শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৯:৩২ সকাল
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৯:৩২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শিল্পঋণের সুদহার

যুগান্তর : প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও বেসরকারি ব্যাংকগুলো শিল্পঋণের সুদহার এখনও সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনেনি।

এ সত্য শিল্পঋণ গ্রহীতা তথা ব্যবসায়ীদের চেয়ে বেশি আর কে জানেন! কারণ তারা প্রতিনিয়ত এ অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন। তারা জানিয়েছেন, তাদের কেউই সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণে পাননি।

বস্তুত ব্যাংকগুলো সুদ আদায় করছে ১১ থেকে ১৩ শতাংশ হারে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের জানুয়ারি মাসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ১১টি বেসরকারি ব্যাংক ৯ শতাংশ সুদে শিল্পঋণ দিচ্ছে। প্রশ্ন হল, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ প্রতিবেদন কীভাবে দিল? নিশ্চয়ই বেসরকারি ব্যাংগুলো প্রকৃত সুদহারের তথ্য গোপন রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য পাঠিয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত ছিল ভালো করে তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করা। এটি তাদের দায়িত্বও বটে। বাংলাদেশ ব্যাংকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পাঠানো তথ্যে যে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে সেটা স্পষ্ট। এই ফাঁকি কেন্দ্রীয় ব্যাংককেই চিহ্নিত করতে হবে।
শিল্পে প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং অর্থনীতিতে গতিশীলতা অব্যাহত রাখতে গত বছরের ১৪ মে ব্যাংক ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে আনার ঘোষণা দেন ব্যাংক মালিকরা। এজন্য অবশ্য তারা সরকারের কাছ থেকে কয়েক দফা সুবিধা আদায় করে নেন। শুধু তাই নয়, বাজেটে ব্যাংক মালিকদের বেশি মুনাফার জন্য এ খাতের কর্পোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া স্বল্প সুদে সরকারি আমানতের নিশ্চয়তাও পেয়েছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। কিন্তু নানা সুবিধা নিয়েও কথা রাখেননি ব্যাংক মালিকরা। সিদ্ধান্তটির বাস্তবায়ন এড়াতে নানা কৌশল ও শুভংকরের ফাঁকির আশ্রয় নিচ্ছেন তারা।

ঋণের উচ্চ সুদহার দেশে বিনিয়োগ ও উৎপাদনের ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে প্রকৃত উদ্যোক্তাদের পড়তে হচ্ছে বিপাকে। এমনিতেই গ্যাস সংকট, বিদ্যুতের ঘাটতিসহ নানা কারণে ব্যবসা পরিচালনা করা এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে এলে উদ্যোক্তারা কিছুটা হলেও রেহাই পাবেন। উপরন্তু সেক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়বে এবং নতুন নতুন শিল্প গড়ে উঠলে বাড়বে কর্মসংস্থানের সুযোগ। অর্থাৎ এর সঙ্গে সামগ্রিক অর্থনীতির প্রশ্ন জড়িত। তাই ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা জরুরি।

আশার কথা, দায়িত্ব গ্রহণের পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ব্যাংক ঋণের সুদহার কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছেন। ঋণের সুদহার কমাতে কম সুদে আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্র তৈরি এবং বেসরকারি খাতে ঋণের জোগান বাড়ানোর জন্য বিকল্প তহবিল সৃষ্টির পথ খোঁজারও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এসব নির্দেশনার দ্রুত বাস্তবায়ন কাম্য। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংককেও কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। ঋণের সুদহার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ খেলাপি ঋণ ও অনিয়ম। যথাযথ নিয়ম না মেনে ঋণ দেয়ার কারণে ব্যাংকগুলোকে সংকটে পড়তে হয়েছে। ব্যাংকের অনিয়ম-দুর্নীতি রোধ করা গেলে খেলাপি ঋণও কমে আসবে। এর ফলে ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা সহজ হবে। সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত এ জায়গাটিতে দৃষ্টি দেয়া। ব্যাংকগুলোর গড়িমসি অব্যাহত থাকলে তাদেরকে সিঙ্গেল ডিজিট সুদহারে ঋণ দিতে বাধ্য করতে হবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে নিতে হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়