সুমন শীল। যমুনা নিউজ
বটিয়াঘাটা বাজারে সারি সারি কয়েকটি সেলুন। নেই তেমন কোন জৌলুস, তেমন কোন চাকচিক্য। তার মাঝেও আলাদা করে চোখে পড়বে মিলন শীলের সেলুন। ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে একটি সেলফ। যার ভেতর সাজানো গল্প, উপন্যাস আর গল্পের বই। হুমায়ুন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলনসহ অনেকের বই। আছে ওপার বাংলার শরৎ, সুনীল আর সমরেশদের গ্রন্থও। নজরুল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথের বইও পড়া যায় সবার প্রিয় সুমনদার সেলুনে।
সংসারের টানাপোড়নের কারণে চতুর্থ শ্রেনিতে থাকা অবস্থায় সে বাবার সাথে সেলুনের কাজ শুরু করে। পরে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বেশি না হলেও বই সংগ্রহ আমার নেশা। নিজে পড়েন, পড়ান অন্যদের।
বইপোকা মিলন তার সেলুনে লাইব্রেরি বানিয়ে হয়েছেন অনেকের উপহাসের পাত্র। তিনি বলেন, লাইব্রেরি বানানোর ফলে মানুষ আমাকে বিভিন্ন কথা বলে উপহাস করেছে। বিদ্যাসাগর হবে, জ্ঞানের জাহাজ বানাবে দেশের মানুষের, নোবেল পুরষ্কার পাবে। কিন্তু আমি দমে যাইনি। আমার দোকনে মানুষ চুল কাটাতে এসে অনেক সময় বসে থাকে। এই বসে থাকা সময় যাতে তারা উপভোগ করতে পারে তার জন্যই আমি এই লাইব্রেরি গড়ে তুলেছি।
মিলন শীলের দোকানে সবসময় ভিড় লেগেই থাকে। এদের বেশিরভাগ আসেন শুধু বই পড়ার জন্য। পাঠকেরা বলেন, আমরা সকাল বিকাল এখানে আসি বই পড়তে। আবার অনেকেই বই বাসায় নিয়ে পড়ে। এলাকাবাসির দাবি মিলন শীল সামাজিক দায়বদ্ধতা ও দেশ প্রেমের উদাহরণ। এলাকার তরুণ সমাজ অহেতুক আড্ডা না দিয়ে বই পড়ে জ্ঞানার্জন করছে। এর চেয়ে ভালো কাজ আর কি হতে পারে।