আবু হাসান শাহরিয়ার : ১. মুদ্রণ প্রমাদে ভরা আমাদের বইয়ের ভুবন। এ নিয়ে চিন্তিত নয় বাংলা একাডেমি। ওখানে বসত করে অপ্রস্তুত কর্মবীররা। অতিশয় ফাঁকিবাজ তারা। মধ্যমাসে বাকিতে বেতন পেলে খুশি। ‘বর্ষণ’ ছাপার ভুলে ‘ধর্ষণ’ হলেও তারা রাজি। ‘যৌথ সম্পাদনা’ যদি ‘যৌন সম্পাদনা’ হয়, তা-ও। একুশে পদক পাওয়া একব্যক্তি ‘গ্যান’ লিখে জ্ঞানদান করেন। বাক্য গঠনের কী যে জীর্ণদশা, নাইবা তা আমলে নিলাম। এই যদি হাল হয়, কাকে তুমি দোষ দেবে বলো? কেই-বা দেখাবে কাকে পথ? রক্ত দিয়ে ভাষাবর্জ্য কিনেছেন সালাম-বরকত।
২. একুশের বইমেলা মোড়কের উন্মোচন করে। বইয়ে লিপিবদ্ধ প্রেম প্রচ্ছদেই শেষ। আ-মরি বাংলা ভাষা, আহা কতো মুদ্রণ প্রমাদ! প্রমাদই লেখক আর বানানবিভ্রাটই প্রকাশক। খাদকেরও মেলা, তাই কড়ি গোনে খাবারের স্টলও। তবু এই বইমেলা সামষ্টিক প্রেমে বোনা তেরো নদী জল। অপাঠ্যের উলুবনে হঠাৎ মুক্তোও খুঁজে-পাওয়া। ¯্রােতের বিরুদ্ধে ছোট কাগজের প্রতিবাদী স্বর। অনামি-অখ্যাত কোনও নবীনের ঢেঁকিছাঁটা প্রথম প্রকাশ। ভীড়ের আড়ালে থেমে থেমে হাঁটা একজোড়া প্রেমের কবিতা। ছাপাখানা থেকে আসা কচিকাঁচা বাঁধাইয়ের সদ্যজাত বই। এঁটেল মাটিতে গড়া গোলাপপ্রত্যাশী এক সুবিশাল টব। একুশের বইমেলা কোটি প্রাণে সহ¯্র উৎসব।
লেখক : কবি। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :